নিয়োগ পর্ব ২

মাধবী সমরেশের বাড়িটা ঘুরে দেখছিল। দোতলা বাড়ি, একা থাকে সমরেশ। আগেও অবশ্য মাধবী এসেছে বিমলের সাথে তবে আজ যেন তার নতুন করে চেনার পালা এই ১১/বি নম্বর বাড়িটাকে। কারণ এখানে আজ তার পূনরায় বাসর হবে, তবে রাতে নয়, দিনেদুপুরে।.. মাধবীর পিছন পিছন সমরেশও যাচ্ছিলো নিজের বাড়ির পরিদর্শনে তাকে সঙ্গ দিতে।

সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতেই মাধবীর চোখে পড়লো ফুল মালায় সজ্জিত নিরুপমার একটা বড়ো ছবি। তার দু’পাশে মিমি আর রিমির ছবি, আরেকদিকে সমরেশের মা জ্যোৎসনা দেবীর ছবি। নিরুপমাকে মাধবী আপন দিদির মতোই দেখতো। রুপে সে মাধবীর থেকেও অধিক সুন্দরী ছিল। তাই বলে মাধবীর মনে কখনো ঈর্ষা জন্মায়নি সৌন্দর্য্যের মাপকাঠি নিয়ে। মাধবী জানে সৌন্দর্য্য বিষয়টাই খুব আপেক্ষিক, নির্ভর করে দুই নয়নের উপর। কার নয়ন কাকে সুন্দর মানে তা কে জানে।

নিরুপমার ছবির সামনে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়ালো মাধবী। মনে মনে ক্ষমা প্রার্থনা করলো, আজ সে তাঁরই জায়গা সাময়িকভাবে নিতে চলেছে। এতদিন যে নগ্ন বুকে একচ্ছত্র অধিকার ছিল নিরুপমার, সেই বুক আজ টেনে নেবে মাধবীর কোমল শরীরকে। ভেবেই যেন গা শিউরে উঠছিল তার। মনে মনে প্রশ্ন করলো মানুষ মরে গিয়েও কি কোথাও হইতে দেখতে পায় তাঁর আপনজন তাঁর অবর্তমানে কি করছে তা? তাহলে তো বিষয়টা খুব লজ্জার। নিরুপমাদি-র আত্মা শান্তি পাবে তো তার স্বামীকে আমার সাথে দেখে?? মনে মনে ভেবে ভারাক্রান্ত হল মাধবী।

সেই বা কি করবে? বিমল যখন প্রথম এই উপায়টা বাতলে দিয়েছিল তাকে তখন রাগে অপমানে সারা শরীর কিরকম জ্বলে উঠেছিল তার! স্বামীর গায়ে হাত তোলা গর্হিত অপরাধ তাই নিজেকে সংযত রেখেছিল। নাহলে সেদিন বিমলের আস্ত থাকতো না। বেশ কয়েকদিন সে বিমলের সাথে কোনো বাক্য ব্যয় করেনি। কিন্তু ধীরে ধীরে সংসারে তার অবস্থান দূর্বল হয়ে পড়তে লাগলো। শাশুড়ি মা তাকে আল্টিমেটাম দিয়ে দিলো। পরের বছর নাতি নাতনির মুখ দেখতে না পেলে বসু মল্লিক বাড়িতে তার আর ঠাঁই হবে না।

এদিকে বিমল বারংবার তাকে বুঝিয়ে যাচ্ছিলো নিয়োগ প্রক্রিয়া শাস্ত্র সম্মত। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এই প্রক্রিয়া চলে এসছে বংশ বৃদ্ধি করা হেতু। এতে কোনো পাপবোধ নেই। ইহা শুধু সমস্যার সমাধান মাত্র। অগত্যা মাধবীর কাছে আর কোনো রাস্তা পড়েছিলোনা বি কে পাল অ্যাভেনিউ যাওয়া ছাড়া।

“কোন ঘরে যাব?”, প্রশ্ন করলো মাধবী।

“এখুনি? এই তো সবে এসছো।….”

“যে কাজের জন্য এসছি তাতে বিলম্ব কেন?”

“তোমার বড় অভিমান হয়েছে বিমলের উপর, তাই না?”

