নমস্কার, কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি আপনাদের সেই অতি পরিচিত প্রাঞ্জল, প্রাঞ্জল বাগচী। নিয়ে চলে এসেছি আমার আরও একটা অভিজ্ঞতার ডালি নিয়ে যেখানে আমার এক পাঠিকা হিনা এতদিন ধরে ওর বুকে জমে থাকা ব্যক্তিগত কিছু মূহুর্ত শেয়ার করে চলেছে। ঘটনা আসল হলেও সামাজিক সুরক্ষার স্বার্থে শুধু চরিত্রদের নামটুকু বদল করতে হয়েছে।
আগের পর্বে আমরা দেখলাম আসলাম আর হিনার সম্ভোগলীলা। কথায় কথায় জানতে পারলাম চোদনখোর আসলাম শুধু ওর প্রেমিক হিনাকেই নয় বরং নিজের মায়ের পেটের বোন জ়ারিয়াকেও ছাড়েনি। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে ভোগ করেছে ওকেও। কিন্তু হিনা তখনও জানতো না যে ওর সাথে আসলামের এটাই শেষ দেখা। তার কারণ আসলামকে সেদিনের পর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ করেই আসলামের বাবার কাছে লোকাল থানা থেকে ফোন আসে। ওর বাবার সাথে পুলিশের কথা হয়। এবার আগে…
পর্ব-৩
-“আচ্ছা, পুলিশ কি জিজ্ঞেস করল?”
-“বাইকের নম্বর দিয়ে জিজ্ঞেস করল কার নামে গাড়ি?”
-“তারপর?”
-“চাচু যা বলার বলল। ওরা বলল হাইওয়েতে ট্রাক অ্যাক্সিডেন্টে বাইক আরোহীর…আপনারা মর্গে এসে বডিটা একটু আইডেন্টিফাই করে যান…” বলেই না ও হাউ হাউ করে কেঁদে উঠল। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে আবার বলতে শুরু করল ও।
-“বডিটা আইডেন্টিফাই হল। ওকে না! ওকে না! একদমই…” ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলতে গিয়ে আবার কান্নায় ভেঙে পড়ল ও।
-“একদমই কি? তোমার কষ্ট হলে থাক!!!”
-“না…দয়া করে আমায় বলতে দিন। অনেক দিন ধরে এই কষ্টটাকে না বুকের ভেতরে অনেকদিন ধরে জমিয়ে রেখেছি। সেরকম কাউকে না ভরসা করে বলতে পারিনি এখন যখন সুযোগ পেয়েছি প্লিজ় তখন একটু…”
এদিকে আবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
-“বৃষ্টি এসে গেল তো! এবার তাহলে উঠবে নাকি?” ওকে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
-“আর একটু বসি না? আমার না আবার বৃষ্টি খুব ভাল্লাগে জানেন? আর খুব ভাল্লাগছে আপনার সাথে সময় কাটাতে। আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে। জানেন? আপনি না এভাবেই যত খুশী প্রশ্ন করতে থাকুন আমি উত্তর দেবো”। আমার কাঁধে মাথা রেখে কথাগুলো বলে গেল ও। আমি ছাতা খুলে ধরলাম। একটু ধাতস্থ হয়ে চোখ টোখ মুছে বলল ও।
-“বেশ এবার তাহলে তোমার বৈবাহিক জীবনের ব্যাপারে কিছু জানতে পারি কি?”
-“হুম কেন নয় কি জানতে চান বলুন না?”
-“বেশ এবার বলো কেমন ছিল তোমার সেই জীবন?”
-“বিয়ে!!!? হা-হা-হা!!! বিয়েটা আমার কাছে কয়েদখানার থেকে কম কিছু নয়”। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল ও।
-“কেন বিয়ে শব্দটা নিয়ে এতো সমস্যা কেন?”
-“এক একজনের কাছে না বিয়ে শব্দটার মানে এক একরকম জানেন? আমার যেমন খারাপ একটা অনুভূতি আছে। কিন্তু আপনার কাছে হতে পারে সেটাই সুখানুভূতির শামিল”।
-“হঠাৎ এমন কথা কেন?”
