একটি চাবুক, দুই মালকিন ও কয়েকটি যৌনদাসের গল্প – ২ (Ekti Chabuk Dui Malkin O Jounodas - 2)

যৌনদাসের গল্প – দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

শুধু রাতগুলো হোটেলে কাটিয়ে দীর্ঘ প্রায় তিনদিন গাড়ী চালিয়ে এখানে এসে পৌঁছোল নীতারা |তখন সবে ভোর হয়েছে ;একসময় জয়কে অবাক করে নীতা ওর চোখে একটা বড়ো রুমাল বেঁধে দিল ; ড্রাইভারকে ইঙ্গিত করতেই বিশাল গাড়ীটা মূল রাস্তা ছেড়ে ধরল একটা সরু রাস্তা; আরো প্রায় ঘণ্টাচারেক পরে থামল গাড়িটা |

এবার নীতা চোখের বাঁধনটা খুলে দিল জয়ের |জয় দেখল একটা বিশাল উঁচু পাঁচিলঘেরা এলাকা ; সামনে বিশাল এক লোহার কারুকার্য করা গেট ; নীতা কাছে গিয়ে তীক্ষ্ণস্বরে কাকেও ডাকতেই একটা তীব্র শব্দ করে খুলে গেল গেটটা -বেরিয়ে এল বিশালদেহী এক রক্ষী | সেলাম করে পুরো খুলে দিল গেটটা ;ড্রাইভার গাড়িটা ভেতরে ঢোকালো |নীতার ইঙ্গিতে গাড়ী থেকে নেমে এল জয় |ও যতদূর দেখল ততদূরই পাঁচিল ….শেষ প্রায় দেখাই যায় না ;একটু দূরেই বিরাট প্রাসাদের মতো বাড়ীটা |

জয় এইরকম পুরোনো প্রাসাদের মতো বাড়ী দেখেছে কেবল সিনেমার পর্দায়|নীতা জয়ের অবাক চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,”অত অবাক হয়ে কি দেখছ জয়?এই হলো আমার প্রপিতামহের তৈরী করা বাড়ী…তুমি একে প্রাসাদও বলতে পারো …তাঁর জমিদারীর এই শেষ চিহ্নটাকে আমি সম্পূর্ণ মেরামত করে বানিয়েছি নিজের মতো করে…বাইরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনো বিদ্যুতবিহীন হলেও এখানে আছে নিজস্ব বিদ্যুতব্যবস্থা …এই প্রাচীরের ভেতরের কোনোকিছু ব্যাপারে মাথা না ঘামানোর জন্য তথাকথিত আইনের রক্ষকরা নিয়মিত মাসোয়ারা পায় আমার কাছে |

বেশ কিছুদিন বাইরে থাকায় এখানের কাজকর্ম কিছুই দেখা হয় নি;এবার শুরু হবে আমার কাজ….”নীতার পরের কথাগুলো জয় ঠিক বুঝতে পারল না |ভিতর দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে নীতা কিছুটা নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলল,” এই প্রাচীরের চার দেওয়ালের আড়ালে হবে আমার স্বপ্নপূরণ…আর সেই পূরণের প্রথম বলিকে আমি পেয়েছি…’ ইতিমধ্যে জয় দেখল বাইরে বেরিয়ে এসেছে প্রায় জনাবিশেক নারী-পুরূষ ; প্রত্যকে নীতাকে সেলাম করে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো |

নীতা ওদের কয়েকজনকে কয়েকদিনের ছুটি দিয়ে দিল ; বাকীদের বলল,’শোন্ ,আমি চাই কয়েকদিন এখানে একটু একা কাটাতে ,তোরা হাভেলির ভেতরে এই কদিন ঢুকবি না -‘ওরা পরস্পর মুখ চাওয়া-চায়ি করল ,একজন একটু সাহস করে বলল,’কিন্তু মালকিন, আপনার জন্য রান্না-বান্না…’নীতা অত্যন্ত গম্তীরভাবে জয়কে দেখিয়ে বলল, এই কদিন এ আমার সব কাজ করে দেবে-‘লোকটি একটু অবাক হয়ে জয়কে দেখল , কিন্ত মনে হয় আর কিছু প্রশ্নের সাহস পেল না, নিশ্বব্দে ঘাড় নাড়ল | নীতা এবার ফিরল রোগা-মতন চেহারার একজনের দিকে,প্রায় হুকুমের সুরে বলল,’রনধীর,সবকটা ঘর আমার কথামত সাজানো হয়েছে? ‘

লোকটি নিঃশব্দে ঘাড় নাড়ল |এবার নীতা সবার দিকে তাকিয়ে বলল,’আমি চাই না এই হাভেলীর কোনো কিছু খবর যেন বাইরে না যায়—কথাটা মনে থাকে যেন….’নীতার শেষ কথা বলার ভঙ্গীতে তীব্র হুঁশিয়ারীর সুর…

এবার নীতার ইঙ্গিতে প্রহরীরা ছাড়া সকলে বেরিয়ে গেল হাভেলী থেকে | নীতা প্রহরী চারজনকে বলল, ‘তোরা হাভেলীর নিচে গেটে প্রহরায় থাকবি কদিন ; আমার হুইশলের শব্দ ছাড়া কখনোই ভেতরে আসবি না’- সেলাম করে চলে গেল ওরা ;জয়কে নিয়ে নীতা ঢুকল হাভেলীতে ;ওরা এসে দাঁড়ালো এক বিশাল হলঘরে |মেঝেতে খুব দামী গালিচা ,দেওয়ালে আধুনিক রং আর শিকারীর পোষাক পরে কয়েকজন পুরুষের পূ্র্ণদেহের ছবি ….

