সকালে উঠে বিছানা ছাড়ার আগে নিয়মিত দ্বীপ তার ফোনটা তুলে ইনস্টাগ্রাম খুলল । নিয়মিত তার ক্রাশ এর ছবিতে হার্ট ইমোজি কমেন্ট করে ফোন চার্জে দিলো । দ্বীপের মা ময়না দেবী প্রতিদিনের মত দ্বীপ আর তার বাবাকে কথা শোনাচ্ছে বাড়ির সমস্ত কাজ তাকে করতে হয় । বাপ বেটা শুধু বসে থাকে । আর পাঁচটা সংসারের মতো এদের সংসারেও এসব লেগেই আছে । দ্বীপ একটা সাধারণ গ্রামের ছেলে । বাবা সাধন দত্ত কাপড়ের ব্যবসা করে বাজারে একটা বসা দোকান আছে তাদের । মায়ের নাম ময়না দত্ত ।
গল্পের মূল চরিত্র দ্বীপ দত্ত । দ্বীপ একমাত্র সন্তান তার বাবা মায়ের । এইবার দ্বীপ মাধ্যমিক দেবে । দ্বীপ ফ্রেশ হয়ে তার রুমে এসে লাইট জ্বেলে পড়ার টেবিলে বসল । আজকে দিনটা অন্ধকার হয়ে আছে মনে হচ্ছে খুব জোরে বৃষ্টি আসবে । দ্বীপ বই খুলে বসল । দ্বীপ পড়াশোনায় খুব যে ভালো তা না । দ্বীপকে বলা যায় একজন এভারেজ ছাত্র । না খুব ভালো না খুব খারাপ , না করেছে কোনোদিন না টপ না করেছে ফেল । বই নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তার মা খাবার নিয়ে এলো ।
ময়না – খেয়ে নে তারপর পড়াশোনা কর ।
দ্বীপ – বাবা কোথায় ?
ময়না – বাজার করতে গেছে ।
বই পাশে রেখে সে খেতে লাগল। দ্বীপ খেতে খেতে ফোনে তার স্বপ্নের রানী কে প্রেমের সহিত ফোনের স্ক্রিনে দেখছে । নাম নীলাঞ্জনা পাল শহরের বড়লোকের মেয়ে । দ্বীপ তাকে ফেইসবুকে প্রথম দেখেছে তারপর বারবার রিকুয়েস্ট পাঠানোর পর অবশেষে তার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করে নীলাঞ্জনা । দ্বীপ নীলাঞ্জনা কে সামনা সামনি কোনোদিন দেখেনি। সে জানে তার স্ট্যাটাস আর নীলাঞ্জনার স্ট্যাটাস এক না । কিন্তু দ্বীপ নীলাঞ্জনাকে খুব পছন্দ করে ফেলেছে । এই নিয়ে দ্বীপের বন্ধুরা তাকে নিয়ে মজা করে । শহরের বড়লোকের মেয়ে সে কি তোকে পাত্তা দেবে ? কবের থেকে মেসেজ করছিস কোনোদিন রিপ্লাই দিয়েছে ? তোর মত হাজারটা ছেলে ওকে রোজ মেসেজ করে । এসব কথা দ্বীপ কানে নেয়না । নীলাঞ্জনার বয়স 18 দ্বীপের থেকে দুই বছরের বড় । এবার সে হাইয়ার সেকেন্ডারি দেবে অর্থাৎ 12th এর বোর্ড এক্সাম ।
দ্বীপ, নীলাঞ্জনার ডিএম এ মেসেজ করল ” Hi ” এরকম প্রায় অনেকদিন থেকে নাকাম চেষ্টা করে যাচ্ছে দ্বীপ । কিন্তু লাভ নেই, নীলাঞ্জনার মতো সুন্দরী মেয়ে কি দ্বীপ কে পাত্তা দেবে? কোনোদিনও না । দ্বীপের রুক্ষ চেহারা একটু পেট বেরিয়ে আছে , নাকের নিচে গোঁফ গজিয়েছে একটু একটু ।