-“ইশশশ!!! আপনি তো বৃষ্টিতে পুরো ভিজে গেছেন দেখছি। চলুন না এবার বেরোই ফিরতে ফিরতে বাকিটা বলি?”
-“কোথায় যাবে এখন?”
-“কোথায় আবার? আমার বাড়ি…”
-“তোমার বাড়ি?…”
-“কেন যেতে আপত্তি আছে নাকি? আমি কিন্তু একাই থাকি। ”
-“না একদমই নয়। চলো তাহলে… যেতে যেতেই না হয় শুনি বাকিটা”।
-“তাহলে ক্যাব ডাকি?”
-“হুম নাও নাও, ডেকে নাও, ডেকে নাও।
মিনিট দশেকের কসরতের পড়ে একটা ক্যাব পেয়ে উঠে পড়লাম। আমি ড্রাইভারের পাশে আর ও পেছনের সিটে। এখানে ড্রাইভারকে এড়াতে আমরা কথা না বলে একে অন্যকে সারাক্ষণ টেক্সট চালাচালি করলাম আর তাতে যা উঠে এলো তা যথেষ্ট ভয়ঙ্কর!
-“হুম এবার বলো”।
-“আমার বিয়ে হল এহেসানের সাথে। সব মেয়েই শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেমন স্বপ্ন দেখে। আমিও দেখেছিলাম জানেন? যাইহোক বাইশ বছর বয়সে আমার বিয়েটা হল দেখেশুনেই। দেখেশুনেই কেন বলছি? বরং বলা ভালো দেনমোহরের বিনিময়ে বিক্রি হয়ে এসে পড়লাম এহেসানদের বাড়িতে”।
-“কেন? বিক্রি কেন বলছো?”
-“এছাড়া আর কি বলবো বলুন তো? যেখানে আমার কোনও স্বাধীনতা ছিল না। আমার পরিচয়টা যে ছিল শুধু একটা যৌনদাসী হিসেবেই!”
-“ওরে ব্বাবা! কি বলছো কি?”
-“হুম বিয়ে তো করেছিল এহেসান। প্রথম দিকে আমার প্রচুর খেয়াল রাখতো ওরা না চাইতেই শাড়ি, গয়না আর যা যা দরকার সব পেয়ে যেতাম সব। প্রথম প্রথম না মনে কেমন যেন একটা খটকা লাগতো জানেন?”
-“কি রকম, কি রকম?”
-“ওরা না ভীষণ সাদামাটা জীবন-যাপন করত। নুন আনতে পান্তা ফুরোনো এটা বলব না। কিন্তু আবার খুব একটা স্বচ্ছলও বলা যাবে না”।
-“মানে কোনও রকমে দিন গুজরান করা আর কি? তাই তো?”
-“হুম ঠিক তাই”।
-“বেশ তাহলে খটকাটা ঠিক লাগল কোথায়?”
-“খটকাটা লাগলো যখন দেখলাম সারা বাড়িটা না সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া। ওদিকে আবার এই সব দামী দামী জিনিস আমাকে গিফট দেওয়া, কিন্তু কেন??”
-“কাউকে প্রশ্ন করেছিলে কি?”
-“হুম করেছিলাম আমার শওহরকে। কিন্তু জিজ্ঞেস করলেই উত্তর দেওয়ার বদলে না কথাটাকে বারে বারে এড়িয়ে যেত ও”।
-“কি বলতো ও?”
-“বলতো আম খাচ্ছো, আম খাও। গাছ গুনে লাভ কি? বুঝতে পারি আমার পিঠ পিছে কিছু তো একটা চলছে”।
-“কি সেটা?”
-“আমার এক নন্দাই ফারুক আমাদের সাথেই থাকতো। কিন্তু আমার এক নন্দাই ফারুকের নজর ছিল আমার ওপর”।
-“কি করে বুঝলে?”
-“প্রথমে দেখতাম বাড়িতে উনি এলেই এমন নজরে দেখতেন যেন চোখে চোখেই আমার শরীরটাকে গিলে খাবেন”।
-“এবার এটা কিভাবে বুঝতে পারলে কোনও ইন্ডিকেশন?”
-“আসলে আমার শ্বশুরবাড়িতে না কোনও ব্রা-প্যান্টি পড়ার নাকি চল ছিল না”।
-“কেন তোমার ননদ পড়তো না?”
