রাজ-কাহিনী – পর্ব ২ (Raj Kahini - 2)

গলায় একটা জ্বালা। আর অদ্ভুত। পারছে না। কিছুতেই বিঘ্নকের গলায় জোর দিয়ে চাপতে পারছে না চন্দ্র।

“আমার ওপর থেকে উঠে পাশে চুপ করে বসো।“

বাধ্যভাবে আদেশ পালন করল চন্দ্র। উবু হয়ে পাশে বসল সে। মাথা কাজ করছে না তার। কি এসব ? কেন করছে সে ? ততক্ষণে গা ঝেড়ে উঠে বসেছে বিঘ্নক। চন্দ্রের পাশে ঘন হয়ে বসে, একটা ক্রূর হাসি দিল সে। “আচ্ছা প্রিয়, বল ত, কেন তোমার মনে হয় আমি তোমার রাজধানী দখল করতে পারব না ?”

“আমাদের হাসনপুরের কুলদেবীর জাদুর জন্যে। আমাদের রাজধানীর সীমানা কেউ ডিঙোতে পারে না। আমাকে বন্দী করে যদি আপনি ভাবেন পিতাকে হুমকি দেবেন, জেনে রাখুন আপনি দেবীর আশীর্বাদে আমায় আটকে রাখতে পারবেন না। কোনো আশাই নেই আপনার জয়ের।“

“যদি আমি পাঁচদিন অপেক্ষা না করি ?” মুচকি হাসল বিঘ্নক।

চমকে গেল চন্দ্র। পাঁচদিনের কথাটা ত সে বলে নি। মানে এ লোকটা জানে ? আগে থেকেই যথেষ্ট অধ্যয়ন করে এসেছে হাসনপুরের জাদু নিয়ে ?

“তাহলে রাজা রাজী হবেন না, আমি নিশ্চিত। আমার জীবনের চেয়ে রাজ্যের স্বাধীনতার দাম অনেক বেশী। মেরে ফেলতে পারেন আমায় পাঁচদিনের আগেই।“ দৃপ্তকণ্ঠে বলল চন্দ্র।

হা হা করে হেসে উঠল বিঘ্নক। আগের মতন, আবার খরখরে হাত খানা রাখল চন্দ্রের চিবুকে। “তোমার মতন একটা নরম ছেলের গলায় এসব তেজ কি মানায়, প্রিয় ! মৃত্যু ? যদি আমি জল্লাদকে বলি মৃদু তীব্রতার অত্যাচার শুরু করতে, তুমি কি একটা রাত তা-ই সইতে পারবে ?”

মনের ভয় মুখে প্রকাশ হতে দিল না চন্দ্র, “আপনার ইচ্ছা। হাসনপুর আপনার হবে না।“

“সে দেখা যাবে।“ উঠে দাঁড়াল বিঘ্নক। “কিন্তু দেখো, তুমি কি করেছ আমার এই সুন্দর কক্ষকে। তোমার আহারের সমস্ত আয়োজন নিজেই এভাবে ফেলে দিলে ! এখন কি করা ! এই যে পানীয় গড়াচ্ছে, তা-ই খাও।“

“জিহ্বা সংযত করুন মীহনরাজ। আপনি কোনো কুকুর নয় একজন রাজপুত্রের সাথে কথা বলছেন।“

“ভারী রাজপুত্র। কুকুরই। এসো এদিকে, চাটো। চাটো বলছি।“

আবার সেই গলায় জ্বলন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চন্দ্র দেখল, সে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে এসেছে পাত্রাধার থেকে গড়ানো তরলের কাছে। প্রাণপণ চেষ্টা করল উঠে আস্তে, পারল না। ওর জিভ বেরিয়ে এল। চন্দ্র দেখল সে মাটিতে গড়ানো পানীয় কুকুরের মতন চেটে খাচ্ছে। অপমানে চোখে জল এল তার, “কি করেছিস তুই, শয়তান ?” টুপ করে ফোঁটা গড়িয়ে গেল মাটিতে, সেটাও চাটতে লাগল ও।

তৃপ্তির চক্ষে দেখছিল বিঘ্নক। হাসি ফুটল তার মুখে। হয়েছে, হয়েছে, এবার হাঁটু গেড়ে আমার পায়ে বসো ত।“

