আলো আঁধারির খেলা। ১ম পর্ব

শীতের রাত। বিরাট বাগানবাড়ি, আর তার সামনের সুন্দর করে সাজানো বাগানটার ওপর ধীরে ধীরে কুয়াশা নেমে আসছে। সন্ধ্যার আলো কিছুক্ষন আগেই নিভে গেছে। এখন শুধু বাড়িটার অন্তর্মহল থেকে কিছু আলোর রোশনি, কাঁচের দরজা জানালা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে। এদিকে বাইরে রাস্তার আলোর হ্যালোজেন এর হলুদ আভা, কুয়াশার মধ্যে মিশে, একটা নৈসর্গিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সেই ধোঁয়াটে আলো আঁধারিতে, হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে আমি বসে আছি বাইরের বারান্দায়। বাড়িটি বেশ নির্জন জায়গায় অবস্থিত বলে, আশপাশে কোনো আওয়াজ বিশেষ নেই। এরম শীতে ঝি ঝি পোকা ও আওয়াজ করছে না।

শুধু শির শিরে হাওয়া তে দুলতে থাকা নারকেল গাছ টার পাতার হালকা খুশখুশে আওয়াজ। আর বাড়ির ভেতরে কোথাও থেকে ভেসে আসা দেওয়াল ঘড়ির টিক টিক। বেশ একটা রোমাঞ্চকর পরিবেশ বটে! মনে মনে ভাবলাম এইরকম রাত, বইতে লেখা সব রহস্য রোমাঞ্চ গল্পের প্রেক্ষাপট হওয়ার জন্যে একদম যথার্থ। কিশোর সমিতির লাইব্রেরী থেকে এনে যে বইগুলো দুপুর বেলায় পড়ি, মনে মনে ছবির মত সাজাতে থাকলাম এক একটা সিন, এই পরিবেশের মধ্যে।

কল্পনার জগৎ এ হারিয়ে গেলাম কিছুক্ষন এর মধ্যেই। আমি যে এখানে একা আসিনি, সঙ্গে যে মা ও এসেছে, আর আমাকে বারান্দায় বসিয়ে রেখে, সুনীল বাবু ও তার তিন বন্ধুর সাথে বাড়িটার ভেতরে গেছে প্রায় আধঘন্টা আগে, সেটা কেমন ভুলেই গেলাম প্রায়। আমাকে বাইরে একা বসতে বলা হলো কেনো, সেই কৌতূহল টাও ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলো কোথাও….

আমার পরিচয়টা দেওয়া উচিত ছিল আগে। আমি শুভ, পুরো নাম শুভজিৎ। চন্দনপুর এর বাকি ছেলেদের মতনই খেলাধুলা, স্কুল, মাঠে ঘাটে দৌরাত্ম্য নিয়েই জীবন কাটে। এখানকার অধিকাংশ পরিবারগুলির মতন ই চন্দনপুর এর ইস্পাত কারখানায় কর্মরত আমার বাবা। অবশ্য বলা উচিত, কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ইস্পাত কোম্পানিতে দুর্নীতি তে অংশগ্রহণ করার নালিশ ওঠে। তাকে চাকরি থেকে ইস্তফা নিতে বাধ্য করা হয়। এখন অন্য শহরে অন্য চাকরি নিয়ে থাকেন। এই ঘটনার আরেকটা প্রতিফলন আমার মা বাবার ডিভোর্স।

ডিভোর্স এর পর পরই বাবা চলে যান অন্য চাকরি নিয়ে। রয়ে যাই আমি আর মা। কারণ মা চন্দনপুর ছাড়তে নারাজ। তার নিজের জীবন, আমার স্কুল সবই এখানে। বাবার প্রতি মানুষজন এর বিশেষ সহানুভূতি না থাকলেও আমার আর মার প্রতি ছিল, তাই আমাদের কোনো লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়নি। দিব্যি চলতে থাকে আমাদের দৈনন্দিন জীবন।

