প্রজাপতি -১

নারীকে বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতে পারে না, তার ভেতর কতটা জীবন বয়ে চলে। নারী কাউকে ছুঁতে চায়—কিন্তু ছোঁয়াটার আগে সে বুঝে নেয় সেই মানুষটার ভেতরটা। সে শুধু শরীর খোঁজে না—সে এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার স্পর্শে থাকে শ্রদ্ধা, যার চোখে থাকে নিরাপত্তা। সে জানে কার পাশে ঘুমালে শান্তি নামে, আর কার পাশে থাকলে ভালোবাসা শুকিয়ে যায়। তরুণ বয়সের কামনা হঠাৎ জ্বলে ওঠে, হঠাৎ নিভেও যায়– এরকম একটা গল্প তোমাদের কাছে নিয়ে এলাম, কেমন লাগলো সেটা জানানোর দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের।

এদিকে সিগন্যাল হয়ে গেছে , ট্রেনের দরজা খুলে উঠতেই একজন আমার থেকে অল্প বয়সী মেয়ে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো ঠিক wash বেসিনের নিচে,  এবং নিজেও পড়লো আমার উপরে, তার স্তন আমার বুকের সাথে স্বজোরে ধাক্কা খেয়ে সেটে গেছে এবং তার মুখ আমার মুখের থেকে এক ইঞ্চি দূরে,  কয়েক সেকেন্ড পরে বুঝলাম মেয়েটি তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে এই বিপত্তি টা ঘটিয়েছে।

মেয়েটি –  (আমার মুখের কাছ থেকে উঠে যাওয়ার সময় ) —   অসভ্য কোথাকার, দেখে উঠতে পারেন না –
— আরে আপনি তো আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলেন – আপনি দেখে বেরোতে পারেন না।
——- এদিকে তক্ষুনি ট্রেন নড়ে উঠলো —-
মেয়েটি  shit  shit  – ( এবার  তাড়াহুড়ো করে ট্রেন থেকে নেমে গেলেন ) আর নেমেই —– ট্রেনের সাথে হাঁটতে হাঁটতে ——–
অসভ্য, idiot , nonsense. ছোটোলোক etc. etc. ……………………….. যা মুখে এলো বলে গেলো।
এবার আর আমিও থেমে থাকলাম না — আপনি idiot, nonsenses –  অন্ধ নাকি চোখে দেখতে পান না, ট্রেনে টাকা দিয়েছেন বলে কি শেষ পর্যন্ত সিটে বসে থাকতে হবে – ঠিক হয়েছে।

এরম দুই তরফ থেকে  দুজনের মুখ থেকে চললো ফুল চন্দন এর বর্ষণ,  অবশেষে এক সময় ট্রেন স্টেশনের প্লাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।  আমি দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলাম, মুখ বার করে দেখছি  মেয়েটি ফিরে গিয়ে তার ব্যাগ মাটি থেকে তুলে আবার আমার দিকে তাকালো,  আস্তে আস্তে মেয়েটি দূরে আরো দূরে ছোট হতে হতে এক সময় আর দেখতে পেলাম না। একটা বড়ো দীর্ঘশ্বাস ফেলে  আমিও ফিরলাম ভেতরে যাওয়ার জন্য, আমার ব্যাগ টা ট্রেনের ফ্লোরে পড়ে আছে, তুলতে গিয়ে দেখি বেসিনের নিচে একটা মোবাইল পড়ে আছে, নিজের পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম নাহঃ আমার ফোন তো আছে,  তাহলে কি ওই মেয়েটার ? —– যাহঃ shit,— বেচারী মোবাইল টা ফেলে গেলো।    মোবাইল, আর ব্যাগ টা  তুলে নিজের সিটে এলাম। ২AC ,  window Lower -৬৫, আমার সামনের সিটে  দুজন couple   যাত্রা করছেন।   t-shirt  টা একদম নোংরা হয়ে গেছে, খুব রাগ হলো মেয়েটার উপর এই  t-shirt টা  আমার এক দিদি দিয়েছিলো আমার জন্মদিনে, ব্যাগ পত্র রেখে ড্রেস টা চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে এলাম, ব্যাগ থেকে জলের বোতল টা বার করে খেতে খেতে জানালার দিকে চোখ রাখলাম।

