জন্মদিনের উপহার পর্ব – ১১

This story is part of the জন্মদিনের উপহার series

    আগের পর্বে আপনারা দেখলেন অনেক বোঝানোর পরে অভিকে ঘরে পাঠানো গেল। আমি বনানীকে রিকোয়েস্ট করলাম যাতে ও যেন একবার অভিকে গিয়ে শান্ত করে আসে। অনেক বোঝানোর পরে ও রাজি হল কিন্ত্ত এক শর্তে আমাকে কিনা ওর সাথে ওর বেডরুমে যেতে হবে। যাইহোক আমরা গেলাম আমার সামনেই ও অভির সাথে যৌনতায় লিপ্ত হল। কিন্ত্ত অভি আগের মতোই ওকে স্যাটিস্ফাই করতে পারলো না। এবার হতোদ্যম বনানী ফিরে এসে বলতে শুরু করল ওর দুখভরী কাহানী। এবার আগে…

    পর্ব-১১

    -“ও কি বলল শুনি?”
    অভি-“কে বলল তুমি মা ডাক শুনতে পাবে না? চাইলেই পাবে।”
    -“কিভাবে অভি, কিভাবে? আমাদের কাছে সব দরজাই তো বন্ধ!!!”
    অভি-“কে বলেছে বন্ধ?”
    -“অ্যাই অভি ঠিক কি চাইছো বলোতো তুমি?”
    অভি-“আমি তোমার ভালো রাখতে চাইছি বনানী!!!”
    -“সে তো বুঝলাম আমার ভালো চাইছো কিন্তু যেখানে তুমি নিজে খারাপ থাকছো সেখানে আমার একা ভালো থেকে লাভটা কি?”
    অভি-“কিন্তু আমি যে তোমায় ভালো দেখতে চাই বনানী, সেক্ষেত্রে তুমি যদি বাচ্চা নেওয়ার জন্য নিজের পছন্দ মতো অন্য কারোর সাথে ঘর বেঁধে সুখী হতে চাও তাতেই আমি খুশি থাকবো বিশ্বাস করো বনানী!!!, বলে না আমার হাতটা ধরে নিজের কপালে ঠেকিয়ে আবার ডুকরে কেঁদে উঠল অভি। জানো প্রাঞ্জল?”
    -“সো স্যাড তারপর?” আমি জিজ্ঞেস করলাম।
    -“বললাম অভিইইই… তুমি জানো তুমি কি বলছো?” ও বলল আমি যা বলছি ভেবেচিন্তেই বলছি বনানী। লিভ মি বনানী, প্লিজ় লিভ মি। বলে আবার কাঁদতে লাগল ও।”
    -“কথায় বলে মর্দ কো দর্দ নেহি হোতা কিন্তু ভাবো তো বনানী একটা ছেলে ভেতরে ভেতরে কতটা ভেঙে পড়লে… তারপর জবাবে তুমি কি বললে?” বললাম আমি।
    -“বললাম দেখো অভি যদি চলেই যাওয়ার হতো তাহলে তো অনেক দিন আগেই তোমাকে আর তোমার ঘর ছাড়তে পারতাম। আজ নয়!!! আমি যে তোমাকে বড্ড ভালোবাসি অভি!!! প্লিজ় এমন কথা আর বোলো না অভি আমি না নিতে পারবো না।”
    -“বেশ তারপর কি হল?”
    -“তারপর আর কি?” একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল বনানী।
    -“বলো কি করলো ও?”
    -“মেন্টালি আমার থেকে দূরত্ব রাখা শুরু করল ও। কথায় কথায় রাগ করে না আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করা শুরু করল ও…কিন্তু সামলাতে পারলো না গো।”
    -“কেন কি হয়েছিল ওর?”
    -“আমাকে টাইট দেবে বলে সকালে ব্রেকফাস্ট না করে বেরিয়ে যেতো। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম দুপুর গড়াতে না গড়াতেই বারে বসে যেতেন বাবু। উল্টো পাল্টা খেয়ে ও নিজের এমন অবস্থা করে ফেলে এতো অসুস্থ হয়ে পড়েছিল যে ওকে না হাসপাতালে। অ্যাডমিট করাতে হয়। আমার মানসিক অবস্থাটা তখন একবার চিন্তা কর প্রাঞ্জল।”
    -“এতকিছু হয়ে গেল আর আমাকে একটা…”
    -“আসলে প্রাঞ্জল তখন না আমার মানুষটাকে সুস্থ করাটা ছাড়া আর কিন্তু কিছু মাথাতেই আসেনি জানো। আর তাছাড়া তোমার সাথে তো যোগাযোগটাই অনেক দিন ছিল না। আমরা ফোন না করলে তুমি কি নিজে থেকে যোগাযোগ করতে?”
