Site icon Bangla Choti Kahini

Bangla choti golpo – নিপুন খালা – পর্ব ১

শুভ খুব ফালতু ছেলে। লেখাপড়ায় খুব ভাল কিন্তু কথাবার্তা আর স্বভাব দেখলে বিশ্বাস করতেই চাইবে না মানুষ সে একজন ভাল ছাত্র। সবাই মনে করে টাকা আছে বলে সে একটা ইছরে পাকা ছেলে।।  আসলে সে খুব খারাপ না। টাস টাস কথা বলে তাই মানুষ মনে করে  বাজে ছেলে।।

সেইদিন নিজের ছোট খালা যাকে শুভ খালমী ডাকে সে খুব বকা দিয়েছে কারন শুভ নাকি খালমীর বান্ধবীকে ইনবক্স করেছিল হাই বলে।।

শুভ র খালমীর নাম নিপুন। নিপুন খুব সুন্দরী।  ৫ ফিট লম্বা আর লিকলিকে গড়ন। খুব ষ্টাইলিষ্ট মেয়ে।  একেতো সুন্দরী আবার তিন ভাই বোনের সবার ছোট।  পিতামাতার প্রায় শেষ বয়সে সাধনার ফসল নিপুন।। ছোট বেলা বাবার সরকারি চাকরির সুবাধে বলেন দেশেও অনেকদিন লেখা পড়া করেছে।। নিজের ব্যাক্তিত্বের নিদর্শন পাওয়া যায় তার কথা আর চলা ফেরায়।।  নিপুনের চোখ আর হাসি ভুবন জয় করা।  পুরুষের বুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। অনেকেই সাহস করে কাছে ভিরতে পারেনা।। বলা যায় একা একাই চলে। কয়েকজন বান্ধবী তার প্রান। আর শুভ তাদের মধ্যেই এক বান্ধবীকে হাই বলেছি নেহায়েত খালা মনে করেই।। নিপুন সেটাকে অসভ্যতা মনে করেছে।

শুভর মন খুব খারাপ হয়ে গেল।। বাসায় বসে বসে শুভ ফেইক আইডি থেকে আজ নিজের খালমীকেই হাই বলে।।

দুই দিন শুভ সেই ফেইক আইডি রাজ তালুকদারকে আর লগ অফ করেনাই কারন অপেক্ষা করছে খালমী উত্তর দেয় কিনা।

নিপুন আজ হঠাৎ উত্তর করে, হ্যালো।  আমি আপনাকে চিনতে পারিনাই।।

শুভ সাথে সাথে উত্তর করে, জ্বী আমিও আপনাকে চিনি না।

নিপুন রেগে যায়। আর লিখে যদি নাই চিনেন তাহলে হাই লিখেন কেন?

শুভ লিখে,  আপনি রাগ করছেন কেন?  আপনাকে দেখে খুব শান্ত শিষ্ট মনে হল তাই হাই লিখলাম। আপনিতো রেগে যাচ্ছেন। বাই দ্যা ওয়ে আমার নাম রাজ।

নুপুন অনেক সময় নিয়ে,  লিখে কে বলেছে আমি রেগে গেছি। যেহেতু জানেন না তাহলে হাই বলার কি দরকার।।

শুভ, অপরিচিত কাউকেই মানুষ হাই বলে,  যদি ভুল করে থাকি ক্ষমা করে দিবেন। আর হাই লিখবোনা। আমি চট্রগ্রাম থাকি।।

নিপুন,  আপনি কোথায় থাকেন সেটা দিয়ে আমি কি করবো।  আজাইরা ফাইজলামি করেন। নাকি?