Hi  আমি “শুভ্রনীল”  যাচ্ছি Trivandrum – Kerala, ( Railway Job Join করতে ) –  Train Manager  এর পোস্ট।  কিন্তু সকাল সকাল যাত্রার শুরুতেই একটা খারাপ ঘটনা মনটাকেই খারাপ করে দিলো।  বোতলটা রাখতে গিয়ে দেখি ওই ফোনটা, i phone.  unlock করতেই দেখি খুলে গেলো ফোনটা, একটু হাসলাম,  iPhone নিয়েও security lock নেই,  মোবাইল টা দেখলাম Operate করতে  অসুবিধা হচ্ছে কোথায় কি আছে, কারন আমার iPhone নেই তাও দেখলাম, যাই হোক এরই মধ্যে সকালের ব্রেকফাস্ট করে বালিশ নিয়ে  জাস্ট পা দুটো তুলে একটু শুয়েছি, খুব ঘুম পাচ্ছে,  হঠাৎ ঘুম থেকে ধড়ফড় করে উঠে দেখি ওই ফোন টায় রিং হচ্ছে।  —- রিসিভ করতেই —

ওপাশ থেকে   – (চেঁচিয়ে)—   চোর কোথাকার, আমার মোবাইল টা চুরি করে নিয়েছে, এটাই তোমার Intention ছিল আমি বুঝতে পেরেছি, এক্ষুনি আমার মোবাইল ফেরৎ দিন নাহলে পুলিশে যাবো।

— আবার এই রকম কথা শুনে মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো — কিন্তু মাথা গরম করলাম না — আসতে করে বললাম –  আচ্ছা ফেরৎ দিয়ে দিচ্ছি।  পরের যে স্টেশনে ট্রেন থামবে আমার বগির সামনে থাকা বেঞ্চে মোবাইল টা রেখে দিচ্ছি এসে নিয়ে যান।  আর নয় তো টিটি কে দিয়ে দিচ্ছি।  উনি যদি সৎ থাকেন তাহলে সমস্ত ফর্মালিটিস এর পর  দু- এক মাসের মধ্যে পেয়ে যাবেন কেমন।
– না মানে আমার মোবাইল ?
—  আর একটা কথা আমি চোর নোই, আর দ্বিতীয়ত আমি আপনাকে ধাক্কা মারি নি, মেরেছেন আপনি।
–       আমার মোবাইল টার খুব দরকার ছিল, আজ একটা Important OTP আসার আছে ।
—-  ok  ঠিক আছে আমি আপনাকে OTP বলে দেব, আপনার মোবাইলের তো password lock নেই so no problem.
–      oh  shit , আপনি আমার মোবাইল ঘেটেছেন, একদম ছোঁবেন না আমার মোবাইল। ওতে আমার অনেক পার্সোনাল ডেটা আছে।
—– এটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি ফোন টা কেটে দিলাম। — কয়েক সেকেন্ড পরে আবার ফোন – আমি ধরিনি।  পাঁচ টা  রিং হবার পরে ধরলাম।
– আপনি ফোনটা ধরছেন না কেন ?
—– আসলে এই ফোনের মালিক আমাকে তার ফোন ধরতে বারণ করেছে তাই ধরছিলাম  না ।
– আচ্ছা আপনি কোথায় যাবেন  ?    (and sorry for everything.)
—-     “যমের কাছে যাচ্ছি”      আপনি যাবেন ?    আর  sorry টা ৫০ বার বলুন, আপনি আপনার সুন্দর মুখ দিয়ে আমাকে প্রায় ১০বার ফুল চন্দন ছড়িয়েছেন  so  ১০x ৫= ৫০
–    (একটু চেঁচিয়ে ) মানে ????  কি বলতে চান আপনি।বলবো না  sorry ।
– রাগে গজগজ করতে করতে ফোনটা রেখে দিলো, আমিও একটু মুচকি হেসে বাইরের দিকে তাকালাম গাড়ি তখন ভুবনেশ্বর ঢুকছে।