    -“দেখো বনানী আমি তোমাদের বিয়ের পরে নিজেকে সচেতনভাবেই কেন দূরে রেখেছিলাম, কারণটা নিশ্চয় তোমার অজানা নয়? যাইহোক তারপর বলো, তারপর কি হল শুনি?”
    -“বাড়ি আসার পরে কি আবার হবে? তারপর একদিন বহুবার খোঁচাতে আবার বলল তুমি না আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও বনানী। তুমিও ফ্রি আর আমিও…”
    -“আচ্ছা তারপর কি বললে তুমি?” বনানীকে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
    -“আমি কি তোমার থেকে এই কথাটা শুনব বলে একসাথে এক ছাদের তলায় থেকে এক বিছানা শেয়ার করছি? কষ্ট কি আমার হচ্ছে না? আমারও হচ্ছে বুঝলে আমারও হচ্ছে অভি। তাহলে এই ডিভোর্স, তুমিও ফ্রি আর আমিও… এর মানেটা কি অভি?”
    অভি-“এর মানেটা না বোঝার মতো মেয়ে তো তুমি নও বনানী। আমি স্পষ্ট ভাবেই বলছি তুমি অন্য কারোর সাথে ঘর বাঁধো। বাচ্চা নাও ব্যস বাত খতম!!!”
    -“অভি তোমার কি মাথাটাও আবার খারাপ হয়ে গেল নাকি? কি মনে হয় আমার যদি তোমাকে ছাড়ারই হতো তাহলে কি এত কাঠখড় পুড়িয়ে তোমার পাশে থাকতাম নাকি রইল ঝোলা চলল ভোলার মতো তুমি জাহান্নামে যাও তোমার জন্য আমি ভুগব কেন বলে চিরতরে চলে কি যেতাম না তোমায় ছেড়ে তোমার সংসারকে ছেড়ে?…বলো তুমি আমায়…”
    -“ও কি বলল শুনি?”
    -“প্রথমে না কথাটা শুনে কিছুদিন আবার চুপচাপ হয়ে গেল। হ্যাঁ এবারে অনিয়মটা আর করতে দিইনি। চোখে চোখে রেখে খাবার-দাবার থেকে ওষুধপত্র সব, সব দিয়ে গেছি এক্কেবারে ঘড়ি ধরে। তবে ফেরত আসার পরে জানো এবারেও না বাবু বেশ চুপচাপ। তারপর আবার আমার খোঁচানি খেয়ে এবার মুখ খুললেন বাবু…”
    -“কি বলল ও?” বনানীকে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
    -“বেশ তুমি যখন একই কথা ইনিয়েবিনিয়ে বারে বারে জিজ্ঞেস করছো তাহলে বলেই দিই…কি বলো?” বেশ বিরক্ত হয়ে বলল অভি।
    -“কি বলবে শুনি? তুমি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে আমায় ছেড়ে একা থাকবে কি তাই তো? তোমায় একা রেখে ছেড়ে চলে যাওয়া এককথায় আমার পক্ষে অসম্ভব!!! এবার অন্য কিছু বলবে তো বলো।” ঝাঁঝিয়ে জবাব দিলাম আমি
    -“এটা যে তোমার পক্ষে অসম্ভব সেটা তো তুমি অনেকবারই বলেছো। তাই ভাবছি অন্য কিছু বললেও যে তুমি নাকচ করে দেবে না সেই গ্যারান্টি কে নেবে?” এবার অভি জল মাপছে।
    বনানী-“বেশ তো!!! বলেই দেখো…”
    অভি-“বেশ শোনো তাহলে অনেক ভাবলাম, বুঝলে, ভেবে দেখলাম সব কটা দরজাই একে একে আমাদের সামনে বন্ধ হয়ে আসছে তখন একটা রে অফ হোপ আছে যেটা আমি এখনও দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তুমি!!!…”
    বনানী-“কি দেখতে পাচ্ছো শুনি একটু…”
    অভি- অনেক খুঁজে দেখলাম আছে এখনও একটা দরজা অল্প হলেও খোলা আছে। বাকিটা তোমার ওপর নির্ভর করছে তুমি সেটাকে হাট করে খুলে দেবে নাকি চিরতরে বন্ধ করে দেবে?”
    বনানী-“ঠিক বুঝলাম না তোমার কথা?”
    অভি-“জানি আমাদের দু’জনের পক্ষেই ব্যাপারটা মেনে নেওয়াটা কঠিন, খুবই কঠিন।”
    বনানী- “কি বলছো অভি হেঁয়ালি ছেড়ে একটু ঝেড়ে কাশবে কি?”