আমার মার নাম কমলা। বয়স ৩৮। আমার বলতে বেশ গর্বই হয় যে মা কে বেশ সুন্দর দেখতে। পানপাতা র মতন মুখশ্রীর সাথে স্বেটবর্না শরীর। টানা টানা চোখ, মিষ্টি নোলক পরা নাক এর নিচে সুমিষ্ট ঠোঁট। লম্বা চুলের বাহার ছিল এক কালে একদম কোমর অবধি, এখন অবশ্য অতটা বড় রাখে না। যৌবন কাটিয়ে মধ্যবয়স্কা হওয়াতে শরীরে বেশ পরিপূর্ণতা বেড়েছে। বুকে, কোমরে আর, লজ্জা করে বলতে, কিন্তু নিতম্বে বেশ মেদ লেগে সুডোল হয়েছে। মা চিরকালই বেশ নম্র স্বভাবের আর বয়স হওয়ার সাথে সাথে আরো কমনীয় হয়ে উঠেছে সকলের মাঝে।

তো আমরা মা ছেলেতে বেশ ভালই দিন কাটাই, আমার প্রতি যে স্নেহের কোনো খামতি নেই, সেটা বলা বাহুল্য। মা এখন একটি বড় ওষুধের দোকানে cashier এর কাজ করেন। তার বেতন এ দিব্যি চলে যায়। চাকরি টা এসছে অবশ্য সুনীল বাবুর দয়ায়। আসছি সে কোথায়।

দেওয়াল ঘড়িটায় ঢং ঢং করে বিকেল ৬ টা বাজলো। আওয়াজে আমার কল্পনায় ভেসে যাওয়া মনটা হঠাৎ বাস্তব e ফিরে এলো। বাইরে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। জনমানব নেই রাস্তা ঘাটে। এখন শীত টা বেশ অনুভব করছি, সোয়েটার পরে থাকা সত্বেও। আরেক সমস্যা হলো মশা। শীতের অন্ধকারে বাইরে বসার এই এক জ্বালা! এবার একটু অধৈর্য লাগতে শুরু হলো।

ভাবলাম, ” মা এতক্ষন ধরে কি করছে ভেতরে? আমায় বসিয়ে রেখে সেই গেলো, তো গেলো!” প্রায় ৪৫ মিনিট হয়ে গেছে, মা সুনীল বাবু আর তার বন্ধুদের সাথে ভেতরে গেছে।

বন্ধু বলতে, আরেকজন পুরুষ আর দুজন মহিলা। পুরুষটি আর মহিলাদের মধ্যে একজন মনে হলো নবদম্পতি। তাদের আমি চিনি না, তবে বিকেল বেলায় যখন এসে উপস্থিত হই, তখন সুনীল বাবু দেখলাম তাদের আলাপ করিয়ে দিল রোহান আর রঞ্জনা নামে। তারা বোধ করি শহর থেকে নতুন এসেছে, ইস্পাত কারখানায় রোহান এর চাকরির সূত্রে। আরেকজন মহিলা যিনি তাকে আমি চিনি। রেশমী মাসী, ইস্পাত কোম্পানি তে বাবার সহকর্মী ছিলেন, সেখান থেকেই আলাপ। তাকে আমাদের বাড়িতে বেশ কয়েকবার আসতে দেখেছি, আমার সাথে বেশ কবার গল্প ও করেছে।

বেশ রসিক উনি, তাই আমার ভালো লেগেছিলো। শ্যামবর্ণ চেহারা, একটু লম্বাটে মুখ, মোটা ভুরু নিচে জ্বলজ্বলে চোখ তাতে মোটা করে কাজল পরা, সুষ্পষ্ট নাক আর ছোট্ট রসালো ঠোঁট। মা র বয়সী হলেও, মা র তুলনায় ওনার রোগা গঠন। চেহারার মধ্যে একটা গ্রাম্য ছাপ থাকলেও, উনি বেশ আধুনিকা। সুনীল বাবুর সাথে উনি ই মা এর আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন।