দুপুরের খাবার খেয়ে একটু ঘুমাচ্ছি, আবার ফোন —
—– (ঘুম চোখে) —–  হমমমমম —–   “যমের কাছে এখনো পৌঁছায় নি ” পৌঁছে গেলে জানাবো কেমন।
– হ্যালো আমি “অনন্যা” র “মা” বলছি – হ্যালো — শুনতে পাচ্ছো
—– ঝটফট উঠে —    হ্যা ম্যাম বলুন – sorry sorry   ঘুমাচ্ছিলাম, বুঝতে পারিনি  –  বলুন বলুন !
– আমি ওর কাছে সমস্ত ঘটনা শুনলাম, আমি ওকে খুব বকেছি, বুঝিয়েছি, আমি ওর হয়ে তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি বাবা ।
—- না না ম্যাম, ছিঃ ছিঃ আপনি কেন please . এরম বলবেন না Please .
– ওর কোথায় কিছু মনে করো না, ও ওই রকম ই, কিন্তু মনটা খুব ভালো।
—- আমি আর কথা বাড়ালাম না, আচ্ছা আমি কিভাবে মোবাইল টা দেবো আমাকে বলে দিন।
— তুমি কবে ফিরবে ?     আর হ্যা — তোমার নাম টাই তো জানা হয়নি ?
—– আমি        “শুভ্রনীল”           Service  join করতে যাচ্ছি – Kerala.    ফিরতে এক সপ্তাহ লাগবে।
– তুতুন এর একটা ইন্টারভিউ এর কিছু document’s আছে ওই ফোনে যদি একটু দিয়ে দিতে আমার এই WhatsApp এ
—- হুম ম্যাম sure.
– আমি ম্যাম নোই, আমাকে কাকিমা বা আন্টি বলতে পারো।
—- একটা কথা বলবো আন্টি ?
– বলো !
—- আপনি আর আপনার মেয়ে যেন দুই মেরু —
– আন্টিও –  হাঃ হাঃ,–   না না ও আমার মতোই, কিন্তু রেগে গেলে আমরাও বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাই। আচ্ছা নাও ওর সাথে কথা বলো কি কি লাগবে ও তোমাকে বলে দেবে।
—— হম দিন !
–   হ্যালো
—– বলুন ম্যাডাম কি করতে হবে আমায় ?
– খুব আস্তে করে — sorry
—– থাক ঠিকআছে, অনেক হয়েছে এবার বলুন। অনেক কথা হলো অনেক file , document  সেন্ড করে দিলাম, প্রায় একঘন্টা কথা বলার পর রেখে দিলাম।  এবার মনটা একটু ঠিকঠাক হলো – এতক্ষন কথা বলার তিনটে নির্যাস বের হলো –         নাম “অনন্যা” II  ডাকনাম “তুতুন” II  আর  নার্সের পরীক্ষা দিচ্ছে।

এদিকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত, ট্রেন ছুতে চলেছে ঝড়ের গতিতে, আমি একটু কিছু খেয়ে  বার্থে শুয়ে গেলাম, হঠাৎ মনে পড়লো সকালের সেই ঘটনা টা,  ভেসে উঠলো মেয়েটার মুখটা, দূরে যেতে যেতে হারিয়ে যাওয়া সেই মুহূর্ত টা।  আচ্ছা মোবাইলে তো তার ফটো তো থাকবে, মোবাইলটা বার করে খুঁজে যাচ্ছি কিন্তু কিছুতেই পাচ্ছি না, অনেক খুঁজে পেলাম – খুলতেই দেখি তার প্রচুর  photo . খুব সুন্দর দেখতে অনন্যা,  মুখটা একদম লক্ষী প্রতিমার মতো , ফর্সা, মাঝারি লম্বা, শরীরের গঠন আকর্ষণীয়, ভরাট বুক, সব মিলিয়ে পারফেক্ট ফিগার,  প্রথম থেকে photo  দেখতে থাকলাম – নানান ধরণের photo  ফ্রেইন্ড দের  সাথে ঘুরতে যাওয়া, ফ্যামিলি , বাবা মা – আরো কত কি, back  করতে যাবো তো দেখি একটা ফাইল যেটায় লেখা “personal “- ওপেন করতেই আমার চোখ ছানাবড়া, ফাইল টাই শুধু blue film এ ভর্তি , নানান ধরণের video, সাউন্ড কম করে দেখতে শুরু করলাম, আগেও আমি blue film দেখেছি, কিন্তু একটা মেয়ের ফোনে থাকা এই ভিডিও গুলো দেখার উত্তেজনাই  আলাদা, আমার কামদণ্ড ফুলতে শুরু করলো, আমি সেটাকে একবার ঠিক ঠাক করে নিলাম। বেশির ভাগ ভিডিও  Anal porn টাইপ এর, আমার উত্তেজনা ধীরে ধীরে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে,  এই সব দেখতে দেখতে অনেক রাত হয়ে গেছে, কুটুং করে একটা ম্যাসেজ এলো, খুলে দেখি মায়ের মোবাইল থেকে ম্যাসেজ —             (খুলে দেখি )

– আমার মোবাইল ঘাঁটছেন তাই না ?