    অভি-“হুম জানি এটা ঠিক নয় মেনে নেওয়াটাও কঠিন তবু আমি আমার বুকে পাথর চাপিয়েই বলি ইউ হ্যাভ টু ডু ইন্টারকোর্স অন আ রেগুলার বেসিস উইথ সাম ওয়ান, আদার দ্যান মি।”
    -“ কি বললে তুমি?” আমি জিজ্ঞেস করলাম।
    -“কথাটা শুনে আমি তো শকড্‌!!! কিছুক্ষণের জন্য না বোবা হয়ে গিয়েছিলাম। তারপর একটু ধাতস্থ হয়ে বললাম অভিইইইই… তুমি জানো তুমি কি বলছ? তোমার বউকে পরপুরুষ ভোগ করবে অভি, একটা পরপুরুষ। সেই পরপুরুষের বীর্যে গাভীন হবে তোমার আদরের বিয়ে করা বউ।” অভিকে যেভাবে বলেছিল ঠিক সেভাবেই আমাকে মিমিক্রি করে দেখালো বনানী।
    অভি-“হ্যাঁ জানি বনানী, আমি ঠিক কি বলছি… এখন তুমি ডিসাইড করো তুমি কি করবে? হ্যাঁ বা না। দুটোতেই আমি ঠিক থাকবো আর নো কান্না-কাটি, নো মন খারাপ, আর আমায় ছেড়ে চলে যেতে নাহ্ তাও আর বলব না, আই প্রমিস!!!”
    বনানী-“দেখ অভি এভাবে তো হয় না। এটা তো আমার লাইফের ডিসিশন তাই ভাবতে একটু সময় লাগবে। একটু ভেবে বলি।”
    অভি-“হ্যাঁ অবশ্যই, আমি বললেই তুমি শুনবে কেন? আফটার অল ইটস্ ইয়োর লাইফ!!! নাও তোমার যতখুশী সময় চাই নাও। যতক্ষণ না তুমি তোমার ডিসিশন জানাচ্ছো আমি এবিষয় আর তোমায় একটা কথাও বলব না। আগেও বলেছি আর এখনও বলছি যাইহোক না কেন তোমার ডিসিশন ইয়েস অর নো আমি চুপচাপ মেনে নেবো। চু-প-চা-প!!! ওকে ডার্লিং…” খুব শান্তভাবে অথচ বেশ গম্ভীর হয়ে আমার মুখোমুখি বসে কথাগুলো বলে গেল অভি।
    -“খুব খারাপ লাগছিল তাই না গো?” ওর কথাগুলো শুনে বললাম আমি।
    -“খারাপ লাগার কি কথা নয় প্রাঞ্জল? হুট করে এরকম শকিং একটা কথা শুনলে কারই বা মাথার ঠিক থাকে বলো? হুম খারাপ তো লাগছিলই উপরন্ত্ত, বেশ না অসহায় লাগছিল নিজেকে জানো প্রাঞ্জল!!! হাজার হোক একটা রক্ষণশীল ঘরের মেয়ে আমি। তাই এসব না কখনও মাথাতেই আসেনি জানো? কিন্ত্ত সেই আমার ভাগ্যেই… জানো ওই সময়টায় না এক একটা দিন যেন আমার কাছে এক একটা বছরের মতো মনে হতো। খুব…খুব হতাশ হয়ে পড়ছিলাম। কিন্তু ওর দিকে না তাকাতে পারছিলাম না। আমারও না খুব কষ্ট হচ্ছিল, বেশ কষ্ট পাচ্ছিলাম আমি। কেন জানিনা নিজেকে অপরাধী অপরাধী মনে হচ্ছিল। এই গুমোট জীবনটা আর সহ্য হচ্ছিল না।”
    -“তারপর?”
    -“তারপর থেকে পাক্কা দু-মাস না আমার শুধু নিজেকে সামলাতে লেগেছিল। এই দুটো মাস আমাদের মধ্যে যেন সম্পর্কটা না কেমন যেন শীতল হয়ে গিয়েছিল। দুজনেই না কেমন যেন কল দেওয়া পুতুলের মতো আচরণ করতাম জানো প্রাঞ্জল? এই ক’টা দিন একে অন্যের দৈনন্দিন নৈতিক দায়-দায়িত্ব পালন করেছি বটে কিন্ত্ত উভয় পক্ষে খুব একটা বেশী বাক্যালাপ নেই। দুজনেই না খুব সিরিয়াস। সেই দু’মাস বাদে একদিন রাত্তিরে ডিনার টেবিলে আমি আর অভি বসে অন্য দিনের মতো মুখ গুঁজে খাচ্ছিলাম। তখনই আর সহ্য করতে না পেরে আমিই মুখ খুললাম…”
    -“কি বললে তুমি অভিকে?” জিজ্ঞেস করলাম আমি।
    এখন এ পর্যন্তই আবার দেখা হচ্ছে আগামী পর্বে। কেমন লাগছে বন্ধুরা জানাতে ভুলবেন না কিন্ত্ত? আমার মেল আইডিটা জানা আছে তো? আমার কোনও পাঠক যদি যৌন অতৃপ্তির শিকার হয়ে একাকিত্বে ভোগেন তারা চাইলে জানান আমাকে লাইভ অ্যান্ড এক্সক্লুসিভ অনলি অন [email protected] এ।