শুভ, আমার ভুল হয়ে গেছে। আপনি মনে হয় আমাকে বেইজ্জতি করবেন। আমি আসলে সেই রকম মানুষ না।  আমার পালানো দরকার। আপনি খুব রাগী মানুষ,  দেখলে কিন্তু সেই রকম মনে হয়না। আই মিন পিকচার। ভাল থাকবেন। বি হ্যাপি।

নিপুন, নিপুন রাজের এই কথায় ইন্সাল্ট মনে করে।  সে রাগী অপবাদ দিয়ে চলে যাবে।তা কি করে হয়। তাই লিখে,  আপনি আমাকে রাগী অপবাদ দিয়ে চলে যাচ্ছেন। আমি কিন্তু মোটেই তেমন না। আমি ভদ্র শিক্ষিত মেয়ে।

শুভ আর কিছুই লিখেনা। দেখতে চায় নিপুনের কি ইচ্ছা হচ্ছে। নিজেকে যদি অপমানিতবোধ মনে করে তাহলে আবার নক দিবে।।

নিপুন অপেক্ষা করে রাগ আরো বেড়ে যায়। এই যে ভাই আপনি আমাকে অপবাদ দিয়ে চলে গেলেন। কিছু বলছেন না কেন?

ক্ষমা করবেন নিপুন,  আপনি হয়তোবা মনে করেছেন আমি অশিক্ষিত ফালতু ছেলে। আমিও শিক্ষিত মানুষ।  আমার নিজের ব্যাক্তিত্বের বাহিরে আমি আর যেতে পারিনা। যেহেতু আপনি পছন্দ করছেন না তাই সটকে গেলাম।  প্রচুর ব্যাস্ত সময় পার করে খুব ক্লান্ত ছিলাম। বন্ধুবান্ধবদের কাউকে পাচভহিলাম না লাইনে তাই আপনাকে নক করেছিলাম। উচিত হয় নাই।।  আমি চাইনা অযথা কেউ আমাকে বেইজ্জতি করুক। আমার উচিত হয়নাই।।

নিপুনের খারাপ লাগতে লাগলো।  লোকটাকে ভদ্রলোক মনে হল। তাই লিখলো,  মেয়ে দেখে অনেকেই ফাইজলামি করে তাই বেলছিলাম।  কষ্ট পেয়ে থাকলে, সরি।

শুভ,  না না সরি বলবেন কেন?  ভুলটাতো আমিই করেছি। না জেন শুনে নক করা উচিত হয়নাই।।  প্রচুর ব্যাস্ত থাকি। বাবার শিপিং ইয়ার্ডের ব্যাবসা। আমাকেই এখন দেখতে হয়। ক্লান্ত আমি।। বড়ই একা একা মনে হয়।

নিপুন,  বিয়ে করেন নাই।

শুভ, হ্যা করবো।৷  ভাবছি। ঝামেলা আছে। আপনি আবার মনে করবেন না আমি পাত্রী খোজতে আপনাকে নক করেছি। একদম সেটা ঠিক না।।

নিপুন হাসির রিয়েক্ট দিয়ে লিখে,  তাহলে ঠিক আছে।

নিপুন আর রাজের মধ্যে অনেকদিন ধরেই চ্যাটিং হচ্ছে। এই চ্যাটিংয়ে কিছু শর্ত জুড়ে দেয় শুভ। আমাদের দেখা এবং কথা হবেনা। শুধু চ্যাটিং আর ঠিকানা জানা যাওয়া যাবে না। মন খোলে চ্যাটিং করে সময় পার করা যাবে। যা খুশি লিখা যাবে অশ্লিল অফার করা যাবেনা। উত্তর দিতে চাইলে দিবে না চাইলে চাপ দেওয়া যাবেনা।।।

দীর্ঘ ৬ মাস নিপুন রাজ সময় ফেলেই চ্যাটিং করে।  তাদের চ্যাটিং খুব গভীরে চলে যায়।
আজ নিপুন জিজ্ঞেস করে, আপন বিয়ে না করে আছেন। মেয়েদের সাথে কিছু করতে ইচ্ছা করেনা। করেন নাকি।

শুভ, অবশ্যই এমন কিছু করি। কিন্তু কম্পলিকেটেড সেটা। বলা যাবে না।

নিপুন বলে, এত কিছু বলা হয়। কি এমন বলা যাবে না।  আমি বলেছি আমার সব।

আপনার কথা বলার মত। আপনি বয়ফ্রেন্ডের সাথে করেছেন। আমিও বলেছি। আমি এক মধুর সম্পর্কে আছি কিন্তু বলার মত না।।