—–  ফট করে এরম একটা message আসবে আশা করি নি ( আমি একটু থেমে গিয়ে উত্তর দিলাম) – হ্যা
– please আমার ফটো দেখবেন না please .
—– সত্যি বলতে কি – প্রথমে ভেবেছিলাম দেখবো না, কিন্তু পারিনি – sorry,   আপনি খুব সুন্দর দেখতে, আচ্ছা আপনি এখনো ঘুমান নি।
– না, ঘুম আসছে না কিছুতেই, Tension হচ্ছে ।
—– মোবাইলের চিন্তায়?  না বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা হয় নি বলে।
– আমার কোনো বয়ফ্রেইন্ড নেই।
—– মিথ্যা কথা,         এতো সুন্দর একটা মেয়ের বয়ফ্রেইন্ড নেই, হতেই পারেনা, আমি বিশ্বাস করি না।
— কিন্তু এটাই সত্যি, আপনার আছে?
—– হুম আছে অনেক গুলো।
– অনেক গুলো ?
—– হুম
– ছেলেরা এইরকম ই হয়, একটাতে তাদের পোষায় না।   আচ্ছা এতো জনকে ম্যানেজ করেন কি করে ?
—- ম্যানেজ করার কি আছে ওরা সবাই একসাথে থাকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে,  ওদের সাথে অনেক দিন পার হলো এবার একটা নতুন gf পেতে চলেছি যেটা আমার permanent হতে চলেছে।
–  মানে বুঝলাম না
—– এতো বুঝতে নেই Madam,  রাতে ঘুম আসবে না ।
– sorry
—— no no its ok, যাই হোক আপনি কিন্তু খুব সুন্দর দেখতে।
– thank you. but যে ছেলেটা আমার মোবাইলটা  নিজের সম্পত্তি ভেবে দেখে চলেছে তাকে আমি দেখতে পারি কি ?
—– কেন madam বিয়ে করবেন নাকি ?    হাঃ হাঃ হাঃ,    আর আপনি তো আমাকে দেখেছেন –  এক ইঞ্চি দূর থেকে, আর আমি দেখতে মোটেও ভালো না।
– sorry চাইবো না দেখতে sorry .
——- আচ্ছা আপনি কথায় কথায় এতো sorry বলেন, আর যখন আমি sorry বলতে বললাম তখন বললেন না। মেয়েরা এরম ই হয়।
– আপনার gf রা বুঝি  sorry বলে না  ?
——- হাঃ হাঃ –  না না ওরা কথা বলতে পারে না, তবে একজন আছেন সে শুধু চেঁচায় আমার উপর।
– আপনি খুব গোলমেলে আর রহস্যময় আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

—– হাঃ হাঃ আরে আমার প্রথম gf আমার “মা” যে খুব চেঁচায়, আর বাকি গুলো হলো আমার বই খাতা মোবাইল ইত্যাদি ইত্যাদি।
– ও আচ্ছা এবার বুঝলাম।  কিন্তু এটা কি বিশ্বাস যোগ্য – ???
——  ফেক নয় এটা বলতে পারি, বিশ্বাস করা না করা সেটা আপনার ব্যাপার।   আমার বাবা নেই  অনেক কষ্ট করে “মা” আমাকে পড়াশোনা করিয়েছে, এতো দিন আমার ধ্যান জ্ঞান সব ওই বই গুলোই ছিল, তবে এবার আমি আপাতত বাঁধন মুক্ত।
—— আর আমার permanent Gf টাকে পেতেই এই ট্রেন জার্নি করে কেরালা যাচ্ছি , পেয়ে গেলেই বলবো সে কেমন !      (হাআআ) (হাআআআ)  (হাই তুলে)   আমার খুব জোর ঘুম পাচ্ছে please আমাকে একটু ৭টার সময় উঠিয়ে দেবেন, একটা খুব জরুরি কাজ আছে। এখন ঘুমালে আর ৭ টায় উঠতে পারবো না।
– yah sure  —              ( আমি ফোন রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম )

ঠিক সকাল ৭ টায় রিং এ ঘুম ভাঙলো – ঘুম চোখেই –  হমমমমমমম কেএএএএএ ?
– আমি তুতুন —  উঠুন ৭ টা  বাজে – কি কাজ আছে বলেছিলেন, তাই।
—— (হমমমমমমম ) (উওফফফ) উঠতে ইচ্ছা করছে না।
– সারারাত অন্যের ফোন দেখলে এরম ই  হয় – হাঃ হাঃ হাঃ –   রাখছি bye.
—— (মূহর্তের মধ্যে আমার মনটা খুব ভালো হয়ে গেলো)   —  এক মিনিট- এক মিনিট – হ্যালো।
– কি হলো ?
——- কিছুনা — Bye !
– বলুন কি বলবেন ?
——— না কিছু না bye       (ফোন রেখে আবার ঘুমিয়ে দিলাম,  আমার কোনো কাজ ছিল না )

