হয়তো তোমারই জন্য – ২ (Hoito Tomaori Jonyo - 2)

বিকেলে ছাদে এসে বসল দিয়া। মনটা এখন বেশ হালকা লাগছে। গত দুদিন ধরে মনের মধ্যে যে ভারী পাথরটা চেপে বসেছিল সেটা নেমে গেছে। সবকিছু আবার খুব ভালো লাগছে।

গান চালিয়ে দিল দিয়া। গান শুনতে শুনতে ভাবতে থাকে অনিন্দ্যর কথা। অনিন্দ্য নিশ্চয় আসবেনা এখন। রেস্ট নিতে বলেছে দিয়া। কথা যদি না শোনে তাহলে কাল ভীষন বকবে ওকে।

ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে দিয়ার। রোজ কেন আসে জিজ্ঞেস করাতে বেচারা কেমন থতমত খেয়ে গেছিল তখন। আর ওর স্পষ্ট কথায় দিয়ার গাল লাল হয়ে গেছিল।

সন্ধ্যে বেলা পড়তে পড়তেও অনিন্দ্যর কথা ভাবে দিয়া। ওষুধগুলো ঠিকঠাক খাচ্ছে তো? আর নিশ্চয় জ্বর আসেনি। ভাবতে ভাবতে পড়ার কথা ভুলেই গেছিল দিয়া। হঠাৎ হুঁশ হল এবারে তার মাধ্যমিক। পড়ায় অবহেলা করলে চলবেনা। মন শান্ত করে বইয়ের পাতায় মনযোগ দেয় দিয়া।

পরদিন মোড়ের মাথায় দেখা হয় আবার। আজ অনেক ফ্রেশ লাগছে অনিন্দ্যকে। একগাল হাসি নিয়ে দিয়ার কাছে আসে অনিন্দ্য। দিয়াও হাসে প্রত্যুত্তরে।

অনিন্দ্য বলে জানো কাল বিকেল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমি একটানা রেস্ট নিয়েছি।
দিয়া হেসে বলে হ্যাঁ তোমার চোখ মুখ দেখেই সেটা বুঝতে পারছি। গুড বয়।
দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে শুরু করে।
দিয়া বলে এখন শরীর ভালো তো?

অনিন্দ্য বলে একদম। তোমাকে দেখে আর ভালো হয়ে গেল।
দিয়ার গাল আবার আপেল হয়ে যায়। চোরা চাহনিতে অনিন্দ্যকে দেখে একবার।
অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে কাল বাড়ি গিয়ে কি করলে?

রোজ যা করি। দিয়া বলে। বিকেলে ছাদে উঠেছিলাম। সন্ধ্যেবেলা পড়াশোনা তারপর খেয়ে ঘুম ব্যাস।
গাঢ় স্বরে অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে আমার কথা ভাবনি?

বুক কেঁপে ওঠে দিয়ার। সেদিন থেকে যে সারাক্ষন ওর কথাই ভেবে চলেছে সেটা আর কি বুঝবে ও।
কিছু বললে না যে? ব্যাকুল স্বরে জানতে চায় অনিন্দ্য।
হুঁ ভেবেছি। ছোট্ট করে উত্তর দেয় দিয়া।

অনিন্দ্য বলে আমি সারাক্ষন তোমার কথাই ভাবি জানো?
মুখ তুলে অনিন্দ্যর চোখের দিকে তাকায় দিয়া। সে চোখে অনুরাগের ছায়া দেখতে পায়।
কি এত ভাবো? জানতে চায় দিয়া।

অনিন্দ্য বলে কত কিছু। ভাবনার কি শেষ আছে? তোমার কথা ভাবতে খুব ভালো লাগে আমার। মন ভালো হয়ে যায়।
দিয়া বলে কেন তোমার মন কি সারাক্ষন খারাপ থাকে?

অনিন্দ্য বলে না তা না। তবে পড়াশোনার চাপে মাথা হ্যাং হয়ে যায় তো। তখন তোমার কথা ভাবলে মাইন্ড একদম রিফ্রেশড হয়ে যায়।
এই তো বললে সারাক্ষন নাকি আমার কথা ভাবো। তাহলে পড়াশোনা কর কখন?
ওরই ফাঁকে ফাঁকে। দুষ্টু হাসি হেসে বলে অনিন্দ্য।

হাসলে অনিন্দ্যর বাঁ গালে টোল পড়ে। লক্ষ্য করে দিয়া।
অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে তুমি টিউশন পড় না?
দিয়া বলে হ্যাঁ পড়ি তো। শুধু সায়েন্স গ্রূপটা। বাকি সাবজেক্ট বাড়িতেই পড়ি।
কোথায় যাও পড়তে? ব্যগ্র স্বরে জানতে চায় অনিন্দ্য।

