রাত শবনমী (পর্ব-৫)

আগের পর্ব

ঘন্টা দুয়েক পর বাস যাত্রাবিরতি দিলো যাতে করে যাত্রীরা চা নাশতা বা রাতের খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ফ্রেশ হয়ে নিতে পারে। এক এক করে বাসের সব যাত্রীই নেমে পড়লো। শাওন বসে আছে বাসের একদম পেছনের দিকের সিটে। বাসের আর সব যাত্রীরা নামতেই ও ইশরাতের সিটের কাছে এলো। ইশরাত তখন অঘোরে ঘুমোচ্ছে।

শাওন: এই যে ম্যাডাম, বাস যাত্রাবিরতি দিয়েছে ২০ মিনিট। সব যাত্রী নেমে যাচ্ছে। আপনি ঘুমোবেন? নাকি হোটেল থেকে কিছু খেয়ে নেবেন?
শাওনের ডাকে ঘুম ভাঙলো ইশরাতের। চোখ মুছতে মুছতে ও বললো, “নাহ খাবোনা। কিন্তু….”
শাওন: কিন্তু, কি?
ইশরাত: আমার না একটু ওয়াশরুমে যেতে হতো?
শাওন: বেশ তো। যে হোটেলের সামনে বাস দাঁড়িয়েছে, ওটাতেই বেশ ভালো মানের ওয়াশরুম আছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আসবার সময় দেখেছিলাম।

ইশরাত একটু হেজিটেট ফিল করছিলো। শাওন বুঝতে পারলো ওর ইতস্তত করবার কারণ।
শাওন: চলুন। আমি আপনার সাথে যাচ্ছি। আপনি ফ্রেশ হয়ে নিয়েন। ততক্ষণ আমি বাইরে দাঁড়াবো।

এরপর ওরা দুজনে বাস থেকে নেমে পড়লো। নামার সময় ইশরাত ওর হাতব্যাগটাও সাথে করে নিলো। তারপর শাওনকে ওয়াশরুমের বাইরে দাঁড় করিয়ে ও ভেতরে ঢুকলো। ওয়াশরুমে বেশ খানিকটাই সময় নিচ্ছে ইশরাত। মিথ্যে বলবো না, এই মুহুর্তে শাওনের একটু বিরক্তই লাগছিলো যেন। এই মাঝরাতে ঢুলু ঢুলু চোখে অন্যের বউয়ের ব্যাগ হাতে করে লেডিস টয়লেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা! উহহহ…. ব্যাপারটা খুব একটা আনন্দদায়ক নয় নিশ্চয়ই!…

পরক্ষণেই অবশ্য মনের মাঝে একটা ফ্যান্টাসি কাজ করতে শুরু করলো শাওনের। কোথায় যেন ও পড়েছিলো যে, মেয়ে মানুষের পেশাব করতে নাকি খুবই কম সময় লাগে। ছেলেদের চাইতেও কম। এদিকে ইশরাত ওয়াশরুমে ঢুকেছে তাও প্রায় ৫-৬ মিনিট হয়ে গেলো। তবে কি ইশরাত পায়খানা করছে? সালোয়ার আর প্যান্টি খুলে বসে নিজের চ্যাগানো পোঁদখানাকে মেলে ধরেছে ও? তারপর বাথরুমের প্যানের উপরে দু পা ফাঁক করে বসে….

উফফফ!! আর ভাবা যাচ্ছেনা। বাঁড়াটা ভীষণভাবে গর্জে উঠছে শাওনের।

আরও মিনিট দুয়েক পরে টয়লেটের দরজা খুলে গেলো। বেরিয়ে এলো ইশরাত। মুখে চোখে পানি দিয়েছে ও। চুলটাকেও ক্লিপ দিয়ে ভালো করে বেঁধে নিয়েছে। লিপস্টিকও লাগিয়েছে নতুন করে। আর যেটা করেছে সেটা হলো গায়ে সোয়েটার চাপানোর পাশাপাশি হিজাবটাও পড়ে নিয়েছে ও। অবশ্য ও হিজাব আর সোয়েটার পড়েছে বাসের ওই বদ যাত্রীদুটোর কারণেই।

কামিজের উপরে সোয়েটার জড়ানো দেখে শাওনের মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এতোক্ষণ ধরে দিব্যি ও এই রসবতীর শরীরের যৌনসুধা উপভোগ করছিলো। কিন্তু, এই সোয়েটারে ওর সেই রস আস্বাদনে বাঁধা পড়লো। শাওন জিজ্ঞেস করলো, “কি ব্যাপার সোয়েটার পড়ে এলেন যে? গরম লাগবে তো.. তাছাড়া, কামিজেই তো বেশ লাগছিলো।”
ইশরাত: আসলে আমার না একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছিলো। তাই সোয়েটার টা পড়ে নিলাম। আপনার ঠান্ডা লাগছেনা বুঝি?