দ্বীপ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলো কিন্তু খুব ভালো ফল করতে পারল না । যার ফলে বাড়িতে অনেক বকা খেতে হয়েছে তাকে । সায়েন্স সাবজেক্ট গুলোয় ভালো নম্বর পাওয়াতে শেষ মেষ সায়েন্স নিয়ে 11th এ ভর্তি হলো দ্বীপ । দ্বীপ অনেক চেষ্টা করল কিন্তু নীলাঞ্জনার কাছে পাত্তা পেলো না । দিনের পর দিন যেতে লাগল। কলেজের ফার্স্ট ইয়ার এ কলকাতার বড় কলেজে ভর্তি হয়েছে নীলাঞ্জনা । নীলাঞ্জনা তার ফেসবুক এ তার সাথে ছেলেদের ফটোও দ্বীপ দেখতে পেলো। দ্বীপ মনে খুব আঘাত পাচ্ছে । নীলাঞ্জনা হয়তো জনেও না যে দ্বীপ নামে কেও একজিস্টও করে । সে হয়ত কোনোদিন মেসেজ রিকুয়েস্ট অপশন এ গিয়ে মেসেজ চেক ও করেনি । দ্বীপ যেনো একজন অ্যানোনিমাস তার কাছে।
দ্বীপের শেষ হৃদয় ভঙ্গন ঘটল সেদিন যেদিন নীলাঞ্জনা একটি ছেলের সাথে ছবি আপলোড দিল লাল হার্ট ইমোজী দিয়ে। দ্বীপের বুকটায় একটা চিলিক মেরে ব্যথা করে উঠল । ছেলেটির নাম রাহুল । রাহুলের বয়স 29 আর নীলাঞ্জনা সবে 19 । দ্বীপ এসব দেখে খুব দুঃখ পেল । রাহুলের প্রোফাইল ঘেঁটে বুঝতে আর সময় লাগল না যে তারা ডেট করছে । নীলাঞ্জনার মতো সুন্দরীকে পটাতে রাহুল অনেক পাপর বেলেছে । আর সব থেকে বড়ো জিনিস যেটা তার কাছে আছে সেটা হলো সে কলকাতার মস্ত বড় ব্যবসায়ী ধীরেন্দ্র চ্যাটার্জীর ছেলে রাহুল চ্যাটার্জি। টাকার তো অভাব নেই। এক্সপেন্সিভ গিফট আর রোজ যদি বাড়ির গেট এ বড়ো গোলাপের গুলোদস্তা আসে নোট সহ , কোন মেয়ে এরকম এফোর্ট দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারে ? আর এতে নীলাঞ্জনার বান্ধবী দেরও অনেক অবদান আছে । সারাদিন রাহুলের প্রসংশা করে করে নীলাঞ্জনার মনে রাহুলের জায়গা করায় তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ন।
যেদিন দ্বীপ জানতে পারল যে তার স্বপ্নের রূপসী অন্যের হয়ে গিয়েছে সেদিন থেকে সে মনমরা হয়ে নিজেকে ঘরে আটকে নিল। বন্ধুদের ডাকেও সে যায়না কোথাও। মা বাবার সাথেও কথা বন্ধ । অনেক বলা সত্ত্বেও দ্বীপ কিছু বলেনা তাদের । হাইয়ার সেকেন্ডারি তে ফেল করল দ্বীপ। কিন্তু ফেল করা সত্ত্বেও তার বাবা মা তাকে কিছু বলেনি । তারাও জানত যে ছেলের কিছু হয়েছে। আর তাদের একমাত্র ছেলে বেশি কিছু বললে যদি কিছু করে বসে তাই তারা আর কিছু বলেনা । এইভাবে আরো 3 মাস কাটল । এখন দ্বীপের বয়স 18+ হঠাৎ একদিন দ্বীপ তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে তার মা বাবার কাছে বসল ।
দ্বীপ – আমি তোমাদের বাধ্য ছেলে হতে পারিনি । ভালো নম্বর এনে না তোমাদের গর্বিত করতে পেরেছি, না অন্য কিছুতে পারদর্শিতা অর্জন করতে পেরেছি । আমি একটা গাধা আমার জন্ম তোমাদের সম্মান নষ্ট করার জন্যই হয়েছে । আমাকে ক্ষমা করো তোমরা ।
ময়না – এসব কি বলছিস তুই ? তোর কি হয়েছে বাবা বল আমাকে ।
ময়না দেবী কাদতে শুরু করল । ছেলেটার মুখের দিকে তাকানো যায়না । ঠিকভাবে খাওয়া দাওয়া করেনা কারো সাথে মিলামিশা করেনা।
সাধনবাবু – ফেল করলে কিছু হয়না, এইবার ভালো করে দিয়ে পাস কর। আর যদি পাস নাও করতে পারিস তাতেও আমাদের কিছু যায় আসে না ।