নিপুন আহত হয়। তাই লিখে, কি এমন সম্পর্কে আছে যা বলার মত না।

শুভ,  এই সম্পর্কের কথা বলা যায়না কিন্তু ভীষণ কেমেষ্ট্রি কাজ করে। মিলনে এক মহা সুখ অনুভূতি আসে যা অন্য কিছুতেই আসেনা। আমি পাইনাই।

নিপুন জানতে চায় বার বার, কি সেই সম্পর্ক।।

নিপুন আপনি আমাকে ঘৃনা করবনে। আর কথা বলবেন না। একদিন অবশ্যই বলবো। আমাদের চুক্তি ছিল জোর করা যাবেনা।।

না না রাজ, আমি জোর করছি না।  জানতে ইচ্ছা করছে। তাই

শুভ এইবার ইচ্ছা করেই বলে,  আচ্ছা নিপুন, আপনার ভাই, ভাগিনা, দুলা ভাই এমন কোন মানুষের সাথে মনে মনে কিছু করতে ইচ্ছা করে। নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের টান বেশি হয়। সেটা কি আপনার বেলায় হয়।।

নিপুন অকপটেই বলে দেয়, এমন করে কখনো ভাবি নাই।

নিপুন এমন কেউ আছে আপনার? থাকলে মনে মনে ভাববেন।। দেখবেন আপনার উত্তেজনা বা ফিলিংস হাজারো গুন বেড়ে যাবে।।

তাই নাকি? মনে মনে ভাবলেই হবে। আমার তেমন কেউ নাই ভাবার। আছে শুধু একটা ইচরে পাকা ভাগিনা।।

আপনার ভাগিনা কি দেখতে বিশ্রি নাকি।

ওর নাম শুভ। দেখতে খুব হ্যান্ডসাম।  সুটাম দেহ। না জানি কত মেয়ের জীবন নষ্ট করছে।।

তাহলেতো হলই।  আজ রাতেই ভেবে ভেবে ঘুমিয়ে যাবেন। কল্পনায় কিছু করছেন এমন কিছু। দেখবেন ঘুম আসবেনা। আজ রাখতে হয়।

বাই বাই।।

নিপুন রাজের কথা মত শুভকে নিয়ে ভাবছে।  শুভ যদি এই মহুর্তে বিছানায় থাকতো আর নিপুন যদি জড়িয়ে ধরে চুমু দিত তাহলে কেমন লাগতো।। শুভ সোনাটা দেখতে কেমন। এই ভাবতে গিয়ে সত্যিই উত্তেজিত হয়ে যায়।

পরের দিন রাজ হাই বলতেই,  নিপুন উত্তর দেয়।

নিপুন কেমন আছেন জানতে চাইলেই, রাজ জিজ্ঞেস করে আপনি কি কল্পনায় কিছু ভাবছিলেন।

নিপুন একটু রাগ করে লিখে, আপনার কথাই ঠিক। এমন একটা কিছু আপনার কথা মত ভাবতে গিয়ে সারারাত ঘুমাতে পারি নাই।।

কি ভাবছিলেন নিপুন। কাকে নিয়ে ভেবে এত যন্ত্রনা পেতে হল।।

কে আবার।  আমার এমন কেউ নাই। ভাগিনা শুভ্রকে নিয়ে।। ছি ছি,

নিপুন খোজ নিয়ে দেখেন শুভও  কিন্তু আপনাকে নিয়ে কল্পনার জগতে কত রাত নির্ঘুম ছিল। এই খেলা মনোজগতের খেলা।

কি বলছেন রাজ। ও আমাকে ভয় পায়।

ভয় পায় না নুপুন। ভালবাসে সম্মান করে। কিন্তু কল্পনায় আপনাকে ভাবতেই পারে।  আপনি ট্রাই করে দেখুন।

ট্রাই করে দেখবো কি করে?