শাওন মনে মনে বললো, এমন সেক্সি একটা মাল হাতের এতোটা কাছে আছে। ওর গতরের উত্তাপে কি আর ঠান্ডা লাগে! মুখে বললো, “না। আমার তো বরং একটু গরম গরমই লাগছে। আচ্ছা, চলুন কিছু খাওয়া যাক।”
ইশরাত: না না… এখন আর কিছু খাবো না।
শাওন: আচ্ছা ভারী কিছু না খেলেন। এক কাপ কফি তো খাওয়াই যায় নাকি। আর সেই ফাঁকে নাহয় আপনার হাতব্যাগটাও চেক করে নেবেন… সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না….
ইশরাত: কেন? আপনি বুঝি চোর? হিহিহি…
শাওন: (হালকা লজ্জা পেয়ে বলে) না.. তা নই…
ইশরাত: আচ্ছা বেশ চলুন। কফি খাই। কিন্তু, আমার একটা শর্ত আছে।
শাওন মনে মনে ভাবে, এমন সুন্দরী মহিলার শর্তে আমি কারাবরণ করতেও রাজি আছজ। মুখে বলে, “আবার শর্ত কেন??… আচ্ছা, বেশ! কি শর্ত শুণি?
ইশরাত: এবারে বিলটা কিন্তু আমি দিবো।
শাওন হাসতে হাসতে বলে, “জো হুকুম ম্যাডাম…. হাহাহা…..”

হোটেলে বসেই কফি খেলো ওরা। তারপর, বাস ছাড়বার সময় হতেই সুপারভাইজার আবার হাঁক ছাড়লো। অন্যান্য যাত্রীদের মতোন ওরা দুজনেও বাসে চাপলো। শাওন বাসের পেছনের সিটের দিকে পা বাড়াতে গেলে এবার ওকে থামালো ইশরাত।

ইশরাত: আপনার নিশ্চয়ই পেছনের সিটে বসে ঘুম হচ্ছেনা তাইনা…? রাস্তাটা একদম ভালোনা। ঝাঁকি লাগছে নিশ্চয়ই…?
শাওন কিছুটা ইতস্তত করে বললো, “মিথ্যে বলবোনা… ঝাঁকি একটু লাগছে বৈকি… তবে সমস্যা নেই…। আমি ম্যানেজ করে নেবো…”
ইশরাত: না না শুধু শুধু আপনি কষ্ট করবেন কেন? আপনি বরং আমার পাশেই বসুন।
শাওন: আপনার কোনো সমস্যা হবে না তো?
ইশরাত: নাহ সমস্যা হবেনা। আর তো মাত্র কিছুটা পথ। আমি আর ঘুমোবো না এখন।
শাওন: বেশ…. (এই বলে শাওন ইশরাতের পাশের সিটে বসে পড়লো।)

ঘুমোবো না বললেও বাস কিছুদূর যেতেই আবার ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো ইশরাত। এই সুযোগে মোবাইলের ক্ষীণ আলোতে শাওন ঘুমন্ত শবনমের শরীরের শোভা অবলোকন করে নিলো একবার। খুব বেশি কিছু দেখবার নেই যদিও। ওই যতটুকু দেখা যায় আরকি। ইশশশ!! ঘুমন্ত অবস্থায় কি মায়াবী লাগছে ভদ্রমহিলার মুখখানি! ওকে দেখবার পাশাপাশি বুকভরে ইশরাতের শরীরের ঘ্রাণও নিলো শাওন। এভাবে আরও আধা ঘন্টার মতোন বাস চললো। ঘড়িতে রাত তখন প্রায় দুটো বাজতে চলেছে। এসময় হঠাৎ করেই নির্জন এক জায়গায় বিকট একটা শব্দ করে বাস থেমে গেলো। শাওনের নিজেরও তন্দ্রা মতোন এসে গিয়েছিলো। বাসের সেই মারাত্মক শব্দে আর আশেপাশের যাত্রীদের কোলাহলে জাগা পেয়ে গেলো ও। হ্যা, বাস পুরোপুরি থেমে গেছে। বিকট শব্দে ইশরাতেরও ঘুম ভেঙে গেছে। আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুলতেই ও দেখলো শাওন ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। ইশরাতের জিজ্ঞাসু দৃষ্টি লক্ষ্য করে শাওন উত্তর দিলো, “বাসে আবার কিছু একটা প্রবলেম হয়েছে। ড্রাইভার, সুপারভাইজার নিচে নেমেছে কি হয়েছে তা দেখবার জন্য।
ইশরাত: আবার কি হলো বাসের! (ওর চোখেমুখে উৎকন্ঠা।)