দ্বীপ – তোমাদের কথা দিচ্ছি মা, বাবা আমি ভালো ফল করে দেখাবো ।
বলে দ্বীপ উঠে গেল। সাধন আর ময়না দ্বীপের দিকে তাকিয়ে রইলো। শেষবারের মত নীলাঞ্জনা আর তার প্রেমিকের জড়িয়ে থাকা ছবিটা দেখে । ফেইসবুক একাউন্ট টা ডিলিট করল দ্বীপ । রাত দিন কোনদিক দিয়ে পার হচ্ছে সেইসব দ্বীপ এর ভ্রুক্ষেপ নেই । শুধু স্নান করার সময় বাইরে আসে দ্বীপ । তিন বেলা খাবার তার মা ঘরে গিয়ে খাইয়ে দিয়ে আসে । ময়না দেবী আর সাধন বাবু ছেলের পড়াশোনায় একাগ্রতা দেখে ভালো মনে তারা কাজ করে । দ্বীপের ফেল করা নিয়ে প্রতিবেশী দের কাছে তাদের ছোটো হতে হয়েছিল কিন্তু তারা সেইসব নিয়ে ভাবে না । দীর্ঘ 7 মাস ধরে নিজেকে একটা ঘরে আটকিয়ে নিলো দ্বীপ ।
আজ আরাইমাস হয়েগেল দ্বীপ হাইয়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষা দিয়েছে । আজ তার রেজাল্ট এর পালা । দ্বীপ ঘরে দরজা বন্ধ করে বিছানায় সুয়ে আছে। বের হচ্ছে না ঘর থেকে ।দ্বীপের সাহস নেই ফোন এ রেজাল্ট দেখার । দুপুর 12টার দিকে বাড়ির সামনে দ্রুত এসে দুটি বাইক থামল । বাড়ির ভেতরে দ্বীপের দুই বন্ধু – কেস্টো আর মতি।
কাকিমা দ্বীপ কোথায় ?
ময়না – সকাল থেকে ওর ঘরে দরজা বন্ধ করে রেখেছে ।
কাকিমা দ্বীপ সারা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে চতুর্থ হয়েছে ।
ময়না দেবী শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়ল । যেখানে ছেলে পাস করলেই তাদের হয়ে যেতো সেখানে কিনা সারা রাজ্যে চতুর্থ । ময়নাদেবী দৌড়ে গিয়ে দ্বীপের রুমের দরজায় কড়া নাড়তে লাগল । বাইরের সবটা দ্বীপ ঘরে থেকে শুনেছে। দরজা খুলে বের হতেই ময়না দেবী দ্বীপকে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করল । দ্বীপের চোখে জল । সে পেরেছে । মনে জেদ নিলে সুই দিয়ে পাহাড় খোদা যায়। সাধন বাবু খবর পেয়ে বাজারে সবার মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করতে লাগলেন। আজকে বাড়িতে নেতারা এসে সংবর্ধনা দিয়ে গেল দ্বীপকে। স্কুলে টিচাররা অবাক হয়ে গেছে দ্বীপের রেজাল্ট দেখে । ফেল থেকে সোজা রাজ্যের চতুর্থ ।
তারপর মাস 2 পরে দ্বীপ পারি দিলো কলকাতার উদ্দেশে । কলকাতায় হোস্টেলে শিফট করিয়ে দিয়ে দ্বীপের মা আর বাবা গ্রামে ফিরল । সেখানে কেমিস্ট্রি তে অনার্স নিয়ে ভর্তি হলো কলেজে । কলেজের সবাই দ্বীপ কে চেনে , রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে সবাই তো চিনবেই । বন্ধু বান্ধব পেতে বেশি দিন লাগল না তার । দ্বীপ আর আগের দ্বীপ নেই । তার একমাত্র লক্ষ্য খুব বড় হওয়ার আর মা বাবার মুখ উজ্জ্বল করা । কলেজের ছুটিতে বাড়ি যায় তারপর আবার হোস্টেলে চলে আসে । হোস্টেলে আর একজন