কাকিমাদের ভালবাসা – পর্ব ২১

This story is part of the কাকিমাদের ভালবাসা series

    কাকিমাদের ভালবাসা – পর্ব ২০

    আমি আবার পড়াতে মন দিলাম | পড়া শেষ করে হলরুমে দেখি মা একা, বুঝলাম কাকিমা চলে গেছে |পকেট থেকে ফোনটা বের করে একবার শিল্পাকে ফোন করলাম আজ কখন ফাঁকা আছে তা জানার জন্য | ও জানালো আজ শনিবার তাই দুটোর পর পুরো ফাঁকা |আমি চারটার সময় যাব বলে দিলাম | মা বলল-
    মা – খোকা আজ চারটার সময় কেন ?

    আমি – কাল একদম পড়া হয়নি তাই আজ সেটা মেকআপ করতে হবে তাছাড়া শিল্পা অনেক বিষয়ে পিছিয়ে আছে, তাই তাড়াতাড়ি করাটা নিতান্ত জরুরী
    মা – ঠিক আছে

    এরপর নাস্তা করে বেরিয়ে পড়লাম রনিতা কাকিমার দুই একটা কাজ বাকি ছিল সেগুলো কমপ্লিট করতে | সমস্ত কাজ সেরে বারোটায় বাড়ি ফিরলাম | স্নান খাওয়া দাওয়া করে একটু ঘুমিয়ে নিলাম | সাড়ে তিনটায় যথারীতি এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলো | তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে মাকে বলে পড়ানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম | তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে ঠিক 4 টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম | বেল বাজাতে কাকিমা দরজা খুললো-

    কাকিমা – তুমি এখন কিন্তু আজ তো শিল্পা বাড়িতে আছে
    আমি – তো কি হয়েছে আজ না হয় মেয়ে র সামনে ই করব
    কাকিমা -(আমার বুকে আলতোভাবে একটা কিল মেরে ) যা দুষ্ট
    আমি – কেন আজ মেয়ে আছে বলে করতে দেবে না নাকি
    কাকিমা ~ আমি তোমাকে কখনো না করতে পারি, কিন্তু সোনা কিভাবে হবে ?

    এমন সময় সামনে থেকে শুনতে পেলাম ” কে এসেছে মা” |
    আমি ~ কেউ না আমি
    শিল্পা ~ ওহহ তুমি চলে এসেছো
    আমি ~ চারটে বলেছিলাম, দেখো চারটা বাজে এখন
    শিল্পা ~ ইস আমিই ভুলে গেছিলাম
    আমি – ঠিক আছে কোন ব্যাপার না ,চলো এখন তাড়াতাড়ি, কাল তো পড়োনি আজ অনেক কাজ আছে | “ঠিক আছে” বলে শিল্পা চলে গেলে কাকিমা বলল
    কাকিমা ~ আচ্ছা এই জন্য আসা আমি তো ভাবলাম আমার জন্য এসেছো বোধহয়
    আমি ~তুমি বলতো আজ পড়ানোটা ক্যানসেল করে দিয়ে তোমাকে বেডরুমে পড়াতে শুরু করি |
    কাকিমা ~ না থাক যা করতে এসেছ কর যাও

    প্রথমে শিল্পা এই বিষয়টা নিয়ে একটু আলোচনা করলেও আমি তাড়াতাড়ি ব্যাপারটা মিটিয়ে নে ওকে পড়াতে শুরু করলাম | প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে পড়ালাম এবং শিল্পা ও বেশ মন দিয়ে পড়ল | শেষে সাতটার দিকে পড়া শেষ করে ওদের বাড়ি থেকে বের হলাম | আসবার সময় কাকিমাকে দেখলাম ওনার মনটা যেন উশখুশ করছে | কোনমতে নিজেকে সান্তনা দিয়ে কাকিমাকে ও চোখের ইশারায় বোঝালাম |

    তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যাওয়ায় ভেবে পাচ্ছিলাম না কি করব তাই কোন কিছু না ভেবেই বাড়ির দিকে হাঁটা দিলাম | ঠিক মাঝ রাস্তায় এসেছি এমন সময় দেখা হয়ে গেল জয়িতা ম্যামের সাথে | যেহেতু আগের দিন পরিচয় হয়েছে তাই দেখা হবার পর কথা না বলাটা বড় বেমানান দেখায় | রাস্তা টপকে গিয়ে ওনাকে বললাম –
    আমি ~ম্যাম আপনি এখানে
    ম্যাম ~আরে তুমি, কি নামটা যেন তোমার ভুলে গেছি
    আমি~ ম্যাম, ঋষভ
    ম্যাম ~ হা, ঋষভ ,একদম ভুলে গেছিলাম | তা তুমি এখন এখানে ?
    আমি ~ম্যাম আমি তো পড়াতে গিয়েছিলাম আজ শনিবার তাই একটু বেশি করে পড়ানোর জন্য তাড়াতাড়ি গিয়েছিলাম
    ম্যাম ~বাহ বেশ ভালো

    এমন সময় সামনের দোকান থেকে একটা ছেলে বার হয়ে দু থলি জিনিস নামিয়ে দিয়ে বলল
    ছেলেটা ~এই নিন ম্যাম আপনার সমস্ত জিনিস, সব আছে
    ম্যাম ~ ঠিক আছে তুমি যাও
    আমি ~ ম্যাম আপনার এত জিনিস
    ম্যাম~ হ্যাঁ আসলে পুরো সপ্তাহ সময় পাই না তাই একবারে বেশি করে নিয়ে যায় |

    দেখলাম দুটো বিশাল ব্যাগে ভর্তি বাড়ির রোজকার দরকারি সব জিনিসপত্র | আর ভাবলাম এই বিশাল ব্যাগ ম্যাম নিয়ে যাবে কিভাবে | যখন ম্যান নিচে ঝুঁকে ব্যাগ দুটো হাতে তুলতে যাবে তখন বললাম –
    আমি – ম্যাম এত ভারী ব্যাগ আপনি নিয়ে যাবেন কিভাবে
    ম্যাম ~ এই কোন মতে নিয়ে যাব , সামনেই আমার বাড়ি বেশী দূরে না
    আমি ~ নানা ম্যাম ছাড়ুন আমি নিয়ে যাচ্ছি এত ভারী ব্যাগ আপনি পারবেন না |
    ম্যাম ~ আরে না না তুমি নিয়ে যাবে কেন
    আমি – নানা ম্যাম আপনি পারবেন না, ব্যাগগুলো অনেক ভারী, আমি নিয়ে নিচ্ছি , এই বলে আমি ব্যাগ দুটো হাতে ওঠালাম |
    ম্যাম ~ তপনবাবুর (হেডস্যার) কাছে শুনেছিলাম তোমার ব্যাপারে আজ দেখলাম | সত্যি বলতে প্রথমে ভেবেছিলাম অনার ছাত্র বলে হয়তো উনি বাড়িয়ে বলছেন, কিন্তু না উনি ঠিক কথাই বলেছিলেন
    আমি ~ না ম্যাম আমি থাকতে আপনি একা এত বড় ব্যাগ দুটো নিয়ে যাবেন তা কি করে হয় | কোন দিকে আপনার বাড়িটা ?
    ম্যাম ~ (আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে) এই সোজা সামনে ই |

    10 মিনিট হেঁটে ম্যামের বাড়ির সামনে পৌছালাম | ব্যাগ দুটো ওনার দরজার সামনে নামিয়ে বললাম-
    আমি ~আচ্ছা ম্যাম আজ তাহলে আমি আসি
    ম্যাম ~আরে তা কি করে হয়, তুমি আজ আমার এতটা উপকার করলে, আর বাড়ির সামনেথেকে শুধু মুখে ফিরে যাবে তা কি করে হয় |
    আমি ~না না না আজ অনেক দেরি হয়ে গেছে, মা হয়তো বাড়িতে চিন্তা করবে | আজ আসি পরে একদিন আসব |
    ম্যাম ~সে তো নিশ্চয়ই আসবে কিন্তু আজ তোমায় শুধু মুখে ফিরে যেতে দেবোনা