দিয়া বলে সুজিত স্যারের কাছে। বাবুপাড়ায়।
– কখন যাও?
– সোম বুধ শুক্র। সকাল ৭টা থেকে।

উত্তরটা দিয়ে অনিন্দ্যর দিকে তাকায় দিয়া। অনিন্দ্য কিছু না বলে শুধু হাসে।
দিয়া বলে তুমি কি প্ল্যান করছ আমি জানি। ওসব চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের পড়াতে মন দাও।
অনিন্দ্য একটু মিইয়ে গিয়ে বলে দেব দিয়া। আমি রাতে ঠিক পড়ে নেব। তুমি দেখো আমার পড়ার কোন ক্ষতি হবেনা।
তাহলেই ভালো। গম্ভীর ভাবে জবাব দিয়ে হাঁটতে থাকে দিয়া।
অনিন্দ্য বলে ওরকম দিদিমনির মত মুখ করে আছ কেন?
অনিন্দ্যর কথায় হেসে ফেলে দিয়া।

খুশি হয়ে অনিন্দ্য বলে হ্যাঁ এইবার ঠিক আছে। এরকম হাসতে থাক সবসময়।
দিয়া বলে তাহলে আমাকে পাগল বলবে সবাই। আর সাথে তোমাকেও।
অনিন্দ্য বলে ভালো তো। আমি পাগল আর তুমি পাগলী।
অনিন্দ্যর কথায় রামধনুর মত রঙ ছড়িয়ে হাসতে থাকে দিয়া।

বাকি পথটুকু হাসি গল্পে শেষ হয়ে যায়। দিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরতি পথ ধরে অনিন্দ্য। আর দিয়া এতক্ষন একসাথে কাটানো সময়টা বুকে জমা রেখে বাড়ি ঢুকে যায়।

পরদিন সকালে টিউশন যাবার জন্য বেরিয়েই দেখে অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে আছে সাইকেল নিয়ে। মনে মনে খুব খুশি হয় দিয়া কিন্তু কপট রাগ দেখিয়ে বলে চলে এসেছ সকাল সকাল?

অনিন্দ্য বলে আমি তো অপেক্ষায় ছিলাম কখন সকাল হবে আর কখন তোমার সাথে দেখা হবে।
খুব হয়েছে। থাক। মুখ ভ্যাংচায় দিয়া।

অনিন্দ্য বলে সালোয়ার কামিজে তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
– এটা সালোয়ার কামিজ না। কুর্তি লেগিংস বলে।
– যাই বলে। তোমাকে দারুন লাগছে।
– আর কি দারুন লাগছে শুনি। বাঁকা চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে দিয়া।
– সব কিছুই।
– সব কিছুই মানে? অনিন্দ্যর কথার আড়ালে দুষ্টুমির আভাস পায় দিয়া।
– সব কিছুই মানে ওভারঅল তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
– হুম। ছোট্ট করে প্রত্যুত্তর দেয় দিয়া।

সাইকেল গড়িয়ে চলে গন্তব্যে। যতটা সম্ভব আস্তেই চালাচ্ছে দিয়া। এই পথটুকু জলদি শেষ হয়ে যাক সে চায়না।
– তোমার ক্লাস কটা থেকে? জানতে চায় দিয়া।
– দশটা
– আর শেষ হয় কটায়?
– পাঁচটা
– তাহলে তুমি চারটের সময় আসো কি করে?
– শেষের ক্লাসটা ইম্পরট্যান্ট নয়
– কেন?
– ইয়ে মানে আমি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলো খুব মন দিয়ে করি। একটাও মিস করিনা। থিওরি ক্লাস এক আধটা না করলেও চলে।
– হুম। তার মানে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আসো।
– না ঠিক ফাঁকি না। মানে ওই আর কি।
– বুঝলাম
– কেন তুমি চাও না আমি আসি?
– তাই বললাম কি? কিন্তু ক্লাস ফাঁকি দিলে তোমার পড়ার ক্ষতি হবেনা?
– না না। ওটুকু আমি পুষিয়ে নেব।

গল্পে কথায় এগিয়ে যেতে থাকে দুজনে। এগিয়ে চলে ওদের সম্পর্ক। বেড়ে চলে ওদের ঘনিষ্ঠতা। কত কত কথা জমে আছে দুজনের মনে। সারা দিনরাত ধরে বললেও হয়তো শেষ হবেনা।