-“তা জানিনা তবে খটকা লাগতো যখন আমার নিজের ননদ নাইমা আমাকে না কেমন যেন চোখে চোখে রাখতো”।
-“কি রকম?”
-“প্রথম কয়েক মাস তো ভালোই ছিল কিন্তু তারপরে…”
-“তারপরে কি?”
-“তারপরে আস্তে আস্তে নিজেদের রূপ দেখাতে শুরু করল ওরা”।
-“কি রকম?”
-“আস্তে আস্তে ওদের ভালোমানুষির মুখোশটা খুলে বেরিয়ে এলো। যেখানে পান থেকে চুন খসলেই অপমান করা হত। হত বাপ তুলে খোঁটা দেওয়াও। প্রথম প্রথম না লুকিয়ে খুব কাঁদতাম জানেন? কিন্তু তাতেও না ওদের কারোর মন গলতো না। আমার শওহর কাজ থেকে ফিরলেই আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হতো। তারপর আরও একপ্রস্থ অত্যাচার সইতে হতো”।
আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম দেখলাম চোখ ছলছল করছে। জিজ্ঞেস করলাম-
-“তারপর?”
-“তারপর? আর কি? চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে বলতো নাইমার কথাই এখানে শেষ কথা। তোকে এ বাড়িতে থাকতে গেলে ওর কথাই শুনে চলতে হবে। যদি পারিস তবেই এ বাড়িতে তোর স্থান হবে নইলে… ”
ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখি দু-চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। জিজ্ঞেস করলাম-
-“তুমি ঠিক আছো তো?” জিজ্ঞেস করলাম আমি। ও চুপ।
-“আচ্ছা লোকটার বয়স কত হবে আন্দাজ…” কিছুক্ষণ বাদে একটু ধাতস্থ হলে আমিই জিজ্ঞেস করলাম ওকে।
-“কত আর হবে এই আপনারই বয়সী…” নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বলল ও।
-“কি করেছে ও তোমার সাথে?”
-“সেদিন না প্রচুর কথা কাটাকাটি হয় আমাদের মধ্যে জানেন?”
-“কার সাথে?”
-“আমার আর আমার শওহরের মধ্যে। জানেন?”
-“সেকি কিন্তু কেন?”
-“আমি আর থাকতে না পেরে ফারুকের নামে আমার শওহরের কাছে অভিযোগ জানিয়ে ফেলি”।
-“তারপর?”
-“তারপর এরকম চলতে চলতে একটা সময় ও না আমার গায়ে হাত তোলে”।
-“একটা স্যাড ইমোজি পাঠিয়ে আমি নিজের এক্সপ্রেশন দিই”।
ও-ও বলে চলে-
-“তারপর না চিৎকার করে ও নাইমাকে ডাকে। যতটা না হয়েছে আরও রঙ চড়িয়ে আমার বিরুদ্ধে ওদেরকে তাতিয়ে চলে এহেসান”।
-“আর তার ফল?”
-“তার ফল যা হওয়ার তাই হয়। নাইমার যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়ে আমার ওপর। আমার পড়নের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফালা ফালা করে আমায় আধ ল্যাংটা করে দিয়ে বলে…” আবার ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে ও।
ড্রাইভারকে একটা ফাঁকা জায়গা দেখে গাড়ি সাইড করতে বলি। তারপর আমি ড্রাইভারের পাশ থেকে নেমে ওর পাশে গিয়ে বসি। ও আমার বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদে ওঠে আর আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে ওকে সাণ্ত্ত্বনা দিতে থাকি।
-“না থাক তোমার যখন কষ্ট হচ্ছে তখন থাক না”।
-“না আমি ঠিক আছি, অনেক দিন বাদে না কেউ আমার মাথায় এভাবে হাত বুলিয়ে দিল জানেন আর তাছাড়া…”
-“তাছাড়া?”
-“তাছাড়া এই কথাগুলো না কাউকে তো আর শেয়ার করা যায় না। লোকে ফায়দা তুলবে”।
-“কিন্তু তুমি আমাকে তো বলছো। ভয় করছে না?”
