অরেঞ্জের গন্ধ – পর্ব ২: বিধবার দৃষ্টি

আগের পর্ব

রান্নাঘরের দরজা বন্ধ হওয়ার পরেও প্রিয়াঙ্কার বুকের ধুকপুকানি শান্ত হতে চায় না। মায়ের কণ্ঠস্বর যেন একটি অপ্রত্যাশিত ধাক্কা দিয়ে তাদের গোপন মুহূর্তের রঙিন স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। তার ভেজা শরীর, এলোমেলো পোশাক—সবকিছুই সেই নিষিদ্ধ মিলনের স্পষ্ট সাক্ষ্য বহন করছে। দ্রুত নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করে প্রিয়াঙ্কা, কিন্তু তার ভেতরের অস্থিরতা কিছুতেই বশে আসে না।

রান্নাঘরের জানালার ফাঁকে সেই মুহূর্তে যে দৃশ্যটা বিধবা সুশ্মিতা দেবীর চোখে ধরা পড়েছিল, তা কোনো এক গোপন অধ্যায়ের নিষিদ্ধ পঙ্‌ক্তির মতো। কাঁচের ওপর জমে থাকা শিশিরবিন্দুর মতো স্বচ্ছ, কিন্তু স্পর্শ করলে ভেঙে পড়ে যায়—ভেতরে রেখে যায় কেবল স্মৃতির ভেজা আঁচ।

প্রিয়াঙ্কা তখন হাঁটু গেড়ে, রান্নাঘরের ঠান্ডা মেঝেতে বসে, মাথা নিচু। তার ঠোঁট যেন এক নিষিদ্ধ সুরের নীরব বেহালা। আসলামের জাঙ্গিয়ার গিঁট খোলা, কোমরের কাছের চামড়ায় ভেসে আছে ঘাম আর উত্তেজনার এক সরু রেখা।

প্রিয়াঙ্কার ঠোঁট ধীরে ধীরে নেমে আসে, তার জিভের ডগায় এক ধরণের কাঁপুনি, যেন গন্ধে আর কল্পনায় মিলে মিশে আছে সেই চেনা পুরুষ-শরীরের মোহ। সে এক গাঢ় ও ধীর চুম্বনের মতো, যেখানে ঠোঁট শুধু ছোঁয় না—সে অনুভব করে, সে স্পন্দনে ভরে তোলে তার প্রেমিককে।

আসলামের মাথা পিছনে হেলে যায়, তার চোখ আধো বন্ধ, নিঃশ্বাস ভারী, কাঁধের পেশি থরথর করছে। হাতদুটো কোনোরকমে দেয়ালে ঠেকিয়ে নিজেকে সামলে রাখছে। মুখ থেকে এক চাপা দীর্ঘশ্বাস ছুটে আসে—যেটা রন্ধ্র জুড়ে জমে থাকা কামনার গলিত রূপ।

প্রিয়াঙ্কার ঠোঁট কখনও ঘোরাফেরা করে, কখনও চেপে বসে, কখনও আবার জিভ বুলিয়ে দেয় আস্তে আস্তে, যেন প্রতিটি স্নায়ুতে বিদ্যুৎ পাঠাচ্ছে। আর আসলাম যেন সেই কারেন্টের তার—প্রতিবার সেই স্পর্শে কেঁপে ওঠে, বেসামাল হয়ে পড়ে তার শরীর।

তারপর শুরু হয় গভীরতম গমন—প্রিয়াঙ্কার মুখ এক আত্মস্থ ছন্দে দোল খায়, ঠোঁট শক্ত হয়ে জড়িয়ে ধরে আসলামের উত্তপ্ত কেন্দ্র। মাঝে মাঝে সে মুখ তুলে চেয়ে দেখে, চোখে টান, ঠোঁটে কৌশল, যেন খেলার মাঝে শিকারী। তার জিভ ঘুরে বেড়ায় নিচ থেকে উপরে, মাঝে মাঝে হালকা কামড় দিয়ে আবার চুষে নেয়, ধীরে, গভীরে।

আসলামের নিঃশ্বাস দমবন্ধ হয়ে আসছে। সে ঠেলে রাখতে চায় নিজেকে দেয়ালে, কিন্তু শরীর আর মানতে চাইছে না। পায়ের আঙুল মুড়িয়ে আসছে, পেটের পেশি শক্ত হয়ে আছে।