উঠলাম অনেক বেলায়, দুপুরের খাবার দিয়ে গেছে, ওই মোবাইলে দেখি অনেক গুলো ম্যাসেজ এসেছে, কয়েকটা ওর মায়ের নং থেকেও
রিপ্লাই দিলাম ——- hi
–  ঘুম ভাঙলো আপনার
—– হুম লাঞ্চ করছি,
– কি Veg না Nonveg ?
——-     শুকনো রুটি আর সদ্য গঙ্গায় ডুব দেওয়া চিকেন, সঙ্গে কয়েকটা চাল সেদ্ধ।     ভগবান-  চিকেন যেন তার আত্মার শান্তি পায় ।
– হাঃ হাঃ  আপনি খুব মজার মজার কথা বলতে পারেন  !
——- মজার কথা নয় বলুন বকবক করতে।

(এই ভাবেই কথা শুরু হলো আমাদের, কখনো ফোনে আবার কখনো হোয়াটস আপ এ, ভিডিও কলে , আমিও আমার নানান ফটো দিলাম, একে অপরকে যে আমরা আসতে আসতে গুরুত্ব দিচ্ছি,   না বলেও যেন অনেক কিছু বলা হয়ে গেলো, দুজন দুজনের প্রতি অধিকার জন্মাতে শুরু করলো।

নানান গল্প আড্ডা দিতে দিতে, একে অপরকে খুঁজে পেতে পেতে বুঝতেই পারিনি সারাটা দিন কখন শেষ হয়ে গেলো, কখন আমার রাস্তা শেষ হয়ে  অবশেষে প্লাটফর্ম এ গাড়ি ঢুকছে।

আমি ট্রেন থেকে নেমে  সোজা চলে গেলাম আমাদের  office এ, সারাদিন অনেক কাজ ছিলো সময় পাইনি তুতুন কে ফোন করার, সেও সারাদিন ফোন করেনি, সন্ধ্যায় কোয়ার্টার এ ফিরে ফ্রেশ হয়ে ফোন করি সবাইকে, সারাদিনের গল্প করি, আমি পাঁচ দিন পরে ফিরবো।   তুতুন এর  সাথে, আন্টির সাথেও কথা হয়, জানতে পারি তুতুন ম্যাডাম আজ নাকি পুজো দিয়েছেন।  ( যদিও আমাকে বলতে বারণ করেছিল, কিন্তু আন্টি আমাকে বলে দিয়েছেন ) সবার সাথে কথা বলে সেই দিন খুব খুশিতে কাটলো।

পরের দিন অনেক সকালে তুতুন কে ফোন করে আমি কাজে চলে যাই, সারাদিন কাজ –  (আমাদের মোবাইল জমা রাখতে হয় ), রাতে আবার কোয়ার্টারে এসে খেয়ে ঘুম, আবার কাজ এই ভাবে পেরিয়ে গেলো পাঁচ দিন।

আমি আবার ট্রেনে, বাড়ি ফিরছি আর যত বাড়ির দিকে আসছি ততই যেন মনটা চঞ্চল হয়ে উঠছে, কতক্ষনে আমার স্টেশন  আসবে।

তুতুন বলেছে আমাকে নিতে আসবে, আর ঠিক সেই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে থাকবে যেখান থেকে মেয়েটা দূরে যেতে যেতে এক সময় আবছা হয়ে গেছিলো।