আজ থেকে লক্ষ্য করুন শুভ চুপি চুপি আপনাকে দেখে কি না? ওর চোখ ভাল ভাবে খেয়াল করুন।  আপনার পেছনে সে দেখে কি না। আয়নার সামনে দাড়িয়ে কথা বলুন আর দেখুন।।

এমন কি আপনার জীবনে হয়েছে।

হয়েছে বলেই বলছি। এই সম্পর্কে এত উত্তাপ যা কল্পনাও করা যায়না।  আমি আপনাকে বলছিনা ঝড়িয়ে পরুন। দেখতে বলছি।

ঠিক আছে আজ সন্ধায় শুভ আসবে। আমি দেখবো। আজ ভাল থাকুন।

ঠিক আছে।।।

নিপুন জানে শুভ প্রতি সোমবার নানুকে দেখতে আসে।  আজও আসবে।  নিপুন সম্পুর্ন প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছে। মন খেলা খেলতে অসুবিধা কি।

শুভ এসে নানুর সাথে বসে গল্প করছে।।।  নিপুন কাছে যেতেই বলে, কি ব্যাপার খালমী আজ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।

নিপুন রেগে গিয়ে বলে, এই অসভ্য আমি বিশ্রী যে আজকেই সুন্দর লাগছে।।
নানু নিপুনকে বলে, শুভকে একটা চা করে দেতো।।

নিপুন চা বানাতে চলে যায়। শুভ নিপুনের সাথে সাথে যায় আর বলে, চা খাবনা খালমী জুস থাকলে দাও।

নিপুন খুব ভাল ভাবেই আজ বুঝতে পারছে শুভ আড় চোখে নিপুনের বিশেষ অংগে  খেয়াল করছে। নিপুনের খুব ভাল ফিল হচ্ছে। রাজ যা বলেছে সব সত্য।। এই অসভ্য দেখি সত্যিই আমাকে নিয়ে বাঝে কিছু ভাবে।

কিচেনে যেতেই একটা বড় লুকিং গ্লাস আছে। সেখানে দাঁড়িয়ে নিপুন ভাল করে নিজেকে দেখছেছিল আর গ্লাসে লক্ষ্য ছিল শুভ কি করে।

শুভ নিপুনের পাছায় চোখ রেখে গিলে গিলে খাচ্ছিল। নিপুন দেখে শুভকে বলে, তুই যা। আমি চা নিয়ে আসি।।

শুভ মুচকি হাসি দিয়ে বলে, খালমী আমি তোমার কাছে থাকলেই শুধু দূর দূর কর কেন। আমি কি তোমার অপরিচিত কেউ। একটুও আর আদর কর না।।

এই কে বলেছে আমি তোরে আদর করিনা। এখন বড় হয়েছিস। আগের মত কি আর খালমীর পিছে পিছে ঘুর ঘুর করলে মানায়।

আমি কিন্তু তোমার কাছাকাছি থাকলে আমার খুব ভাল লাগে।  আর একটা কথা বলি, তোমাকে ন্যাচারাল খুব ভাল লাগে। মেইক আপ চাতাপাতা ব্যাবহার কতলে ফেইক লাগে।।

এখন দেখি মেয়েদের কিসে ভাল লাগে তাও জানিস।

এই যে তুমি বললে, আমি বড় হয়েছি।  বড় হলে মেয়েদের ভাল বুঝার কথা না?

আমি অন্য মেয়েদের মত যে তুই বলবি।

আমার কাছে সব মেয়েই মেয়ে। তুমিতো আরো আপন, কাছের মানুষ।  আমি তোমাকে কত ভালবাসি।

জানি তুই ভাল বাসিস। যা গিয়ে বস সোফায়। আমি চা নিয়ে আসছি।।।

শুভ আহলাদ করে বলে, তুমি চা বানাও আমি তোমার পাশেই থাকি। দেখি কি করে এত ভাল চা তুমি বানাও।।

নিপুন মনে মনে বলে,  রাজ টিকই বলেছে,  চা বানানো দেখার নাম করে আমার পাছা দেখতে চায়।  নিপুনেরও কেন যেন দেখাতে ভালই লাগছে। মনে মনে যা খুশি করুক।।। ঠিক আছে চা বানানো সবার শিখা দরকার।। অলস বউ পাইলেতো আবার নিজেকেই চা করে খেতে হবে।।।

নিপুন শুভকে জিজ্ঞেস করে, দুধ চাখাবি নাকি রঙ চা?