এর সাথে তার ভালো বন্ধুত্ব হয় তার নাম বিশাল , তার রুমমেট । দিনের পর দিন গড়াচ্ছে । দ্বীপ এর স্বপ্ন, সে প্রফেসর হবে সেই লক্ষ্যেই দ্বীপ চলতে লাগল । হোস্টেলে থাকাকালীন কোনো বাজে নেশায় সে পড়েনি শুধু একটা ছাড়া । সেটা হলো বাংলা চটি গল্প পড়া । তার প্রিয় লেখক *মিস্টেরিয়াস গাই” এর এডাল্ট গল্প । যখন শরীরে বেশি উত্তাপ অনুভব করে তখন গল্প পড়ে নিজেকে সন্তুষ্টি দেয় । তার রুমমেটও খুব ভালো ছাত্র যার ফলে দুজনের মধ্যে একটা হেলদি কম্পিটিশন কাজ করে ।
দ্বীপ পড়াশোনায় এত পরিশ্রম করে দেখালো যে এখন তার নামের আগে DR. বসেছে। দীর্ঘ পরিশ্রম আর অঘাত পড়াশোনার পর 29 বছর বয়সে এসে সে সফলতার মুখ দেখতে পেরেছে । কলকাতার একটা বড় কলেজে কেমিস্ট্রির সহকারী অধ্যাপক হিসেবে জয়েন করে দ্বীপ । তার পাশে দ্বীপ 2 টি নিজের কেমিস্ট্রি বই পাবলিশ করেছে যার রোয়ালটি সে পাচ্ছে । দ্বীপ ই কলেজের সব থেকে কমবয়সী অধ্যাপক । তার সহ অধ্যাপক অধ্যাপিকারা তার বয়স যে 29 বছর বিশ্বাস ই করে উঠতে পারছেন না । কম বয়সে এত সাফল্য পেয়ে তার চেহারায় গ্লো এসেছে। দ্বীপ তার মা আর বাবা কলকাতায় একটা ভালো সোসাইটিতে শিফট হয়েছে। সদ্য চাকরি পেয়েছে তাই এখন কিছু বছর ফ্ল্যাট নিয়েই থাকবে সপরিবার। সাধন বাবু দোকান ভাড়ায় লাগিয়ে দিয়ে চলে এসেছেন।
মাঝে মাঝে দ্বীপের মা বাবা কলকাতায় বোওর হয়ে গেলে মাস দু একের জন্য আবার গ্রামে চলে যান । একজন ইয়াং অধ্যাপক কলেজে জয়েন করায় কলেজের ছাত্রী মহলে একটা হিসফিস ছড়িয়েছে । এখন ভারতে ফেইসবুক থেকে ইনস্টাগ্রামের প্রতি বেশি ক্রেজ তাই এতদিন পর দ্বীপ ইন্সটাগ্রামে তার নতুন প্রোফাইল ক্রিয়েট করল। যখন ইনস্টাগ্রাম এ আইডি বানাচ্ছিল তখন অতীতের কথা কিছু কিছু মনে আসছিল ভেবেছিল এই সোশ্যাল মিডিয়াতে আর আসবে না কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তাকে চলতে হবে । আইডি বানানোর কিছুদিনের মধ্যেই কিভাবে যেন কলেজে সবাই জেনে গেলো। কলেজের যত মেয়ে আছে সবাই দ্বীপ কে ফলো করা শুরু করেছে। দ্বীপ ও তো একটা পুরুষই এত সুন্দর সুন্দর মেয়েদের দেখে তার মন টলমলিয়ে যায় কিন্তু সে অধ্যাপক তাই নিজের ওজনটা বজায় রাখে।
একটানা 7 মাস যাবত সে কলেজের অধ্যাপক রূপে কাজে নিযুক্ত । মা, বাবা গ্রামে গিয়েছে আজ 4দিন । 2 মাস থাকবেন তারা । রাতে দ্বীপ সুয়ে সুয়ে – মিস্টেরিয়াস গাই এর “অবৈধ” নামক চটি গল্প পড়ছে আর পেন্টের ভেতর বাড়ায় ডলছে । বাইরের সমাজে অধ্যাপক হলেও পুরুষদের একটা কামের লালসা রয়েছে । যতই সমাজে ভদ্র পুরুষ হোকনা কেনো মেয়েদের দিকে আকর্ষণ আসবেই । এইভাবেই ঈশ্বর পুরুষ আর মহিলাদের এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছে । তারা একে অপরের পরিপূরক । সে যখন