দেওয়ালে আটকানো কয়েকটি হিংস্র জন্তুর মাথা|নীতা বলল, ‘কী দেখছ জয় ,ওনারা আমার পূ্র্বপূরুষ..প্রত্যেকেই ছিলেন বাঘা শিকারী…ওদেরই অভিজাত রক্তের উত্তরাধিকার এই শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছি আমি |’…..পরের কথাগুলো দু্র্বোধ্য ঠেকল জয়ের কাছে |

নীতা কিছুটা নিজের মনেই যেন বলল ,আমার লক্ষ্য অবশ্য জানোয়ার শিকার নয়,আমি চাই তাগড়াই চেহারার কিছু মানুষকে শিকার করে তাদের পোষ মানাতে…’নীতা এবার হতবাক জয়ের দিকে এগিয়ে দিল একগুচ্ছ চাবি,বলল,’আজকের খাবার তৈরী করাই আছে,কাজেই আপাতত তোমার কোনো কাজ নেই;তুমি চার নম্বর দরজাটা খুলে সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচের ঘরে অপেক্ষা করবে আমার জন্য’…জয় একটু অবাক হলেও মুখে বলল ,’তাই হবে নীতা’….প্রায় সাথে সাথে সশব্দে একটা চড় নেমে এল জয়ের গালে |

ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত হয়ে গেল জয়…শুনতে পেল নীতার তীক্ষ্ণ হিসহিসে স্বর ,’ এখন থেকে আমি তোমার মিস্ট্রেস জয় , আর তুমি আমার শ্লেভ…. এছাড়া কোনো সম্পর্ক নেই…আমার যৌন-দাস তুমি..এছাড়া তোমার কোনো পরিচয় নেই…আশা করি কথাটা মনে থাকবে ‘,জয় নিঃশব্দে ঘাড় নাড়ল |

চাবীটা হাতে নিয়ে জয় এগিয়ে যাচ্ছিল…পেছন থেকে নীতা ডাকল ,’ও আর একটা কথা তোমার জেনে রাখা ভালো…এই হাভেলীর চারপাশে বেশ কয়েকটা হিংস্র কুকুর সবসময় পাহারা দেয়…. কাজেই পালাবার চেষ্টা করার মতো নির্বোধ আশা করি তুমি হবে না…আর বাইরে গিয়েই কী করবে .. তোমার পরিচয়ের যাবতীয় কাগজ এখন আমার কাছে জয়… বাইরে কিছুটা গেলেই অন্য দেশের সীমানা…. সেখানের রক্ষীরা তোমাকে জেলে দিলে হয়তো তুমি বেঁচে যাবে … কিন্তু ওরা তোমাকে হয়তো বহিঃশত্রুর তকমা দিয়ে এনকাউন্টারে গুলি করে মারবে… কাজেই…’ কথাটা শেষ না করেই সমস্ত শরীরে অপূর্ব এক হিল্লোল তুলে ,জয়ের মনে সুতীব্র কামনার লেলিহান আগুন জ্বালিয়ে বেরিয়ে গেল নীতা |

পরক্ষণেই সমস্ত শরীরটা হিম হয়ে এল জয়ের | কী বলে গেল নীতা ? সে এখন তাহলে সম্পূ্র্ণ বন্দী ? এখান থেকে পালানোর কোনো রাস্তা নেই ?তাহলে সে এখন ….জয় আর কিছু ভাবতে পারে না …না ,আপাতত নীতার হুকুম মেনে ওকে খুশি করে এখন থেকে পালাবার উপায় খুঁজতে হবে…জয় চাবির গোছাটা নিয়ে এগিয়ে যায় ঘরগুলোর দিকে|

চারনম্বর লেখা দরজাটা খুলে নীচে নেমে যাওয়া সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকে জয় ; সিঁড়িতে হালকা আলো জ্বলছে ; শেষ সিঁড়ির ধাপে সম্ভবত কোনো লুকিয়ে থাকা স্যুইচে পা পড়তে সমস্ত ঘর ভরে উঠল ঊজ্জ্বল আলোয় | আর সেই বিরাট ঘরটার চারদিকে তাকিয়ে ভয়ে প্রায় দমবন্ধ হয়ে এল জয়ের …..

বেশ লম্বা ঘরটার একদিকে একটা বিশাল কাঠের ক্রশ |তার উপরে ও নীচে আংটা লাগানো | জয় বুঝল ওই আংটার সাথে হাত-পা বেঁধে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার জন্যে তৈরী ওটা….