শুভ নিপুনের দুধের দিকে চেয়ে হাসি দিয়ে বলে,  দুধ দিলে খাব না দিলে নাই।

নিপুন শুভর চাহনি দেখে নিজেও হাসি দিয়ে বলে,  ওই ফ্রিজে দুধ নিয়ে আয়।।

শুভ আবার হাসি দিয়ে বলে, খালমী ফ্রেস দুধ নাই।।।

নিপুনের গা শিহরিত হয়ে উঠে। নিজের দুধগুলি যেন টান্টান হয়ে যায়। শুভ কি অসভ্য।  কোন ভাবে বলে, ফ্রেস খাইতে চাইলে বাহিরে গিয়ে খা।

শুভ আবার বলে, এইটা কেমন কথা ঘরে থাকলে বাহিরে যাব কেন?

নিপুন আর কথা বলে না।। রঙ চা কাপে দিয়ে বলে, দুধ খেতে হবে না। এখন দুধ ছাড়াই চলবে।।। এই কথা বলে, পাছা দুলিয়ে দুলিয়ে সোফার দিকে হাটতে থাকে।।

শুভ পেছন থেকে বলে, খালমী তুমি কিন্তু মডেলিং করলে খুব ভাল করতে পারতে।।

নিপুন ঘুরে শুভ কে দেখে বলে,  আমার দরকার নাই মডেলিং করার। নিপুন বুঝে যায়। শুভ মনে মনে নিপুনকে চায়। রাজ সত্য কথাই বলেছে। নিপুনের এই অজানা ভাবনা ভাবতে খুব ভাল লাগছে।  শুভ দেখছে নিপুনকে। সেক্সুয়ালি দেখা। কেমন অনুভূতির জন্ম হচ্ছে। ভাল লাগছে। নিপুন চিন্তা করছে। খারাপ লাগার কথা কিন্তু ভাল লাগছে কেন।। শুভকে মনে হচ্ছে খুব হ্যান্ডসাম।  লোভ হচ্ছে কেন। ইচ্ছে করছে শুভকে চুয়ে দেখতে। শুভর গায়ে নিজের শরিরকে টাচ করতে মন চাইছে।।। সোফায় বসে আছে। শুভ আসছে না কেন। কই গেল শুভ।।

শুভ নানুর ঘরে চলে যায়। শুভ দেখতে চায় সোফায় না যাওয়াতে নিপুন খোজ করতে আসে কিনা।  শুভর জন্য টান অনুভব করে কি না?

নিপুন কিছু সময় অপেক্ষা করে মায়ের রুমে আসে। চা খেয়েছিস শুভ।।

শুভ অভিমান করে বলে, দুধ ছাড়া চা আমার ভাল লাগেনা।।
নিপুনের মা রাগ করে বলে, ও দুধ চায় তুই রঙ চা দিলে কেন?

নিপুন শুভকে বলে, আমি আর একটা বানিয়ে দিচ্ছি বলে চলে যায়।

শুভ নানুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বলে, আমি চলে যাচ্ছি এই কথা বলে আবার কিচেনে যায় আর খালমী তোমার দুধ তোমার কাছেই রাখ আমি চললাম।

শুভ এই তো চা রেডি। খেয়ে যা বলছি।। শুভ চলে যাচ্ছিল তাই নিপুন কাছে গিয়ে হাতে ধরে বলে, ভা না খেয়ে গেলে আজ পিটাবো বলছি।।

শুভ ডং করে বলে, তোমার হাতের চায়ের চেয়ে তোমার মার খেতেই বেশি ভাল লাগে।। আজ চা খাই অন্যদিন মার খাব।।।