“আহ… পু…প্রিয়া…”—তার ঠোঁট থেকে বেরিয়ে আসে গলা টানা একটা ডাক, যেন আবদ্ধ আগ্নেয়গিরির গর্জন।

প্রিয়াঙ্কা তখনও থামে না। তার মুখের গতি বেড়ে যায়, আরও গভীর, আরও দ্রুত। সে জানে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ নিতে হয়, কীভাবে ছেড়ে না দিয়ে সেই আগুনকে ঠিক সময়ে বিস্ফোরণ ঘটাতে হয়। হঠাৎ, তার জিভ ঘুরিয়ে নেয় শিকড়ে, তারপর আবার পুরোটা মুখে পুরে নেয়।

আর ঠিক তখনই আসলাম কেঁপে ওঠে—এক প্রচণ্ড জোয়ার উঠছে তার শরীর জুড়ে। চোখ বন্ধ, কণ্ঠ রুদ্ধ, এক গরম তরল গলিয়ে দিচ্ছে কামনার শেষ বাঁধ।

প্রিয়াঙ্কার মুখের ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটে—সে গিলে ফেলে কিছুটা, ঠোঁটে লেগে থাকা বাকিটা জিভ দিয়ে মুছে নেয়। চোখে তৃপ্তির ঝিলিক, ঠোঁটে এক বিজয়িনী হাঁসি।

সে উঠে দাঁড়ায়, তার চোখে কোনো দ্বিধা নেই—শুধু তৃপ্তি, দখল, আর কিছুটা দম্ভ। আসলামের দিকে ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বলে—

“এবার তুই আমার… পুরোপুরি…”

ঠিক তখনই জানালার ওপারে ধীরে ধীরে আবির্ভূত হন সুশ্মিতা দেবী। নাইটির আঁচল বুক পর্যন্ত উঠে এসেছে হালকা বাতাসে, তার চোখ স্থির। দৃশ্যটা তার চোখে পড়ে—এক মুহূর্ত, দুই মুহূর্ত, তারপর চুপচাপ সরে যান।

কিন্তু সে সরে গেলেও দৃশ্যটি তার মাথার মধ্যে যেন পেরেকের মতো ঠুকে যায়।

তিনি বেডরুমে ফিরে গিয়ে টিভির সামনে বসেন, কিন্তু মন পড়ে থাকে জানালার ওপারে, রান্নাঘরের মেঝেতে। সেই গোপন দৃশ্যের প্রতিটি খুঁটিনাটি তার মনের পর্দায় চলতে থাকে যেন কোনো নিষিদ্ধ সিনেমা।

তার বুক ধকধক করে ওঠে। চোখে ঝিলিক টিভির, কিন্তু মন তার নারীত্বের গোপন প্রান্তে।

কক্ষের আলো নিভে গেছে, শুধু টিভির নীল স্ক্রিন থেকে ছিটকে পড়া আলোয় আধো-অন্ধকারে সে বসে আছে। এক হাতে রিমোট, অন্যটি ধীরে ধীরে স্লাইড করে যায় নাইটড্রেসের নিচে। প্রথম স্পর্শটা ইচ্ছাকৃতভাবে হালকা—শুধু আঙুলের ডগা দিয়ে উরুর উপরের কোমল চামড়ায় আঁচড় কাটে। গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, নিপল শক্ত হয়ে আসে কাপড়ের ভেতর।

দ্বিতীয়বারের স্পর্শে সাহস বাড়ে। তর্জনী আর মধ্যমা আঙুল একসাথে খোঁজে সেই সংবেদনশীল রেখা, যেখানে জমে আছে দিনের অবদমিত উত্তাপ। আঙুলের প্যাডগুলো চেপে ধরে ভেজা ত্বক, ঘষতে ঘষতে ঢোকে গভীরে। নিচু শ্বাস ছাড়ে সে—প্রিয়াঙ্কার কথা ভাবে, কীভাবে তার গোলাপি ঠোঁট খুলে যায় মৃদু গোঁঙানিতে, কীভাবে আসলামের হাত তার কোমরে দাগ ফেলে।

কল্পনার তাপে শরীরটা ভিজে উঠতে থাকে। আঙুল এখন সম্পূর্ণ ভেজা, পিচ্ছিল চলাচলে। সে নিজের ভেতরের ভাঁজে ভাঁজে ঢুকে পড়ে, প্রতিটি স্নায়ুকে জাগ্রত করে। চোখ খোলা রাখে—টিভির পর্দায় ঝলমলে রঙের দৃশ্য তার চোখে ভাসে না, বরং সেখানে সে দেখে প্রিয়াঙ্কাকে, যার পা দুটি কাঁপছে আসলামের কাঁধের ওপর, যার নখগুলো তার পিঠে আঁচড় কাটে।