ড্রাইভারের সাথে বাসের কতিপয় উৎসুক যাত্রীও নিচে নেমে গিয়েছিলো। তাদের মধ্য থেকে একজন উপ্প্রে এসে জানালো যে বাসের ইঞ্জিনে সমস্যা হয়েছে। ড্রাইভার জানালো মেকানিক ডাকতে হবে। তবে এমন একটা জায়গায় বাসের ইঞ্জিনের সমস্যা হয়েছে যে আশেপাশের ত্রিসীমানার মধ্যে কোন জন মানুষ নেই। একদম নির্জন একটা জায়গায় বাস পুরোপুরি থেমে গেছে। একটু পরে সুপারভাইজার জানালো যে, আশেপাশে ৪-৫ কিলোর মাঝে কোনো মেকানিকের দোকান নেই। তবুও, ওরা চেষ্টা করছে মেকানিক ম্যানেজ করবার। আর এখন যে পরিস্থিতি চলমান তাতে দুই একটা ট্রাক ছাড়া রাস্তায় তেমন কোনও গাড়িও চলাচল করছে না, যে যাত্রীরা অন্য বাসে চাপবে…

ইশরাত চোখেমুখে ভয়ার্ত দৃষ্টি মেলে বললো, “ইশশ কি কুক্ষণেই যে আজ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম..”

শাওন ওকে দু:চিন্তা মুক্ত করবার জন্য স্মিত হেসে বললো, “এভাবে বলছেন কেন? আজ এই বাসে চেপেছিলেন বলেই না আপনার সাথে আমার পরিচয় হলো। আর দেখুন না, কেমন একটা স্মরণীয় জার্নি কাটছে আমাদের…”
ইশরাত নাক ফুলিয়ে বললো, “স্মরণীয় না ছাই। এই মাঝরাতে এমন এক ধু ধু জায়গায় গাড়ি নষ্ট হলো, আর আপনি কিনা এটাকে স্মরণীয় বলছেন?”
শাওন: খারাপের মাঝেও তো ভালো কিছু লুকিয়ে থাকে ম্যাডাম। সেটাকে খুঁজে নিতে হয়। Be Optimistic….

ঘড়িতে এখন সোয়া ২ টো। যাত্রীদের চেঁচামেচিতে মিনিট পনেরোর মাঝে কোথা থেকে একজন মেকানিকের বন্দোবস্ত হলো ঠিকই। কিন্তু, মেকানিক যা বললো তাতে যেন যাত্রীরা সবাই আরও বিমর্ষ হয়ে গেলো। মেকানিক জানালো যে, ইঞ্জিনের খুবই জটিল কি একটা সমস্যা হয়েছে। এটা সারাতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে। কত সময়? তারও কোনো গ্যারান্টি নেই…. ২ ঘন্টাতেও হতে পারে আবার ৪-৫ ঘন্টাও লাগতে পারে। তবে দু ঘন্টার আগে কোনোভাবেই পসিবল না।

মেকানিকের এই কথা শুণে ইশরাত খুব চিন্তায় পড়ে গেলো। কিসের জন্যে যে এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতে ও এক্সাম দিতে যাবে বলে মন:স্থির করেছিলো… নিজের হটকারি সিদ্ধান্তের জন্য নিজেকেই দুষতে লাগলো ও।