স্যারের বাড়ির কাছাকাছি এসে দিয়া বলে চলে এসেছি। এবার তুমি ফিরে যাও। টা টা।

আচ্ছা। বিকেলে দেখা হবে বলে অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে পড়ে। দিয়া চোখের আড়াল হলে সাইকেল ঘুরিয়ে প্যাডেলে চাপ দেয়।
বিকেলে দিয়ার স্কুল থেকে ফেরার সময় আসে অনিন্দ্য। হাঁটতে থাকে দুজনে পাশাপাশি আর কলকল করে কথা বলে যায়। পথটা এত জলদি ফুরিয়ে যায় যে দুজনের কারোরই মন ভরেনা।

কথাটা অনিন্দ্যই তোলে প্রথম। দিয়াকে বলে এইটুকু সময়ের জন্য তোমাকে কাছে পাই। তাতে মন ভরেনা।
দিয়া ভ্রু তুলে বলে কেন আর কত কাছে চাও?

– না মানে চোখের পলকে পথটা ফুরিয়ে যায় তো। কথা শুরু করার আগেই শেষ হয়ে যায়। যদি আরো কিছুক্ষন কথা বলা যেত।
– সকালেও তো কথা হল।
– সেটাও তো সামান্যই। আর সপ্তাহে তিনদিন মাত্র।

তাহলে? দিয়া জানতে চায় অনিন্দ্যর মাথায় কি ঘুরছে।
বলছিলাম কি। একটু ইতস্তত করে অনিন্দ্য।
– হুম বলো
– কোথাও বসে গল্প করলে হয়না?
– কোথায়?
– তুমি বলো। আমি তো সেরকম চিনিনা এখানে সবকিছু। তুমি তো এখানকারই মেয়ে।
– আমিও খুব একটা জানিনা
– আচ্ছা আমি খোঁজ নিচ্ছি। আর বলছি কি তোমার মোবাইল আছে?
– না। বাবা বলেছে মাধ্যমিকের পর কিনে দেবে।
– ওহ আচ্ছা।

পরদিন বিকেলে দেখা হতেই অনিন্দ্য বলল পেয়ে গেছি খোঁজ।
– কোথায় ?
– নদীর ধারে। ওখানে কেও ডিস্টার্ব করবেনা। ফাঁকা জায়গা।
– কে বলল ওখানকার কথা?
– ক্লাসের একটা ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম।
– হুম
– যাবে কাল?
– কখন? সকালে? আর আমার টিউশন?
– একদিন অফ করলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে?
– তা হয়তো হবেনা। কিন্তু একদিন হলে দুদিন হবে, দুদিন থেকে তিনদিন।
– না না রোজ বলব না।
– একদিন গল্প করেই শখ মিটে যাবে তোমার? না একদিনেই সব কথা শেষ হয়ে যাবে।
– না তা তো হবেনা। কিন্তু আমিও চাইনা তোমার পড়াশোনার ক্ষতি হোক। মাঝে মাঝে যাব আমরা।
– বেশ। দেখা যাবে।

পরদিন সকালে অনিন্দ্য বলল কি ঠিক করলে? টিউশন না নদী?
দিয়া বলল তোমার অন্য কোন মতলব নেই তো?
অনিন্দ্য আকাশ থেকে পড়ে বলল মানে?

দিয়া বলল মাত্র দুদিনের আলাপেই আমাকে নিয়ে ফাঁকা জায়গায় যেতে চাইছ। তাই বললাম। সেরকম চিন্তা যদি থাকে তাহলে কোন সুবিধে হবেনা সেটা আগেই বলে দিলাম।

ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে গেল অনিন্দ্য। আচমকা অনিন্দ্য দাঁড়াতে দিয়াও নেমে গেল সাইকেল থেকে।
পেছন ঘুরে জিজ্ঞেস করল কি হল?

অনিন্দ্য দৃঢ় কঠিন গলায় বলল আমি সেসব চিন্তা কিছু করিনি। শুধু একান্তে গল্প করার জন্যই ডেকেছিলাম। ওসব চিন্তা করার সময় এখনো আসেনি সেটা আমিও জানি। আমরা এতটাও কাছে আসিনি এখনো। কিন্তু তুমি আমাকে এতটা নীচ ভাববে সেটা আশা করিনি। ঠিক আছে তোমাকে কোথাও যেতে হবেনা। তুমি টিউশন যাও। আমি ফিরে যাচ্ছি।

দিয়াকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সাইকেল ঘুরিয়ে স্পিডে বেরিয়ে গেল অনিন্দ্য। দিয়া দুবার অনিন্দ্য অনিন্দ্য শোনো বলে ডাকল। কিন্তু সেই ডাক অনিন্দ্যর কানে পৌঁছল বলে মনে হলনা। অথবা পৌঁছলেও অনিন্দ্য ফিরে তাকাতে ইচ্ছুক ছিলনা হয়তো।