ডান হাতের তালু পুরোটা চেপে ধরে নিজের যোনি, বাম হাতটা বুকের উপর চলে যায়। নিপলগুলো ঘষতে থাকে, চিমটি কাটে। গরম রেশমের মতো অনুভূতি পেটের নিচ থেকে উঠে আসে, পাঁজর ভরে ফুলে ওঠে। শ্বাস দ্রুত হয়, গলায় আটকে থাকা একটা নামবিহীন শব্দ—যেন কেউ চাপা দিয়ে রেখেছে তার মুখ।

২০ মিনিট কেটে গেছে। আঙুলের গতি বদলে যায়—এবার তা দ্রুত, অনিয়ন্ত্রিত, যেন শরীর নিজেই রক্তের স্পন্দনে তাল ঠুকছে। গোপন স্থানটা ফুলে উঠেছে, সংবেদনশীলতা এতটাই তীব্র যে প্রতিটি স্পর্শে বিদ্যুৎ খেলে যায়। সে ভাবে আসলামের জিভের কথা, যে কীভাবে প্রিয়াঙ্কার গোলাপি ভেজা চামড়া চেটে নেয়। এই ভাবনায় তার নিজের জিভটা শুকনো হয়ে আসে, ঠোঁট চাটে।

পেলভিস উপরে ঠেলে দেয়, আঙুল গভীরে ঢোকে। অন্য হাতটা এখন মুখের উপর—আঙুল চুষছে, যেন কারো স্বাদ পাচ্ছে। চোখের কোণা ভেজা, কিন্তু সে কাঁদে না। বরং এক অদ্ভুত হাসি ফোটে ঠোঁটে, যখন কল্পনায় দেখে প্রিয়াঙ্কা আর আসলাম কীভাবে একে অপরকে খুঁজে পায় বিছানায়।

৩০ মিনিটে এসে সবকিছু থেমে যায়। হাতটা কাঁপতে কাঁপতে বেরিয়ে আসে, ভিজে আঙুলগুলো উরুতে লেগে থাকে। একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস বের হয়, যেন বছরের অবদমিত যৌনতা বেরিয়ে গেল। চোখ বুজে সে শুয়ে পড়ে, হৃদস্পন্দন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।

তারপর হঠাৎই টিভির শব্দ বাড়িয়ে দিয়ে ডাকে—**“প্রিয়াঙ্কা, রান্না হয়ে গেছে?”**

এই এক প্রশ্নেই যেন প্রিয়াঙ্কার পৃথিবী চুপসে যায়। তার ভেতরের অপরাধবোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কিন্তু সে জানে না, রান্নাঘরের জানালা শুধু হাওয়া ঢুকিয়ে দেয় না—সেই জানালার ফাঁক দিয়েই মাঝে মাঝে প্রবেশ করে এক বিধবার তৃষ্ণার্ত চোখ।

পাশের ঘরে টিভির শব্দ ভেসে আসছে, সুশ্মিতা দেবী যেন কিছুই টের পাননি—এই ভাবনা প্রিয়াঙ্কার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে তোলে। তার মনে এক তীব্র অপরাধবোধ জন্ম নেয়। মায়ের সরল বিশ্বাসকে সে আঘাত করেছে, তার চোখের আড়ালে এমন একটি সম্পর্ক গড়ে তুলেছে যা সমাজের চোখে গর্হিত।

ধীরে ধীরে রান্নাঘরের দরজা খোলে এবং প্রিয়াঙ্কা বাইরের ঘরে প্রবেশ করে। সুশ্মিতা দেবী সোফায় বসে মনোযোগ দিয়ে টিভি দেখছেন। তার মুখ শান্ত, দৃষ্টি পর্দার দিকে স্থির। প্রিয়াঙ্কার মনে হয়, মায়ের চোখে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তবুও, একটি চাপা ভয় তার হৃদয়কে কুঁড়ে কুঁড়ে খায়।

“মা,” প্রিয়াঙ্কার স্বর সামান্য কাঁপে।

সুশ্মিতা দেবী টিভির দিক থেকে চোখ না সরিয়েই উত্তর দেন, “হ্যাঁ, প্রিয়াঙ্কা? রান্না হয়ে গেছে?”