এদিকে ইশরাতকে চিন্তিত দেখে শাওন বললো, “আপনি ঘাবড়াচ্ছেন কেন ম্যাডাম? আমি তো আছি.. শুণুন, আমার খুব কাছের একটা ফ্রেন্ডের বাসা এদিকেই। এই ধরুন ১ থেকে ১.৫ কিলোর মতোন পথ। এই শীতের রাতে কুয়াশার ভেতরে এমন একটা নির্জন জায়গায় অপেক্ষা না করে, আপনি চাইলে আমরা ওখানেই আজ রাত টা থাকতে পারি।”

“কি বলছে লোকটা! চেনা নেই, জানা নেই এই রাতে একটা অপরিচিত লোকের বাড়িতে চলে যাবে ও! সেটা কি আদৌ সেফ হবে?” – মনে মনে ভাবে ইশরাত।
শাওনও বুঝতে পারে ইশরাতের দু:শ্চিতার কারণ। ও বলে, “আপনি চিন্তা করছেন কেন? ওর বাসাটা ফ্যামিলি বাসা। আমার বন্ধু বিবাহিত। ভাবী, বাচ্চা সবাই আছে। আপনি নিশ্চিন্তে যেতে পারেন।”

শাওনকে কি উত্তর দিবে তা মনে মনে ভেবে পাচ্ছিলো না ইশরাত। “না, লোকটা মোটেই মন্দ না। এর মধ্যে যতটুকু কথা হয়েছে বেশ ডিসেন্ট এবং ভদ্রলোক বলেই মনে হয়েছে ওনাকে। কিন্তু, তাই বলে মাত্র কয়েক ঘন্টার পরিচয়ে এভাবে ওনার বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে রাত্রীযাপন করাটা কি ঠিক হবে? যদি কোনও বিপদ হয়?” – ইশরাতের অবচেতন মন শাওনের প্রস্তাবে সায় দেয় না।

নিজের হাত ঘড়িটা একবার দেখে নেয় ইশরাত। ঘড়িতে সবে আড়াইটে বাজে। শীতের রাত। সকালের আলো ফুটতে এখনো অনেক সময় বাকি। রাত যত বাড়ছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে শীতও ততই বাড়ছে। নির্জন এই জায়গায় সত্যিই এখন ভীষণ শীত করছে ওর। এক সোয়েটার ছাড়া অন্য কোনো শীতের পোশাকও সঙ্গে করে আনেনি ইশরাত। আর এই নির্জন জায়গায় এমন কুঁয়াশা পড়ছে যে, হাত পা রীতিমতো কাঁপুনি দিচ্ছে তাতে। ইশরাতের আবার সর্দির ধাত আছে। এক্ষেত্রে রাতটা কোনো এক চার দেয়ালের মাঝে কাটাতে পারলে সত্যিই ভালো হতো। কিন্তু, তবুও এক রাতের পরিচয়ে অচেনা কারো বাসায় যেতে মন সায় দিচ্ছিলো না ওর মোটেও।

ইশরাতকে চুপ থাকতে দেখে দেখে শাওন জিজ্ঞেস করলো, “কি ভাবছেন?”
ইশরাত: না, কিছু না…
শাওন: আমি বলি কি ভাবছেন? ভাবছেন যে, এক রাতের এই সামান্য পরিচয়ে কারো সাথে এভাবে যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা… তাই না…?

আশ্চর্য লোকটা ওর মনের কথা পড়ে ফেললো কি করে? ইশরাত কিছুটা ইতস্তত করে বললো, “না, তা নয়.. ভাবছিলাম, এত রাতে কাউকে এভাবে ডিস্টার্ব করাটা কি ঠিক হবে?”

শাওন: ওহ এই কথা…. আরে জয়ন্ত আমার ছোটবেলার বন্ধু। একদম জিগরি। কোনও সমস্যা হবে না আপনার। আর ওর বাসা এখান থেকে বড়জোর ১.৫ কিলো। মানে ওই দশ মিনিটের পথ। বাসায় গিয়ে আপনি কিছুক্ষণ রেস্ট করে নিবেন। চাইলে, ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুমও দিয়ে দিতে পারেন। তারপর সকালে আমরা একসাথেই ঢাকার দিকে রওনা দিবো.. আপনাকে আপনার বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দিয়ে তবেই আমি আমার বাসায় যাবো। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না….