সময় যেন আর কাটছে না, অনেক ছটফট করার পরে এলো সেই মুহূর্ত, আমি সবার আগে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছি মুখ বার করে।
পেছনের অনেকে বলছে ওই ভাবে মুখ না বার করতে, কিন্তু তারা কি আর আমার মনের ভেতর টা দেখতে পাচ্ছে।  যাই হোক অবশেষে অনেক দূর থেকেই দেখলাম একজন দাঁড়িয়ে আছে প্লাটফর্মের একদম শেষ প্রান্তে, ঠিক সেখানে যেখানে আমাদের শেষ দেখা হয়েছিল,  দুজনের দুটো চোখ এই সময় যেন আর কিছু দেখতে চায়না, সেই দিনের ওই ড্রেস টাই পরে এসেছে,  আমি  মুখে একরাশ হাসি নিয়ে তুতুনেকে অতিক্রম করে একটু এগিয়ে গিয়ে নামলাম, দেখি তুতুন ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে, আমি ফিরে গেলাম ওর দিকে, কাছে যেতেই ওর মুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে গেলো, আমি একদম সামনে গিয়ে পকেট থেকে ফোনটা  বার করে ওর হাতে দিলাম, আর বললাম-
———  এই যে madam আপনার ফোন, আমি কিন্তু চোর নই,   ( আর আমার কাছে সেরম টাকা ছিলোনা তোমাকে ভালো  কিছু gift কিনে দেওয়ার মতো – তাই শুধু এই ছোট্ট Kerala Traditional Houseboat টাই তোমার জন্য এনেছি। )

—  (ফোন আর গিফ্টটা হাতে নিয়ে ) –  কোনো কথা না বলে আমার বুকের সাথে চুম্বকের মতো সেটে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, — মাথা নিচু করেই বললো — SORRY .
——— আমার একহাতে ব্যাগ আর অন্য হাতে জলের বোতল, সেগুলো মাটিতে ফেলে দিয়ে আমিও অনন্যা কে জড়িয়ে ধরলাম, আমিও ওর শরীরের স্পর্শ অনুভব করলাম, আমার বুকে ওর স্তনের ছোঁয়া আমার ভেতর থেকে তরঙ্গের মতো সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লো,   আমি ওর মাথায় একটা স্নেহ ভরা হামি দিয়ে  মুখটা দুহাতে ধরে নিজের দিকে ঘোরালাম, কি সুন্দর মুখশ্রী, চোখ বন্ধ, কপালে একটা কালো ছোট্টো টিপ, সুগঠিত  নাক, ফুলের পাপড়ির মতো গোলাপী ঠোঁট, যা তিরতির করে কাঁপছে।
———তুতুন তাকাও এদিকে।
আসতে আসতে তাকালো আমার দিকে, ওর পাগল করা কাজল চোখ, ডুবে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো ওর ওই দুটি চোখে, এতো শান্তি কোনো দিন আমি পায়নি, মনটা ভরে উঠলো খুশিতে।
আরো একটু মুখের কাছে গিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম – love u তুতুন, সঙ্গে সঙ্গে তুতুনের হাতের বাঁধন যেন আরো একটু টাইট হয়ে আমাকে বুঝিয়ে দিলো তার সম্মতি।

আমরা অনেক্ষন এই ভাবে দাঁড়িয়ে আছি, আসে পাশের লোকজন ট্রেন থেকে নেমে আমাদের তাকাতে তাকাতে পেরোচ্ছে,
——   তুতুন চলো এবার,  নাকি এখানেই থাকার ইচ্ছে আছে, নাকি অন্য কাউকে ধাক্কা মারার ইচ্ছে আছে।
— দুম করে বুকে একটা কিল পড়লো আমার বুকে, আস্তে আস্তে আমার থেকে সরে দাঁড়ালো , নিজের হাত আমার হাতের মধ্যে গলিয়ে। চোখ মুখ ঠিক করে, চলো এবার – মা ও এসেছে waiting room এ বসে আছে, আমরা এগিয়ে গেলাম সেই দিকে, আন্টি র সঙ্গে দেখা হলো প্রণাম করলাম, আন্টি খুব ভালো খোলা মনের মানুষ, আর খুব সুন্দর দেখতে।

আন্টি – অনেক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো তারপর –   শুভ্রনীল তোমাকে কিন্তু  মোবাইলের ফটোর থেকে বেশি সুন্দর লাগছে ।
আমি- thank u  but আপনার থেকে বেশি নয়, আপনি অনেক সুন্দর।  তুতুন এর থেকেও —
আন্টি – flirt  করছো।     মা, মেয়ে দুজনকেই পটানোর চেষ্টা করছো – হাঃ হাঃ হাঃ
তুতুন – ধ্যাৎ –   “মা”  – , কি সব বলছো।
আমি- হাঃ হাঃ —- সুন্দরী রা এই টুকু প্রসংশা পাওয়ার অধিকারী, অবশ্যই flirt করছি –   হাঃ হা হা ।
আন্টি – হাঃ হাঃ হা  চলো যাই।    আমরা সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে একটা ক্যাব বুক  করে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম,
তুতুনদের বাড়ি যখন এলাম তখন দুপুর ১টা

এর পরবর্তী অংশের জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।