“হ্যাঁ মা, প্রায়। তুমি কি খাবে?” প্রিয়াঙ্কা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে, কিন্তু তার ভেতরের ঝড় শান্ত হয় না।

ঠিক সেই মুহূর্তে, দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। সুশ্মিতা দেবী ভ্রু কুঁচকে টিভির শব্দ কমিয়ে দেন। “এই সকালে কে এলো?”

প্রিয়াঙ্কার বুক ধড়াস করে ওঠে। আসলাম কি এখনও আশেপাশে আছে? যদি মা তাকে দেখে ফেলে?

সুশ্মিতা দেবী ধীরে ধীরে দরজা খুলে দেন। দরজায় দাঁড়িয়ে আসলাম, তার মুখে একটি অমায়িক হাসি।

“আরে, আসলাম! এসো বাবা,” সুশ্মিতা দেবীর স্বরে আন্তরিকতা। “এই অসময়ে?”

আসলাম ঘরে প্রবেশ করে, তার চোখ একবার দ্রুত প্রিয়াঙ্কার দিকে ঘুরে যায়। প্রিয়াঙ্কা দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, তার গাল সামান্য লালচে হয়ে ওঠে।

“আসলাম এসেছিল একটু দরকারে,” প্রিয়াঙ্কা তাড়াতাড়ি বলে।

সুশ্মিতা দেবী হাসেন। “দরকার তো থাকবেই। বোসো বাবা। এই নাও, চা খাও।” তিনি আসলামের দিকে একটি চায়ের কাপ এগিয়ে দেন।

আসলাম কাপটি গ্রহণ করে সুশ্মিতা দেবীর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “ধন্যবাদ, মাসিমা।”

তাদের কথোপকথনের সময় প্রিয়াঙ্কার চোখ বারবার সুশ্মিতা দেবীর দিকে যায়। তার মনে হয়, মায়ের দৃষ্টি যেন তার ভেতরের গোপন কথাগুলো পড়ে ফেলতে চাইছে। সুশ্মিতা দেবীর শান্ত মুখের আড়ালে কি কোনো সন্দেহ লুকিয়ে আছে?

সুশ্মিতা দেবী চায়ের কাপে চুমুক দেন, তার দৃষ্টি স্থির। হঠাৎ, তার চোখ আসলামের হাতের দিকে যায়। আসলামের হাত সামান্য কাঁপছে, চায়ের কাপের তরল সামান্য ছলকে পড়ছে।

“তোমার হাত কাঁপছে কেন, বাবা? শরীর খারাপ লাগছে?” সুশ্মিতা দেবীর স্বরে উদ্বেগ।

আসলাম অপ্রস্তুত হয়। “না, মাসিমা। আসলে একটু তাড়াহুড়ো করছিলাম তো তাই।”

প্রিয়াঙ্কা লক্ষ করে, সুশ্মিতা দেবীর চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ। তিনি কি আসলামের অস্থিরতা লক্ষ্য করেছেন? নাকি এটা শুধুই প্রিয়াঙ্কার মনের ভুল?

তাদের মধ্যে কিছুক্ষণ নীরবতা বিরাজ করে। কেবল টিভির মৃদু আওয়াজ শোনা যায়। প্রিয়াঙ্কার মনে হয়, সময় যেন থমকে দাঁড়িয়েছে।

“প্রিয়াঙ্কা, তুমিও বোসো,” সুশ্মিতা দেবী বলেন। “একটু গল্প করা যাক।”

প্রিয়াঙ্কা অনিচ্ছা সত্ত্বেও মায়ের পাশে বসে। আসলামও সোফায় বসে, তার চোখ প্রিয়াঙ্কার ওপর স্থির। প্রিয়াঙ্কা অস্বস্তি বোধ করে, তাদের দুজনের মধ্যেকার নীরব কথোপকথন যেন মায়ের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে পারছে না।

সুশ্মিতা দেবী চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে আসলামের দিকে সরাসরি তাকান। তার মুখের হাসি মিলিয়ে যায়, চোখের দৃষ্টি গভীর হয়।

“আসলাম,” সুশ্মিতা দেবীর স্বর শান্ত কিন্তু দৃঢ়, “আমার একটা কথা জানার আছে।”

প্রিয়াঙ্কার হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয়। মা কি কিছু জেনে গেছেন?