নিপুন শুভর খোচা খোচা দাড়ি গালে মুচর দিয়ে বলে, আমি তোরে কখনো মেরেছি। আদর করি।

শুভ নিপুনের দিখে চেয়ে বলে, তোমার মাইর খাওয়াকেই আমি আদর মনে করি।।

আয় চা খেয়ে তারপর যা। চা না খেয়ে গেলে আমি খুব কষ্ট পাব।

আমার তো যেতেই কষ্ট লাগে। ইচ্ছা করে এই বাসায় থেকে যাই।

তাহলে আজ থেকে যা।

তুমি আদর করে বল। শুভ আজ থেকে যা। তুমি চাইলে আমি থেকে যাব।।

আমাকে আদর করে বলতে হবে কেন? আমি কি বকা দিয়ে বলেছি নাকি।।

চা প্রায় শেষ। শুভ চলে যাচ্ছে। আজ এই প্রথম শুভর মনে হচ্ছে নিপুন দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিল।  এমনটা কোনদিন হয়নাই।। দরজা দিয়ে নিচে সিড়ি বেয়ে যাওয়া পর্যন্ত চেয়ে আছে। শুভ শেষ মহুর্তে হাত দিয়ে চুমু দেখিয়ে বাই বাই বলে নিচে চলে যায়।

নিপুন আজ ভীষন এক শিহরন অনুভব করছে।  মনে হচ্ছে ভালবাসার মানুষ নিপুনকে রেখে বিদেশ চলে গেছে। ইচ্ছা করছে শুভর কাছে চলে যেতে।।

মনে মনে ভাবছে আর এর চেয়ে বেশি রাজের সাথে শেয়ার করবে না। এই টফিক আর সামনে যাবেনা। অপরিচিত মানুষ।।।

দুইদিন পর নিপুনের চাচাতো বোনের বিয়ে। সবাই চলে গেছে কিন্তু নিপুনের এখনো পোষাকটাই কেনা হয়নাই তাই আজ সকালে শুভকে নিয়ে কিছু কেনা কাটা করে বিকালে সময় মত চলে যাবে।  জানে চাচাতো বোন পারু খুব রাগ করবে। কিছুই করার নেই। পাশেই বিয়ে।

সকালে শুভকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়। কয়েক ঘন্টা শপিং করে বাসায় এসে দেখে কেউ নাই। নিপুন শুভকে বলে, তুই চা খাইবি নাকি। আমি তারাতাড়ি রেডি হই।

শুভ রেডিই আছে আর বলে আছি তুমি যাও।।

নিপুন নিজের রুমে গিয়ে ব্লাউজ শাড়ি পরে কিছুক্ষন পর শুভর কাছে আসে আর বলে, শুভ মেকয়াপ করবো নাকি?

শুভ হাসি দিয়ে বলে, বিয়েতে যাবে তুমি মেকয়াপ করবে না। কি বল।

এই সেদিন তুই বললি মাকাপ যে ন না করি।

আরে খালমী সেটাতো ঘরে। বিয়েতে না। যাও সুন্দর করে সেজে আসো। যেন আমার খালমীকে ডানাকাটা পরীর মত লাগে। সব শালা যেন হা করে চেয়ে থাকে।

নিপুন হাসি দিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষন পর আবার আসে আর বলে এইবার বল, আমাকে কেমন লাগছে।।।

খুব সুন্দর লাগছে। অপুর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির বিষয়ে তুমি সতর্ক কিন্তু সব মানুষের কাছে তুমি হট লাগলেও আমার কাছে।  যদি বল। আমার নিজস্ব ভাবনায় কিছু একটা বাকি আছে।। এখন তুমি সিদ্ধান্ত নাও। মানুষের জন্য না আমার জন্য সাজবে।।

ঠিক আছে। তোর কাছে কি ভাল লাগে বল। আমি তাই করে যাব। অন্তত আমি জানতে পারবো এই বিয়েতে আমি একজন যুবকের কাছে আমি হট।।