লেকচার নেয় তখন মেয়েরা তার দিকে তাকিয়ে থাকে । সেই চাহনি একজন ছাত্রের শিক্ষকের প্রতি চাহনি না । ছাত্রীরা দরকার ছাড়াও ডাউট জিজ্ঞাসা করে বার বার। সারা জীবন একটা মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট থাকা দ্বীপ, যেখানে সে কারো কাছ থেকে কোনোদিন পাত্তাও পায়নি , এখন সে কলেজের মোস্ট বিলাভেড ক্রাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলেজ থেকে 3:30 টায় লাস্ট লেকচার নিয়ে বের হয় দ্বীপ । অটো ধরে ফ্ল্যাট এ যায় তারপর রুমে এসে স্নান সারে । সন্ধ্যায় তার বেস্ট ফ্রেন্ড বিশাল এর সাথে জিম এ যায় । বিশাল এখন কর্পোরেট এ আছে । বিশাল এর আগে থেকেই কর্পোরেট এ যাওয়ার ই ইচ্ছে ছিল । দুজনের প্রফেসন আলাদা হলেই কি তারা রোজ একবার দেখা করেই । দুজন কলকাতাতেই থাকে । বিশাল নিজে বাড়ি করেছে কলকাতার একটু জন জঞ্জাট থেকে বাইরে। এই জিম এ আসা শুরু হয় বিশাল এর সাথেই। নিয়মিত জিম এ আসার ফলেই শরীরে একটা গ্লো এসেছে দ্বীপের । দ্বীপের হাইট 5.8 ইঞ্চি । আজকে দ্বীপ ওয়েট লিফট করবে । কোমরে বেল্ট লাগিয়ে নিল তখনই –
হেলো স্যার !
দ্বীপ আর বিশাল একসাথে পেছনে তাকালো । দ্বীপের কলেজের ফোর্থ সেমিস্টার এর ছাত্রী ময়ূরাক্ষী চ্যাটার্জি । হাতে বোতল ওভারসাইজড টিশার্ট আর স্কিন টাইট লেগিনস পরা। তার চোখ দ্বীপের টাইট টিশার্ট এর মধ্যে ফুলে থাকা বুক আর মাসালস এর দিকে। সে একটু ওভার একসাইটেড। এই রূপে সে তার অধ্যাপক কে কোনোদিন দেখেনি । সবসময় দ্বীপ কে শার্ট পেন্ট এ দেখে অভ্যেস।
দ্বীপ – হেলো !
ময়ূরাক্ষী – স্যার আপনি এখানে জিম করেন ?
দ্বীপ – হ্যা ।
ময়ূরাক্ষী – ও আচ্ছা । আমিও এখানে আজকে থেকে স্টার্ট করেছি ।
দ্বীপ – ওহ । ঠিক আছে যাও ।
ময়ূরাক্ষী মুখ ঝুলিয়ে চলে গেলো ।
বিশাল – এরকম বিহেভ করলি কেনো ?
দ্বীপ – তো আর কিভাবে করব ?
বিশাল – খুব সুন্দর মেয়েটা । তোর সাথে মানাবে ভাই । তোর দিকে যেইভাবে তাকিয়ে ছিল হা হা ।
দ্বীপ – ফট সালা । এখন কি স্টুডেন্ট দের সাথে প্রেম করবো ? তোর ভালো লাগলে তুই করগা।
বিশাল – আমার অলরেডি চলছে ভাই ।
দ্বীপ – কি ? কবে ? কার সাথে ? কিভাবে ?
বিশাল – আরে ভাই আস্তে । 1 বছর থেকে টেক্সট এ চলছিল। 2 মাস যাবত কথা বলার পর মনে হলো শি ইস দা ওয়ান ।
দ্বীপ – বাহ্ ভালো । এতদিন থেকে চলছে বললি না তো ।
বিশাল – আর প্রথমে তো জাস্ট ক্যাজুয়ালি কথা হচ্ছিল। তারপর হঠাৎ বলল দেখা করবে । তারপর হয়ে গেল ।
দ্বীপ – তোদের ই দিন।
বিশাল – তুই কি গে নাকি বাল ? সালা সামনে থেকে মেয়েরা এপ্রচ করছে আর তুই ?
দ্বীপ – এখন স্টুডেন্টস দের সাথে প্রেম করবো নাকি ?
বিশাল – সামনে থেকে লাইন দিচ্ছে তোকে। ও যখন তোকে শিক্ষক হিসেবে দেখছে না তাহলে তুই কেনো দেখছিস ?
দ্বীপ – কি বলছিস ?