রোহান আর রঞ্জনা র চেহারা একেবারেই শহুরে। তারা দুজনেই ৩০ বছর বয়সের হবে। কথা বার্তার মধ্যে একটা শহুরে আভিজাত্য আছে। রঞ্জনার চুল ছোট করে কাটা, একটু ছোটখাটো চেহারা। রোহান এর ও ছিপছিপে চেহারা। সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাম্ভীর্য সুনীল বাবুর চেহারায়। বেশ লম্বা চওড়া সুপুরুষ, মুখের গঠন বেশ তীক্ষ্ণ। আর বেশ ভারী গলা। দেখেই সমীহ হয়।

এদিকে আমি শীত আর মশার উপদ্রপ সহ্য করতে না পেরে উঠে পড়লাম। ভাবলাম, বাড়ির ভেতরে বৈঠক খানায় গিয়ে বসি। নিশ্চই সুনীল বাবু কিছু মনে করবেন না। দরজা খোলাই ছিল, আসতে করে ঠেলে ভেতরে ঢুকলাম। ড্রইং রুমে শুধু একটা টেবিল ল্যাম্প জ্বালানো। নানান সাজানোর জিনিসের মাঝে সোফা, আর কফি টেবিল। সুনীল বাবু বেশ বড়লোক বলতে হয়! দেওয়াল ঘড়িটা এই ঘরেই, নিঃশব্দতার মধ্যে টিক টিক করছে।

আমি চুপি চুপি সোফা তে বসলাম। একটু অস্বস্তি তো হচ্ছিল, যতই হোক অজানা অচেনা বাড়ি। তবে কতক্ষন আর বাইরে বসবো। এক দু মিনিট বসে ঘরের দামী দামী আসবাবপত্র দেখছি, তখনই বাড়ির ভেতর থেকে ওদের গলার স্বর ভেসে এলো। বেশ উল্লাস মেশানো কথাবার্তা চলছে। মাঝে মাঝে রেশমী মাসী আর রঞ্জনার চাপা হাসাহাসি শুনলাম। বেশ মচ্ছব হচ্ছে মনে হলো, তাতে আমার কৌতূহল টা এবার আরো বেড়ে গেলো।

“মা তো বলেছিল যে কি একটা আলোচনা আছে এদের সাথে। কোনো সন্ধ্যাউৎসব থাকবে বলে তো বলে নি! আর তাই হলে, আমায় বসিয়ে রাখলো কেনো?”

এই সব ভাবছি, ইতিমধ্যে ভেতরের একটা দরজা খোলার আওয়াজ হলো। ওদের গলার স্বর আরো স্পষ্ট হলো কিছু সেকেন্ড এর জন্য। বেশ উদ্দীপনা মেশানো গলা সবার। দরজা আবার বন্ধ হওয়ার আওয়াজ। কেউ একজন ভেতরের ঘর থেকে বেরিয়েছে। আমি চোখ তুলে তাকাতেই দেখলাম, অন্তর্মহল্ থেকে রেশমী মাসী বেরিয়ে এলো।

বাইরের ঘরে বেরিয়ে এসে, আমাকে দেখেই একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন প্রথমে। তারপর সম্বিত ফিরে পেয়েই বললেন, “ওমা, শুভ, তুই! আমি চমকে উঠেছিলাম!”

আমি বললাম, ” সরি মাসী, বাইরে বেশ ঠান্ডা আর মশা। তাই ভেতরে এলাম।”

মাসী বেশ মিষ্টি করে হেসে বললো, ” না না, কোনো ব্যাপার নয়। তোকে ওরকম বাইরে বসিয়ে রাখা টা আমাদেরও ঠিক হয়নি। ক্ষিদে পেয়েছে? কিছু খাবি?”

একটু জল চাইতে রেশমী মাসী এক গ্লাস hot chocolate নিয়ে এলো আমার জন্য, রান্না ঘর থেকে। বেশ তৃপ্তি করে চুমুক দিতে দিতে মাসী কে জিজ্ঞেস করলাম।