শুভ কাছে এসে বলে, তোমার লিপষ্টিকটা পাল্টাতে হবে। হালকা গোলাপি হবে আর উপরে গ্লোস নাকি কি একটা বলে সেটা দিতে হবে। আর শাড়িটা বুকের এক পাশে নিয়ে যেতে হবে। পেছনে লোজ থাকবে না।  শাড়ি টাইট করে দিতে হবে।।

নিপুন হাসি দিয়ে বলে, সব কিছু ভাল ভিউ হউক আর মানুষ হা করে চেয়ে দেখুক। তাই না।।।

মানুষ সুন্দর পোষাক কেন পরে? মানুষ দেখে যেন সুন্দর লাগে।।

তুই যে ভাবে পরতে বলছিস সেটা একা পড়া যায় না।। পেছনে পিন মারতে হয়।। হাসি দিয়ে বলে, সামনের ভিউ আমার দেখানো যাবেনা  খুব ছোট। এই কথা বলেই মুচকি হাসে।।

ছোট হউক, এতে অসুবিধা কি। আমার তো মনে হয় এই সাইজটাই বেষ্ট।। আমার কিন্তু খুব পছন্দ।।

অসভ্য কোথাকার। তোর পছন্দ হলে কি হবে। যার কাছে যাব সে তো পছন্দ করতে হবে।। আমি লক্ষ্য করছি আমার সব তোর পছন্দ।।।  আমার কাউকে খুজে নিলেই হয়।  নিপুন বুকের শাড়িটা ঠিক করতে করতে বলে, আমার আর কি তোর পছন্দ শুনি।

শুভ এডভান্টেজ নিয়ে নিপুনের পাছায় আস্তে করে চাপ দিয়ে বলে তোমার এইটা খুব পার্ম। লুকেভল।।

নিপুন নড়ে চড়ে উঠে গিয়ে বলে, এই তুই হাত দিয়েছিস নাকি? অসভ্যতা করিস তাই না? ধর এই সেফটিপিনটা আমার ব্লাউজে শাড়িটাকে টাইট করে লাগিয়ে দে।

শুভ কথা মত লাগিয়ে দিয়ে বলে, এইবার ঘুরে দাঁড়াও দেখি কেমন লাগছে।

না তুই সোফায় গিয়ে বস। আমি এক্ষনি আসছি। তারপর ইচ্ছামত দেখিস।।

শুভ আর কথা বলে না। চলে যায়।।

অনেক্ষন পর নিপুন শুভর কাছে এসে দাঁড়ায়। আর বলে এইবার দেখ কেমন লাগছে। ভাল লাগলে চল যাই।।।  নিপুন ঘুরে ঘুরে দেখায়।।

শুভ চোখ উপড়ে তুলে বলে, ওয়াও।।। খব ভাল লাগছে।।। এইবার মনে হচ্ছে তোমার ঠুটে রস আছে। হা হা করে এসে দেয়।। বিয়ে বাড়িতে সবাই তোমাকে দেখে পাগল হয়ে যাবে।।।

অসভ্যের মত কথা বলছিস কেন? তুই না বললে লিপে গ্লোস করতে।।।এই প্রথম আজ কারো ইচ্ছামত সেজেছি।  তোর ভাল লাগার জন্য।  তোর ভাল লাগলেই হল। চল যাই।।

শুভ কাছে এসে বলে, চল যাই। আস্তে করে বলে আমার জন্য সাজলেই বা কি আমিতো আর কাছে আসতে পারবোনা।।  বিয়েগুলি খুব খারাপ জায়গা। অনেক মানুষ আসে। আমি সাজিয়েছি আবার অন্য কারো গলায় ঝুলে চলে গেছ।।।

নিপুন হাসি দিয়ে গাল চটকান দিয়ে বলে, আমি অন্য কারো গলায় ঝুলে গেলে তোর কি। তোর গলায়তো আর ঝুলা যাবেনা।।।

শুভ হাসি দিয়ে ইয়ার্কির চলে বলে,  ইচ্ছা হলে ঝুলে দেখ। শান্তি পাবে।।।

মনে হয় খালমীকে গলায় ঝুলানোর খুব সখ।  আইনের হাত কড়া পড়িয়ে দিব।।।

শুভ আবার হাসি দিয়ে বলে,  আইন সাক্ষী ছাড়া বিচার করতে পারেনা।।। মিয়া বিবি রাজী কেয়া করেগা কাজী।