“হ্যাঁ, মাসিমা? বলুন,” আসলামের স্বরে সামান্য দ্বিধা।

“তুমি প্রায়ই এখানে আসো। আমার ভালো লাগে, তুমি আমার ছেলের মতো। কিন্তু…” সুশ্মিতা দেবী থামেন, তার দৃষ্টি প্রিয়াঙ্কার দিকে যায়। “তোমাদের দুজনের মধ্যে কি শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্ক?”

প্রিয়াঙ্কার মুখ শুকিয়ে যায়। সে কী বলবে বুঝতে পারে না। আসলামের দিকে তাকায়, কিন্তু তার চোখে কোনো সাহায্য খুঁজে পায় না।

আসলাম শান্তভাবে উত্তর দেয়, “মাসিমা, প্রিয়াঙ্কা আমার খুব ভালো বন্ধু। আমরা একে অপরের খেয়াল রাখি।”

সুশ্মিতা দেবী কিছুক্ষণ তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তার চোখে কোনো রাগ বা অভিযোগ নেই, কেবল একটি গভীর জিজ্ঞাসা।

“আমি তোমাদের বিশ্বাস করি,” অবশেষে তিনি বলেন, তার স্বরে যেন সামান্য দীর্ঘশ্বাস মেশানো। “কিন্তু মনে রেখো, কোনো ভুল করলে তার ফল ভালো হয় না।”

এই কথাগুলো প্রিয়াঙ্কার বুকের ভেতর তীরের মতো বিঁধে যায়। মায়ের সরল বিশ্বাসকে সে ভেঙেছে, এবং সেই ভুলের পরিণতি হয়তো খুবই ভয়াবহ হতে পারে।

আসলাম উঠে দাঁড়ায়। “মাসিমা, আমার এবার যাওয়া দরকার। কিছু কাজ আছে।”

“ঠিক আছে বাবা, এসো আবার,” সুশ্মিতা দেবী বলেন, তার মুখে আবার সেই মিষ্টি হাসি ফিরে আসে।

আসলাম প্রিয়াঙ্কার দিকে তাকিয়ে একটি নীরব বিদায় জানায় এবং দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়।

প্রিয়াঙ্কা তখনও সোফায় বসে থাকে, তার শরীর অবশ। সুশ্মিতা দেবী আবার টিভির দিকে মনোনিবেশ করেন, কিন্তু প্রিয়াঙ্কা জানে, মায়ের সেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, সেই চাপা জিজ্ঞাসা তার মন থেকে সহজে যাবে না। জানালার গ্রিলে ভেসে ওঠা সুশ্মিতা দেবীর ক্ষণিকের প্রতিবিম্ব—দৃঢ় মুঠিবদ্ধ হাত—যেন একটি নীরব সতর্কবার্তা। প্রিয়াঙ্কার মনে হয়, বিধবার সেই শান্ত দৃষ্টির আড়ালে এক গভীর সমুদ্র লুকিয়ে আছে, যা হয়তো খুব শীঘ্রই ঝড় তুলতে পারে।

রাতের অন্ধকারে, প্রিয়াঙ্কার মনে মায়ের সেই দিনের চাহনি বারবার ফিরে আসে। তার মনে হয়, সুশ্মিতা দেবী সবকিছু জানেন, শুধু নীরব থেকে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছেন। প্রিয়াঙ্কা ও আসলামের চুরি করা প্রতিটি মুহূর্ত এখন ভয়ের, উদ্বেগের আর চাপা অনুশোচনার জন্ম দেয়। তাদের গোপন অভিসার কি শেষ পর্যন্ত ধরা পড়বেই? বিধবার দৃষ্টি কি সব রহস্য উন্মোচন করে দেবে? এই প্রশ্নগুলো প্রিয়াঙ্কার রাতের ঘুম কেড়ে নেয়।

(পরবর্তী অধ্যায়ে প্রকাশিত হবে…)

কিন্তু কোন নিষিদ্ধতায় ভেসে যাচ্ছে প্রিয়াঙ্কা, আসলাম আর সুশ্মিতা দেবীর এই ত্রিকোণ সম্পর্ক? সেই উত্তর কি এত সহজে মিলবে?… জানতে হলে অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্বের জন্য।

আপনাদের উৎসাহ পেলে বাকি গল্পও শেয়ার করব। মতামত, অনুভূতি বা পরামর্শ দিতে চাইলে কমেন্ট করুন, অথবা টেলিগ্রামে লিখুন: alfaman12345 কিংবা ইমেইল করুন: [email protected]

আপনাদের প্রতিটি বার্তাই আমাদের নতুন গল্প লিখতে প্রেরণা দেয়।