হতভম্ব দিয়া রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে রইল। অনিন্দ্যকে আঘাত দিতে চায়নি ও। স্বাভাবিক মেয়ে সুলভ আশঙ্কায় বলেছিল ওই কথাগুলো। কিন্তু অনিন্দ্য বুঝলনা। রাগ হয়ে যায় দিয়ারও।

সেদিন বিকেলে এলো না অনিন্দ্য। রাতে শুয়ে শুয়ে দিয়া ভাবছিল তার কি কোন দোষ ছিল? আগা গোড়া পুরো ঘটনাটা মনে মনে রিপিট করল দিয়া। না তার দোষ ছিলনা কোন। সে যা বলেছে সেটা যে কোন মেয়েই বলত। অনিন্দ্য যদি দিয়ার জায়গায় থাকত তাহলে সেও তাই বলত।

মাত্র চারদিনের বন্ধুত্ব। এত কম সময়ের মধ্যে কোন ছেলে যদি কোন মেয়েকে ফাঁকা জায়গায় যাবার প্রস্তাব দেয় তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটির মনে একটা ভীতি, আশঙ্কা উঁকি দেয়।

সে কোন দোষ করেনি। এটা অনিন্দ্যকে বুঝতে হবে। বুঝলে ভালো। না বুঝলে দিয়ার কিছু করার নেই। অনিন্দ্যর চিন্তা মাথা থেকে বার করে ঘুমিয়ে পড়ে দিয়া।

পরদিন বিকেলে ফেরার পথে দিয়া দেখল অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে আছে। দিয়া দাঁড়িয়ে গেল। কিন্তু কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখাল না।
রাস্তা পার করে পায়ে পায়ে অনিন্দ্য এসে দাঁড়াল দিয়ার কাছে। খুব কাছে। এতটাই কাছে যে দিয়া ওর শরীরের ঘ্রান পাচ্ছিল।
দিয়া ভেবেছিল ও আগে থেকে কোন কথা বলবেনা। অনিন্দ্যই বলুক আগে। ও যে অনিন্দ্যকে দেখে দাঁড়িয়েছে সেটাই অনেক।

কিন্তু অনিন্দ্যর শরীরের পুরুষালী গন্ধ দিয়ার মনটাকে ওলট পালট করে দিল। নিজেকে আর শাসনে বেঁধে রাখতে পারলনা দিয়া। মাটিতে চোখ রেখে মৃদু কম্পিত স্বরে জিজ্ঞেস করল কাল এলেনা কেন বিকেলে?

দিয়ার নরম কন্ঠ গলিয়ে দিল অনিন্দ্যকে। আবেগে গলা বুজে এল ওর। কোনক্রমে দলা পাকিয়ে উঠে আসা কান্নাটা সামলে নিয়ে বলল তুমি আমাকে খুব খারাপ ভাবো তাই না?

অনিন্দ্যর গলার স্বরে পরিবর্তন দিয়ার কান এড়ায় না।চোখ তুলে তাকাতে অনিন্দ্যর ছলছল চোখ আর ঠোঁট কামড়ে নিশ্চুপ থাকা থেকে ওর মনের আবেগটা সহজেই বুঝতে পারল দিয়া।

সেই আবেগ আক্রান্ত করল দিয়াকেও। নিজের দুহাত দিয়ে অনিন্দ্যর হাতটা জোরে আঁকড়ে ধরে দিয়া বলল খারাপ ভাবলে তোমার অপেক্ষা করতাম না কাল। আর কাল যা বলেছিলাম সেটা তুমি যদি মেয়ে হতে তাহলে বুঝতে।

গাঢ় স্বরে অনিন্দ্য বলল বুঝেছি দিয়া। কাল সারারাত এই কথাগুলোই ভেবেছি। তাই তো এলাম আজ। দিয়ার হাত মুঠো করে ধরল অনিন্দ্য।

কিছুক্ষন চুপ থাকল দুজনে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। নীরবতা ভাঙলো অনিন্দ্যই। দিয়ার হাত ধরে পাশে এসে বলল চলো যাওয়া যাক।

দিয়া আর অনিন্দ্য হাত ধরাধরি করে হাঁটতে লাগল। বাঁধ ভেঙে আবার কথার স্রোত বেরিয়ে এল দুজনের। কালকের ঘটনাটা এক ঝটকায় দুজনকে একে অপরের আরো অনেক কাছে এনে ফেলেছে। একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান আর বিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলেছে। দুজনেই লহমায় ভুলে গেছে সব মান অভিমান। ভালোবাসা যেখানে ভীষন ভাবে বলবৎ সেখানে এসব তুচ্ছ মনোমালিন্য কোন আঁচড়ই কাটতে পারেনা।