    এমন সময় ভেতর থেকে একটা কাজের মেয়ে এসে ব্যাগ দুটো নিয়ে ভেতরে চলে গেল | ম্যাম একপ্রকার জোর করে আমার হাত ধরে ওনার বাড়ির ভেতর নিয়ে গেলেন | বেশ সুন্দর বাড়িটা | চারিদিকে দেওয়ালে বিভিন্ন জায়গার ফটো লাগানো |চারিদিকে অনেক ফুলদানি আর জানালার পাশে কিছু ফুলের টব | জানলার সামনে একটা ছোট্ট দোলনা রাখা | সত্যি বাড়িটা দেখেই ওনার রুচি বোঝা যায় | যাই হোক আমাকে সামনের সবাই বসতে বলে উনি ভেতরে চলে গেলেন |

    দু তিন মিনিটের মধ্যেই উনি ফিরে এলেন, হাতে একটা মিষ্টির প্লেট নিয়ে | বুঝলাম উনি আজ ছাড়বেন না তাই মিষ্টির প্লেটটা নিয়ে মিষ্টি গুলো খেতে শুরু করলাম | এরপর উনি পড়াশোনার ব্যাপারে বিভিন্ন জিনিস জিজ্ঞেস করতে শুরু করলেন আর আমিও মিষ্টি খেতে খেতে তার উত্তর দিতে থাকলাম | প্রায় পনের বিশ মিনিট বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার পর কাজের মেয়েটা এসে বলল
    কাজের মেয়ে – ম্যাডাম আমার সমস্ত কাজ হয়ে গেছে, আমি আজ আসছি
    ম্যাম – ঠিক আছে কিন্তু কাল তাড়াতাড়ি আসিস
    কাজের মেয়ে ~ ঠিক আছে ম্যাডাম বল চলে গেল
    ম্যাম ~ চলো অনেক কথা হয়েছে ,এবার বাকি কথা খেতে খেতে হবে |
    আমি ~ মানে
    ম্যাম – মানে আবার কি দেখছোনা ডিনারের টাইম হয়ে গেছে
    আমি – না না ম্যাম আমি ডিনার করতে পারবোনা মা বাড়িতে না খেয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে ,
    ম্যাম ~ তাতে কি হয়েছে ! মাকে ফোন করে বলে দাও না হয় কম করে খেও যাতে করে বাড়ি গিয়ে আবার খেতে পারো | তাছাড়া এতটা পথ একা হেঁটে হেঁটে যাবে তাতে সব হজম হয়ে যাবে |

    বুঝলাম আজ উনি ডিনার না করিয়ে ছাড়বেন না |তাই ভাবলাম উনার সাথে কম করে খেয়ে নি ই | বেশি দেরি না করে উনি ডাইনিং টেবিলে চলে গেলেন | গিয়ে দেখলাম সমস্ত জিনিস এক প্রকার রেডি আছে | দেরি না করে উনি আমাকে বসতে বললেন আর নিজেও বসলেন | খেতেখেতে বিভিন্ন আরো অনেক কথা হল |কিন্তু বাড়িতে আর কাউকে না দেখতে পেয়ে আমার কেমন মনে জিজ্ঞাসা উঠলো তাই থাকতে না পেরে বললাম –
    আমি ~ ম্যাম যদি কিছু মনে না করেন তবে কথা জিজ্ঞেস করতে পারি
    ম্যাম – হ্যাঁ নিশ্চয়ই কর
    আমি ~ আপনি কি এই বাড়িতে একা থাকেন?
    আমার মনের কথা বুঝতে পেরে উনি বললেন
    ম্যাম ~ বুঝেছি তুমি কি জিজ্ঞেস করতে চাইছো | এখানে আমি একাই থাকি | আমার হাজবেন্ড এবং আমি, আমরা আলাদা থাকি , আর আমার মেয়েও ওনার সাথে থাকে হায়দ্রাবাদে |