নিপুন চোখ বড় বড় করে শুভকে দেখে বলে,  অসভ্য আমি তোর কাছে নিরাপদ মনে করছিনা।  তারাতাড়ি চল।।। হাসি হাসি মুখে আবার বলে, ও মিয়া চলুন।। দেরি হয়ে যাচ্ছে।।

মিয়া যেহেতু ডেকেই ফেলেছো তাহলে চলুন বিবি যাই। দুজনেই হাসতে হাসতে শেষ।।

শুভ আগেই গাড়ি কল করে রেখেছিল। গাড়িতে চড়ে চলে যায়।।

বিয়ের ব্যাপার হুই হোল্লোড় চলছে। খাবার দাবার গল্প আত নাচ গান চলছেই। শুভ তার আত্বীয়স্বজনদের নিয়ে ফুর্তি করছে।। সম বয়সী খালাতো মামাতো ভাইবোনদের সাথে।

শুভ বাহিরে যাবে রাস্তায় নিপুনের সাথে দেখা। শুভ হাসি দিয়ে আস্তে করে বলে, আমার বিবির কি খবর। সব ঠিক আছে।।

নিপুন হাসি দিয়ে বলে,  মিয়ার দেখি খোজ নাই।  বিবির কথা কি মনে আছে।  মিয়ার কি খাবার দাবার হয়েছে।

শুভ বলে, না খাই নাই। বিবির সাথেই খেতে চাই।  যদি বিবি রাজী থাকে।

তাহলে এখন কই যাস।  আয় সবাই খেতে বসবে। খেয়ে নেই।  মিয়া বিবি দু জনেই যখন রাজী কেয়া করেগা কাজী বলে হাসতে থাকে।।।।।

শুভ আড় চোখে একবার চেয়ে হাসতে হাসতে বলে,  আমিত সব সময়ই রেডি।।  বিবিকা হাত মে সব কুচ।।।

নিপুন হাসি দিয়ে  নিজেকে ঘুরিয়ে নেহি মিলা গা মিয়া।  কুচ নেহি মিলে গা।।। বলে চলে যায়।।।

খাবার দাবার শেষ।।  ধীরে ধীরে সব অতিথি চলে যায়।।  আম্মু নানুকে নিয়ে আমাদের বাসায় চলে যায়। আমরা সবাই মিলে চাচতো মামার বাসায় যাই।।।
বাসার  ছাদে বিশাল আয়োজন।  বাড়ির মেয়ে চলে গিয়েছে সেই শোককে আনন্দে রুপান্তর করে  আমরা গান বাজনা করছি।।  এখানে সম্পর্কের বালাই নাই। সবাই বন্ধুর মতই ফুর্তি করছি।।  আমি হঠাৎ দেখি খালমী ছাদের এক কোনায় ওয়ালে  ধরে দাঁড়িয়ে ঢাকা শহরের ঝমকালো আলো দেখছে।  দেখে তাই মনে হল। আবার চিন্তা করলাম একা একা দাঁড়িয়ে আছে কেন। আমি আস্তে আস্তে করে পেছনে  গিয়ে দাঁড়িয়ে বলি, মন খারাপ নাকি?

একবার আমাকে দেখে আবার বাহিরে চেয়ে বলে, না ।  রাতের ঢাকা দেখছি। আর তোদের চিল্লাফাল্লা ভাল লাগছে না। তাই দাঁড়িয়ে আছি।

আমি গায়ে গা লাগিয়ে  দাঁড়িয়ে  বলি, ও আচ্ছা। আমি ভাবছি মন খারাপ তাই আসছিলাম মন ভাল করা যায় কি না।

আচ্ছা। তা মিয়া কি  মন খারাপের ডাক্তার নাকি।।

শুভ হাসি দিয়ে বলে, মিয়ারা সব বিবিদের মন খারাপের ডাক্তার।

Exit mobile version