“অভিমান? না না। .. বসু মল্লিক বাড়ির বউয়ের অভিমান করা কি সাজে? তাদের শুধু কর্তব্য করে যেতে হয়। আমি তাই অভিমানে নয় কর্তব্যের তাড়নায় তোমার কাছে এসেছি সমরেশ দা। নাহলে নিরুপমাদি-র সাথে প্রতারণা করবো এরকম দুঃসাহস আমি কোনোদিনও দেখাতাম না।”

“প্রতারণা? মৃত মানুষকেও প্রতারিত করা যায় বুঝি? তার মানে তুমি আমাকে প্রতারক বলছো?”

“না সমরেশ দা, কথাটা ঠিক সেভাবে বলতে চাইনি। আসলে আমার খুব লজ্জা করছে নিরুপমাদি-র বিছানার অধিকার নিতে। এ কেমন ধর্মসংকটে ফেললো জীবন আমার?”

“তুমি ভীতু, তাই আজ তোমার এই অবস্থা”

“সমরেশ দা! এ কি বলছো তুমি?”

“ঠিকই বলছি মাধবী, তুমি তো পারতে প্রতিবাদী হতে। নিজের অধিকার নিজের সম্মান নিয়ে লড়াই করতে। তা তুমি করোনি। এটা তোমার কর্তব্য নয়, তোমার আপোষ।”

“তাহলে আমি কি করতাম? সবাইকে বলে দিতাম যে আমার স্বামী অক্ষম, তার পৌরুষত্ব অপরিপূর্ণ!”

“তুমি তোমার স্বামীর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে নিজেরটা জলাঞ্জলি দিতে যাচ্ছ?”

সমরেশের কথা শুনে মাধবী কেঁদে ফেললো। সমরেশের ইচ্ছে করছিলো তাকে জড়িয়ে ধরে তার সব কষ্টকে আপন করে নিতে। কিন্তু সে তো প্রতারক নয়। না বন্ধু হিসেবে, না স্বামী হিসেবে, আর না মাধবীর হিতৈষী হিসেবে। তাহলেই কেনই বা সে বিমল জায়াকে নিজের বক্ষলগ্না করবে?

বিমল যখন প্রথমবার এই কথাটা পেড়েছিল তার কাছে, সে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারেনি। ভেবেছিল মসকরা করছে, কিন্তু এটা কি মসকরা করার কোনো বিষয়? যতই তারা অঙ্গাঙ্গী বন্ধু হোক না কেন, তবু দাম্পত্য বিষয় নিয়ে কিছুটা শালীনতা সবসময়ে শোভনীয়, বিশেষ করে বাঙালি ভদ্র সমাজে। কিন্তু পরক্ষণেই সমরেশ বুঝেছিল তার বন্ধু সেদিন মোটেও মসকরা করার উদ্দেশ্যে আসেনি। সে জানতে পারে বিমলের অক্ষমতার বিষয়টা। বিমলই বাধ্য হয়ে তাকে জানায়। তারপর বাকিটা ইতিহাস। ……

বিমল অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সমরেশকে রাজি করায়। ওদিকে মাধবীও বাধ্য হয় রাজি হতে। তাই বিমলের সেই ইচ্ছে কার্যকর করতে আজ সমরেশ ও মাধবী দাঁড়িয়ে রয়েছে একে অপরের সম্মুখে। মাধবী নিজেই নিজের চোখের জল মুছলো, দিয়ে বললো, “তুমি তোমার ঘরটা দেখাবে না সমরেশ দা? বিমলের সাথে আগেও তোমার বাড়িতে এসছি, কিন্তু কখনও অন্দরে ঢোকার সুযোগ হয়নি। ইচ্ছাও প্রকাশ করিনি। কিন্তু আজ দেখতে চাইছি, কোথায় তুমি আর নিরূপমাদি প্রণয়ের বন্ধনে বারবার আবদ্ধ হতে। আমাকেও সেখানেই…… ” , বলেই থেমে গেল মাধবী।

নিজের অপার্থিব ইচ্ছা প্রকাশে কুন্ঠিত বোধ হল তার। কেন জানিনা মাধবী চাইছিল আজ সমরেশ তাকে সেই বিছানায় নিয়ে গিয়ে রমন করুক যেখানে সে তার স্ত্রীয়ের সাথে যৌন বিলাসে মত্ত হত। সে কি তবে পরোক্ষভাবে স্ত্রীয়ের অধিকারই দাবী করছিলো? হয়তো। কারণ বিনা আকর্ষণে কারোর শয্যাসঙ্গিনী হওয়া তো পতিতার লক্ষণ। আর সে তো পতিতা নয়। তাই শুধু শরীর নয় মনের এক টুকরো ভাগও চাই তার। তবেই সে সমরেশকে তার সন্তানের পিতা হওয়ার সুযোগ দেবে।