    শুনে বুঝলাম প্রশ্নটা করা হয়তো উচিত হয়নি | তাই বললাম –
    আমি ~ সরি ম্যাম
    ম্যাম ~আরে না না এতে সরি বলার কী আছে তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও আর মনে একই প্রশ্ন উঠত |
    আমি – আপনাকে দেখে বুঝতে পারিনি, আপনি এখনো শাখা সিন্দুর……..
    ম্যাম ~ কি করবো বলো যতই হোক বাঙ্গালী নারীর তো | তাছাড়া শাখা সিন্দুর টা কিছুটা ভালোবাসার জন্য জন্য ও বটে আর কিছুটা সমাজের কুদৃষ্টি গুলো থেকে বাঁচতে |
    আমি – এগেন আই এম ভেরি সরি ম্যাম
    ম্যাম ~ ইটস ওকে নাও এবার খাওয়া শুরু করো |

    এরপর দুজনে খাওয়া শুরু করলাম | খেতে খেতে আরো অনেক কথাবার্তা হল | খাওয়া শেষ করে আর বেশি দেরি করলাম না ওনার কাছ থেকে বিদায় নিতে | যদিও উনি আসবার সময় বারবার করে বললেন যে যখনই আমি ফ্রি থাকি যেন চলে আসি ওনার সাথে গল্প করতে , স্কুল বাদে উনি সারাদিন ফ্রি ই থাকেন |আমিও ঘাড় নেড়ে “নিশ্চয়ই আসবো” বলে ওনার কাছ থেকে বিদায় নিলাম

    বাড়ি পৌঁছে খাবার সময় কম খাবার দিতে বলায় মা জিজ্ঞেস করল ” -কি হয়েছে খোকা শরীর খারাপ |
    আমি – না মা | তারপর আমি আজকে টিউশন থাকে আসার পথে ও যা যা হয়েছে সব খুলে বললাম
    মা ~ ঠিক করেছিস না খেলে হয়তো আমি কিছু করতেন

    এইভাবে গল্প করতে করতে খাওয়া শেষে রুমে চলে গেলাম | তারপর পড়া শেষ করে ঘুমোতে যাবো দেখি রনিতা কাকিমার ভিডিও কল –
    রনিতা কাকিমা – কি করছো
    আমি – কিছু না এবার ঘুমোতে যাব
    কাকিমা ~কাল তো রবিবার বলছি কাল একবার এসে সমস্ত কাজ করে আমাকে বুঝিয়ে দেবে
    আমি ~ঠিক আছে আমি কাল দশটার দিকে যাব
    রনিতা কাকিমা -ঠিক আছে আর হ্যাঁ আমার মাকে বলে দিও কাল দুপুরে তুমি আমার বাড়িতে খাবে
    আমি – (মজা করে) এত কাজ করলাম আর একবার লাঞ্চ করে সেরে দেবে
    রনিতা কাকিমা ~ তাহলে আর কি চাই
    আমি ~সেটা আমি কি করে বলব তুমি দেখো তুমি কি দিবে
    কাকিমা ~ (একটু ভেবে) ঠিক আচ্ছা কাল তোমার জন্য একটা স্পেশাল গিফট থাকবে

    এইভাবে কাকিমার সাথে গল্প করতে করতে কাকিমার ক্লিভেজ দেখতে দেখতে গরম হয়ে উঠলাম | তবুও কথা শেষ করে কোনোমতে নিজের মনটাকে কন্ট্রোল করে ঘুমিয়ে পড়লাম | এরপর কাকিমার বাড়িতে কি হলো তা জানতে পরের পর্বে চোখ রাখুন…….

    এরপর কি হলো তা জানতে পরের পার্ট এ চোখ রাখুন গল্প সম্বন্ধে যেকোনো মতামত জানানোর জন্য আপনারা আমাকে নিচের দেওয়া মেইল আইডি অথবা টেলিগ্রামে মেসেজ করতে পারেন | ধন্যবাদ
    ইমেইল – [email protected]
    টেলিগ্রাম – @Rishavlove76