“মা কি ব্যস্ত? কতক্ষন লাগবে মার কাজ শেষ করতে?”
আমার কথা শুনে রেশমী মাসী বেশ জোরে হেসে উঠলো।
“ওই দেখ, তুই bore হচ্ছিস নিশ্চই!”
” না না তা নয়…” আমি একটু লজ্জিতকণ্ঠে বললাম।
“মা র যে একটু সময় লাগবে সোনা! তুমি bore হলে টিভি চালিয়ে দেবো?”
আমার মুখে চোখে দ্বন্দ্ব দেখে মাসী মিষ্টি করে বললো,
” আসলে কি বল তো শুভ, আমরা তো একটু বড়োদের কথা বার্তা বলছি ভেতরে। তোমার যাওয়াটা ঠিক হবে না।”
মাসীর কথা গুলো বলার মধ্যে একটা যেনো দুষ্টুমি লুকিয়ে আছে।
“তুমি বরং এখানেই থাকো। Tv দেখতে ইচ্ছে না করলে বরং ওই bookshelf থেকে বইগুলো নিয়ে দেখো। ঠিক আছে? লক্ষ্মী ছেলে!”

অগত্যা উপায় না দেখে, আমি ঘার নাড়লাম। মাসী আবার মুচকি হেসে, আমার গাল টিপে দিয়ে ভেতরে গেলো।
আমার কিন্তু কৌতূহল আরো বেড়ে গেলো।
“ভেতরে হচ্ছে টা কি?”

আমি হাতে একটা বই নিয়ে, চুপ করে বসে, ভেতরে থেকে ভেসে আসা স্বর গুলোয় আরি পাতার চেষ্টা করলাম।
শুনতে পেলাম…
রঞ্জনা, “কি গো রেশমী দি, কোথায় চলে গেলে?”
রেশমী, “এই, কমলা র ছেলে তো বাইরে বসে আছে! ওকে একটু ভুলিয়ে ভালিয়ে এলাম!”
সুনীল, “কি আর বলবো! কমলা যে ওকে সঙ্গে করে নিয়ে আসবে, কি করে জানবো”
রোহান, “ওকে কোথায় বসিয়ে এলে?”
রেশমী, “ড্রইং রুমে”
রঞ্জনা, “এই মরেছে! সব শুনতে পাবে তো”

চাপা হেসে বললো কথাটা। যেন ওরা আমায় লুকিয়ে কিছু দুষ্টুমি করছে, ঠিক যেমন বেয়াদব ছাত্ররা টিচারকে লুকিয়ে করে। আমার কৌতূহল এখন তুঙ্গে। এদিকে সবার গলার স্বর কেমন জড়িয়ে থাকা, একটু অসংযত।

সুনীল, “রেশমী, তোমার কিন্তু কমলা কে বলে দেওয়া উচিত ছিল আগে থেকেই, যে আজ আমরা সাজিয়ে বসছি।”
রেশমী, “কি করে জানবো! আমি তো ভেবেছিলাম কমলা ঠিক বুঝে যাবে, যে আজ নেশা করার জন্য ডাকা হচ্ছে”
রোহান, “না সে তো ঠিক ই করেছো। এরম বলে বেড়ানো যায় নাকি ‘এসো এসো, আজ আমরা heroin নেবো’ ”
রঞ্জনা, ” এই অন্য ব্যাপার তাও তো কমলা দি বোঝেনি। যে কিসের জন্যে ওকে ডাকা হচ্ছে।”
কথা টা শুনে খিল খিল করে হেসে উঠলো সবাই।

রেশমী, “যাই হোক, এখন ভালো মতন নেশা যখন চরেছেই, খেলা আবার শুরু হোক। শুভ এদিকে আসবে না।”
রঞ্জনা, ” কি গো কমলা দি, ভালো নেশা চড়েছে heroin এর?”
এইবার মা র গলা শোনা গেলো। জড়িয়ে জড়িয়ে বলল,
” উফ্, কি ভয়ানক নেশা। কেমন একটা করছে…”

সুনীল, ” প্রথম বার তো করবেই। আমাদের ক্রীড়া কলাপ আবার শুরু হলে দেখবে, আবার ভালো লাগছে।”
রেশমী, “তোমার কোনো ভয় নেই কমলা। একদম গা ছেড়ে দাও। তোমার ও মজা, আমাদের ও মজা!”
সবাই হেসে উঠলো, আর শুনলাম মা র অস্পষ্ট “হু…হা…”
রোহান, ” চল তাহলে কমলা দি, ওই পোজটায় এবার যাও।”
মা এর স্বর পেলাম না উত্তরে, তবে রেশমী মাসী আর রঞ্জনা র চাপা হাসির আওয়াজ ভেসে এল।