বিশাল – তোর দাড়া হবে না বুঝেছি ।
হয়ে গেছে আজকে জিম করা । জিম করার মানসিকতা টাই আজকে শেষ হয়ে গেল । চারপাশে সবাই জিম এ ঘাম ঝরাচ্ছে এর এদিকে এই দুইজন মেঝেতে বসে লাভ লাইফ ডিসকাস করছে ।
দ্বীপ – ভাই আস্তে কথা বল মেয়েটা এদিকেই আছে শুনতে পেলে কলেজে গসিপ ছড়াবে ।
বিশাল হাসতে লাগল । দ্বীপ ময়ূরাক্ষীর দিকে তাকালো দেখল যে সে এদিকেই তাকিয়ে আছে ।
দ্বীপ – আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলো তো ।
বিশাল – শি লাইকস ইউ ।
ময়ূরাক্ষী ফোর্থ সেমিস্টার এর ছাত্রী কেমিস্ট্রি বিভাগের। ক্লাস নেওয়ার সময় দ্বীপ লক্ষ করেছে যে তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পাল্টে যায় তার সাথে কথা বলার সময়। দ্বীপের সাথে কথা বলার সময় তার মুখে একটা আলাদা গ্লেস থাকে । ময়ূরাক্ষী দেখতে খুব সুন্দর হালকা চাবি ফিগার 5.5 ফুট উচ্চতা ঘন কালো চুল । মাঝারি বুক আর জিন্স পড়লে পাছাটা বেশ বড়ো আর ভারী দেখায় । একে এখনি চাইলে দ্বীপ হাসিল করতে পারে কিন্তু শিক্ষক বলে নিজেকে সংযত রাখে সে । দ্বীপ মাঝে মাঝে লেকচার নেওয়ার সময় দুজনের আই কন্টাক্ট ও হয়ে যায় বার বার । তখন ময়ূরাক্ষী লজ্জায় অন্য দিকে তাকিয়ে ফেলে । এসব দেখে দ্বীপ মনে মনে হাসে কিন্তু বাইরে কিছু জাহির করে না । ময়ূরাক্ষী অনেক খোজ লাগিয়ে জানতে পারে তারপর একই জিম এ জয়েন করে ময়ূরাক্ষী । রাত 9টায় রুমে এসে আবার স্নান সারলো দ্বীপ ।
ময়না দেবী – বাবা কি করছিস ?
দ্বীপ – মাত্র জিম থেকে এসে ফ্রেশ হলাম ।
ময়না দেবী – বিশাল গিয়েছিল ?
দ্বীপ – হ্যা দুজনেই গিয়েছিলাম ।
ময়না দেবী – আচ্ছা । কি খাবি ? ভাত আছে তো ?
দ্বীপ – হ্যা মা সব আছে তোমার চিন্তা করতে হবে না ।
ময়না দেবী – আচ্ছা বেশ ।
দ্বীপ – বাবা কোথায় ?
ময়না দেবী – তোর বাবা বাড়িতেই আছে ।
দ্বীপ – ওইদিকে সব ঠিকঠাক তো ?
ময়না দেবী – হ্যা ।
দ্বীপ – আচ্ছা ঠিক আছে ।
ময়না দেবী – রাখছি । খেয়ে নিস ।
দ্বীপ – হ্যা । রাখো ।
দ্বীপ খাবার নিয়ে বসে ফোন ঘাটছে । মেসেজ রিকুয়েস্ট সচরাচর দ্বীপ চেক করে না । আজ তার কি মনে হলো কে জানে, সে চেক করল । দুনিয়ার মেসেজ । এদের কি আর কেনো কাজ নেই ? কলেজের মেয়েদের ট্রাক ভেঙ্গে পড়েছে দ্বীপ এর ডিএম এ । বিশাল এর ফোন –
বিশাল – স্বপ্ন দেখছিস নাকি ওর ?
দ্বীপ – হ্যা খেতে খেতে স্বপ্ন দেখছি ।
বিশাল – এখন ভাত খাচ্ছিস তার পর তো অন্য কিছু খাবি
দ্বীপ – তোর মত কপাল কি আর আমার আছে ?
বিশাল – কালকে কলেজ নেই ?
দ্বীপ – আছে ।
বিশাল – ঠিক আছে পরে কথা বলি তোর বৌদি ফোন করছে ।
দ্বীপ – ঠিক আছে গুডনাইট ।
সঙ্গে থাকুন …