“ঘরটা দেখাতে পারি আর তুমি যা চাইছো সেটাও হতে পারে, তবে একটা শর্তে?”, মাধবীর মনের অন্দরে লুকিয়ে থাকা বাসনার কথা আঁচ পেয়েছিল সমরেশ। তাই সে এবার তাকে আপন করে নিতে উদ্যত হচ্ছিলো।

“কি শর্ত?”

“এখন থেকে তুমি আমায় শুধু সমরেশ বলে ডাকবে। আমি তোমার স্বামীর সমবয়সী, তাই বন্ধু হিসেবে আমাকে আপন করে নিতে তোমার সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

“ঠিক আছে, আমি রাজি সমরেশ। তুমি যা বলবে তাতেই রাজি।”

মাধবীর চোখে সমরেশ দেখতে পাচ্ছিলো সমর্পন, তার প্রতি, নিঃশর্ত ভাবে। এবার তাকে বুকে টেনে নিতে কোনো বাঁধা নেই। নেই কোনো দ্বিধা। নিজেকে আর ছোট করে লাভ নেই, কারণ সমরেশ বুঝেছে সে প্রতারক নয়, বরং উদ্ধারক, মাধবীর কাছে। তাই এক লহমায় সে মাধবীকে কাছে টেনে নিয়ে জাপটে ধরলো। বসিয়ে দিল ঠোঁট তার কোমল ঠোঁটে। এক আবেগভরা ঘন চুম্বনে দুই নর-নারী লিপ্ত হল।

এমতাবস্থায়ে মাধবীকে নিয়ে ধীরে ধীরে পা বাড়ালো সেই ঘরের দিকে। মাধবীও সমরেশের ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট না সরিয়েই চুমু খেতে খেতে পদার্পণ করলো সমরেশের দাম্পত্য ঘরে, যাতে একচ্ছত্র অধিকার ছিল এতদিন নিরুপমার। আজ তাতে ভাগ বসাবে মাধবীলতা বসু মল্লিক।

সমরেশ মাধবীকে নিয়ে গিয়ে পড়লো বিছানায়। শাড়ির আঁচলটা বুকের উপর থেকে সরিয়ে দিলো সমরেশ। ব্লাউজের ভেতর হতে সুস্পষ্ট খাঁজ দৃশ্যমান। যেন ধেয়ে আসছে কামুকতার আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে। সমরেশ সাহস করে একবার হাত বোলালো মাধবীর ব্লাউজ দ্বারা আবৃত স্তন দুটির উপরে। মাধবীর হৃদস্পন্দন উর্দ্ধগামী হল। যার স্পষ্ট ছাপ স্তনের আন্দোলনে ধরা পড়লো। যখন পাহাড়ের দুটো টিলার মতো গোল দুটি দুধের ভান্ডার নিজের উচ্চতা বাড়িয়ে স্ফুরিত হয়ে উঠলো। সমরেশ ভাবনায় পড়ে গেল, এত বড়ো গোলাকৃতি স্তন সে মুঠো ভরে ধরবে কি করে? তার তো হাতেই আসবেনা।

সে তো দীর্ঘদিন কোনো নারীসঙ্গ লাভ করেনি। তাই তার মনে নারী শরীর নিয়ে কৌতূহল ও ক্ষুধা দুটোই ছিল। অপর দিকে মাধবী যেন নিজেকে ছেড়ে দিয়েছিল সমরেশের হাতে। যেন রাখলে সেই রাখবে, যেতে দিলে সেই দেবে। আর কোথাও তো যাওয়ার উপায় নেই। তার স্বামী নিজে তাকে সমরেশের হাতে তুলে দিয়েছে। তাই এখন সমরেশই তার শরীরের একমাত্র মালিক। সে যা ইচ্ছে যেভাবে ইচ্ছে করুক। মাধবী তাকে বাঁধা দেবেনা। বরং পারলে উৎসাহ দেবে তার এই ক্রিয়াকলাপে সঙ্গ দিয়ে।