-“এতটুকু নয় বরং আপনাকে দেখে না ভরসা করতে ইচ্ছে করছে জানেন? কেন জানি না মনে হচ্ছে এটা? কিন্তু মনে হচ্ছে। বিশ্বাস করুন…”
-“বেশ আর কি মনে হচ্ছে শুনি?”
-“আর তাই তো আপনার সাথে কথা বলে মনটাকে হাল্কা করতে ইচ্ছে করছে”।
-“বেশ তাহলে বাকিটা বলতে পারো অবশ্য যদি বলতে চাও তো!…”
-“সব শুনে নাইমা আমার পড়নে যেটুকু কাপড় অবশিষ্ট ছিল সেটাকে ছিঁড়ে দিয়ে আমাকে…” বলতে বলতেই আবার ফুঁপিয়ে ওঠে ও।
-“ওকে ওকে নো ইস্যু নো ইস্যু…থাক আর দরকার নেই”।
“না প্লিজ় আমায় বলতে দিন। আমি একটু হাল্কা হতে চাই”।
তাই আবার নিজেকে সামলে নিলে…
-“বেশ বলতে চাইছো যখন বলো…কিন্তু!!!”
-“না আমি ঠিক আছি…”
-“আমাকে ওই অবস্থায় দেওয়াল ধরে দাঁড় করিয়ে আমার পাছায় দশ ঘা চাবুক মারল নাইমা”।
-“সেদিন ফারুক ছিল?”
-“না ছিল না”।
-“তারপর কি হল?”
-“হপ্তাখানেক বাদে ফারুক ফিরে এলো দেখলাম”।
-“বেশ কিন্তু সেটা তো অনেকটা দিন। তোমার ওপর অত্যাচার আর ফারুকের বাড়ি ফেরার মধ্যে তো অনেকগুলো দিন এই সময়ের মধ্যে কি কিছু হয়েছিল?”
-“না, তবে পরিস্থিতি ছিল থমথমে…”
-“তারপর কি হল?”
-“তারপর ফারুক আসতেই নাইমা আর আমার শওহর দুজনেই ওর খিদমৎ করা শুরু করে দিল। সেদিনকে রাত্তিরে আমাকেই খাবার বানাতে হল। নাইমা আমাকে দিয়ে বানিয়ে নিল ফারুকের পছন্দসই কিছু পদ”।
-“হুম তারপর?”
-“খাবার টেবিলে সবাই খাচ্ছে ওমনি নাইমাকে জিজ্ঞেস করে ফারুক”।
-“কি জিজ্ঞেস করে শুনি?”
-“আমি না থাকাকালীন বাড়িতে কোনও সমস্যা?”
-“তখন নাইমা আমার নামে যা-তা করে সত্যির সাথে বানিয়ে বানিয়ে বেশ কিছু মিথ্যেও বলে দেয়”।
-“তাতে নিশ্চয় আগুনে ঘি পড়ে?”
“হুম খাওয়া দাওয়ার পরে আমার ওপর অত্যাচার করে ফারুখ। সবাই মিলে সাহায্যও করে ওকে। আর থাকতে পারি না একদিন মওকা বুঝে ও বাড়ি থেকে পালাই। আব্বুকে নিয়ে থানায় গিয়ে এফআইআর করি ওদের বিরুদ্ধে সঙ্গে ডিভোর্স ফাইলও”।
মেয়েটা না আমার বুকে মাথা রেখে আবার অঝোরে কাঁদতে থাকে।
বন্ধুরা আপনারা দেখলেন শ্বশুরবাড়িতে নিজের ননদের হাতে হিনা কিভাবে লাণ্ছিত হচ্ছে। জানি ভালো লাগার কথা নয়। আচ্ছা কে কে হিনার মধ্যে নিজেকে দেখতে পাচ্ছেন বলুন তো?…নিজেদের মতামত খুল্লামখুল্লা শেয়ার করতে পারেন আমার সাথে কারণ আমি ছাড়া আর কেউ শুনছে না আপনার বুকে অ্যাদ্দিন ধরে জমানো সেই কষ্টের কথা। মেল আইডিটা জানা আছে তো? ও-ই যে es4sudden@gmail.com মেল করুন আমাকে জি-চ্যাটেও জানাতে পারেন।