কথা গুলো শুনে আমার মনের মধ্যে একটা গরম স্রোত বয়ে গেলো। তাহলে মা রা heroin e এর নেশা করছে! সেই জন্যেই আমার প্রবেশ নিষেধ। মা র চালচলন এ, গত কয়েক মাসে পরিবর্তন ঘঠেছে বটে, তবে এতদূর জল গড়িয়েছে জানতাম না! মা র ঘরোয়া, সুন্দর সুশীল স্বভাব টা কেমন অপরিচিত লাগতে শুরু করলো মুহূর্তের মধ্যেই।
আর ভাবলাম “ওই ‘অন্য ব্যাপার’ টা কি, যেটা রঞ্জনা বলছিলো??” মনে মনে ভাবনা চিন্তার জট বাঁধতে শুরু করলো।

বাবা চলে যাওয়ার পর মা ছাত্রদের প্রাইভেট টিউসান দিতো। ওই থেকেই সংসার চলতো। একদিন হঠাৎ ঘাড়ে নেমে এলো বিপত্তি। ব্যাংক থেকে পাওনাদার এসে বললো, বাবা র বেশ খানিকটা বকেয়া টাকা শোধ দেওয়ার আছে। তারা মাসে মাসে কিস্তির মাধ্যমে নিতে রাজি, কিন্তু শোধ করতে হবে।

আমরা পড়লাম অথৈ জলে। বাবা যেহেতু বেপাত্তা, মা কেই ব্যবস্থা করতে হবে। আর ধার নেওয়া হয়েছিল আমাদের এই বাড়িটার মেরামত এর জন্যেই, যেখানে আমরা দুজন থাকি। তাই আমাদের ই দায়িত্ব। মা স্মরনাপন্ন হলো রেশমী মাসীর কাছে। একটা নতুন চাকরি চাই, যার বেতন বেশি। রেশমী মাসী ই তখন সুনীল বাবুর সাথে আলাপ করিয়ে দেন মা র। উনি বেশ কয়েকটা ওষুধ এর দোকান এর মালিক, তার মধ্যে একটা দোকান এই মার চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন। মার নতুন চাকরি হয়ে, আমাদের সমস্যার সমাধান হলো খানিকটা।

এদিকে সুনীল বাবু, রেশমী মাসী আর মার ওঠা বসা বেড়ে গেলো। মাঝে মাঝেই দেখলাম, ওরা রাত করে মচ্ছব করে। মা কোনোদিন ই বেশি party করে নি, তবে রেশমী মাসীর উশ্কানি তে মার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় একটা বদল দেখলাম। মাঝে মাঝেই মদ্যপান করে রাত করে ফেরা, পোশাকে একটা দৃষ্টাকর্ষক ব্যাপার। আমি কিছু মনে করতাম না যদিও, নিজের বন্ধুবান্ধব নিয়েই মগ্ন থাকতাম। আর মা আমার প্রতি কোনো অবহেলা করতো না, আর বাড়ি তে কোনো রকম এর উৎসৃঙ্খলতার আঁচ লাগতে দিতো না। সব সময় বাড়ি ফিরে জিজ্ঞেস করতো ” শুভ, ঠিক আছিস তো? খেয়েছিস তো?” ইত্যাদি। সেই মা, এখন Heroin এর নেশায় চুর, এটা ভাবতে কেমন শিহরন খেলে যায় মনে। সত্যি বলতে, মা যেনো আজকাল একটা split personality, একটা দিকে মা, আর অন্য দিকে একজন আকর্ষণীয় নারীর প্রতিচ্ছবি! মা র এই পরিবর্তন দেখে আমার কিশোর মনে কোথাও একটা কামাত্মক ভাবনার অঙ্কুর গজিয়ে উঠেছে, সেটা ভেবে বেশ লজ্জাও করে।

বাকি টা পরের পর্বে….