ইশরাত তবু চুপচাপ থাকে। ওকে চুপ থাকতে দেখে শাওন বলে, “এতো ভাববার কিছু নেই ম্যাডাম। বন্ধু হিসেবে আপনাকে কথাটা বলছিলাম। বাকি যাওয়া না যাওয়া আপনার ব্যাপার। তবে আমি কিন্তু সাথে করে কোনো শীতের পোশাক আনিনি। এই শীতের মাঝে এভাবে বাইরে বাইরে থাকাটা….”

ইশশশ!! সত্যিই তো! লোকটা যে রীতিমতো শীতে কাঁপছে। ওনাকে এভাবে আটকে রাখাটা মোটেও ঠিক হচ্ছেনা ওর।
ইশরাত: এ মা! আপনি যে শীতে কাঁপছেন! আপনি যান না আপনার বন্ধুর বাসায়। এভাবে কুয়াশা আর শীতের মাঝে কষ্ট পাচ্ছেন তো….
শাওন: এটা কি বললেন ম্যাডাম? আপনাকে এই অবস্থায় একা ফেলে রেখে আমি চলে যাবো? তাই কি কখনো হয়! এতোটাও বিবেকহীন ভাববেন না আমায়….

শাওনের কথা শুণে এবারে সত্যিই দ্বিধায় পড়ে যায় ইশরাত। আশেপাশটা একবার ভালো করে দেখে নেয় ও। বাসে যে লোক দুটো ওকে নিয়ে বাজে কমেন্ট করেছিলো, ওদেরকেও খানিকটা দূরে দেখতে পায়। দূর থেকেও কেমন যেন একটা শ্যেনদৃষ্টিতে ওর পাছার দিকেই তাকিয়ে আছে দুজনে। তা দেখে ইশরাত নিজের কামিজটাকে ঠিক করে নেয়।

ওই লোক দুটোর খানিক পাশেই আরও দুটো লোককে দেখে ইশরাত। এই লোক দুটোও যেন ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। এই লোক দুটো দেখতেও যেন যেন ভয়ঙ্কর। ঠিক যেন গুন্ডা টাইপের চেহারা।

ইশরাতের দিকে কেমন যেন হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে লোক দুটো। যেমন হরিণ শাবকের দিকে ক্ষুধার্ত সিংহ তাকিয়ে থাকে, ওদের চাহুনিও ঠিক তেমন। ইশরাত আড়চোখে লোক দুটোর দিকে বেশ কয়েকবার তাকিয়ে দেখলো।

নাহ!! ওরা কেন জানি এখনো ওর দিকেই তাকিয়ে আছে আর নিচু স্বরে নিজেদের মধ্যে কি যেন বলাবলি করছে।

সব মিলিয়ে ইশরাতের কাছে ভালো ঠেকলো না ব্যাপারটা। ও মনে মনে ভাবলো, এই অসভ্য জানোয়ার গুলোর নজরের সামনে থেকে ওদের চোখের বলৎকার হওয়ার চেয়ে, শাওন নামের ভদ্রলোকের সাথে ওনার ফ্রেন্ডের বাসায় যাওয়াটাই ভালো হবে। তাই দোনোমনা করতে করতেও ও শাওনকে বলে বসলো, “বেশ! চলুন তবে….।”

কেমন লাগছে আমার গল্প রাত শবনমী?
কেমন লাগছে গল্পের নায়িকা ইশরাতকে?
আচ্ছা আপনারা কি ভেবেছিলেন বলুন তো, বাসেই ইশরাতের সাথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে? তাই না?
না মশাই, বাসে এতোসব যাত্রীদের মাঝে এসব ঘটনা কি করে আর ঘটে বলুন! তবে হ্যা, ইশরাতের এইযে অন্যের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত, এই সিদ্ধান্তটা কিন্তু সঠিক ছিলোনা.…
কেন?
সেটা হয়তো সামনের পর্বেই বুঝতে পারবেন আপনারা।

আর হ্যা, আপনাদের কমেন্ট কিন্তু আমাকে উৎসাহিত করে, অনুপ্রাণিত করে। সেই সাথে ইমেইল এবং টেলিগ্রামেও আছি আপনাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে। গল্প সম্পর্কে আপনাদের ভালোলাগা, মন্দ লাগা সহ যেকোনো মতামত জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। [email protected] এবং @aphroditeslover