“কক্ষনো না। কিছুতেই না। কি বশীকরণ করছিস তুই-“ বলতে বলতেই বিঘ্নকের পদতলে বসল সে। বিঘ্নক নিজের দু হাত পেছনে নিয়ে, সম্রাটের ভঙ্গিতে দাঁড়াল। “ভাষা সংযত কর, প্রিয়। নিজের মালিক কে অপমানের জন্য ক্ষমা চাও। পায়ে চুমু খাও।“

“কিছুতেই না।“ গলা জ্বললেও প্রাণপণ ঠেকালো নিজেকে চন্দ্র।

“চাও বলছি।“ বিঘ্নকের জোর কণ্ঠের সাথে সাথেই শরীরে যেন আগুন জ্বলে উঠল চন্দ্রের। সম্মোহিতের মতন পায়ে চুমু খেল সে, “আপনাকে অসম্মান করেছি, ক্ষমা করুন মালিক।“

হাসছে বিঘ্নক। এখন আর চেপে নয়। হাপুস নয়নে কাঁদছে চন্দ্র। বিঘ্নকের আদেশে উঠে দাঁড়াল ও।

“আহা রে। কেঁদো না প্রিয়।“ দু হাতে ওর মুখ টা তুলে ধরল বিঘ্নক। মুছিয়ে দিল চোখ। চোখাচোখি হল দুজনে। বিঘ্নকের কণ্ঠ বেজে উঠল, “দাসীদের একটা দল এখন তোমায় তৈরী করবে। মুখ বুজে তাদের সব কথা শুনবে তুমি। তারপর খেয়েদেয়ে ঘুমোবে। একদম শান্ত। কোনো মেয়ের প্রতি আকরষণ নয়। ঠিক আছে ?”

চোখের দিকে চেয়েই মাথা নাড়ল চন্দ্র। মনের ভিতর থেকে অসংখ্য বাধা, পালিয়ে যাওয়া উঠে আসতে চাইছে অথচ হারিয়ে যাচ্ছে। বিঘ্নকের ইশারায় দুজন মেয়ে এসে দাঁড়াল দরজায়।

দুগ্ধের ন্যায় সাদা শয্যা। আসল পাখির পালক দেয়া মস্তকাধার। এই মাত্র তাকে এইখানে শুইয়ে গেছে দুজন পরিচারিকা। এই চাদরের নীচে তার সমগ্র শরীর নগ্ন। চারি- পাঁচটি সুন্দরী দাসী, প্রত্যেকে উন্মুক্ত বক্ষ, সকলে মিলে তাকে উলঙ্গ করে কি এক সুগন্ধী জলে স্নান করিয়েছে। মুছিয়ে দিয়েছে। আবার কি যেন সমস্ত অঙ্গে ডলে ডলে মালিশ করেও দিয়েছে। গোপনাঙ্গ, এবং তার ভেতরের চামড়া সহ। আশ্চর্য, এত নারী সংস্পর্শে সে লজ্জিত হতে চেয়েছে, উত্তেজিত হতে চেয়েছে, পারে নি। অনাবৃত স্তন ! এ ছিল চন্দ্রের স্বমেহনের স্বপ্ন। কিন্তু আজ ? মন চাইছে উত্তেজিত হতে। শরীর মানছে না। লিঙ্গে, শরীরে কোনকিছুই জাগছে না। যেন আরো বড় কোন মন তাকে শাসন করে চলেছে। কি চায় এই বিঘ্নক ? কি করার চেষ্টা করছে সে ? সব কি তাহলে এই গলার মসৃণ জ্বলুনি…

আচমকা মনে পড়ল। আরে, এখানে একটা ছোটো দর্পণ আছে না? একটু আগে কেশবিন্যাস করে দিল যখন ওরা ? মনের সাথে অনেক যুদ্ধ করে উঠে দাঁড়াল চন্দ্র। সহজেই পেয়ে গেল দর্পণখানি।

চেহারা যেন আরো ফরসা হয়ে গেছে। আর, গলার নীচদিকটায়…

একটা কালো বলয়। অনেকটা কুকুরের বকলসের মতন।

তফাত শুধু, বকলস্ টা আলাদা নয়। ওটা গলারই চামড়া কালো হয়ে আছে। তার ওপর হাল্কা সবুজাভ কি যেন আঁকিবুঁকি।

অনেক প্রশ্নের যেন উত্তর মিলছিল। কিন্তু দুটো মেয়ে আবার ঢুকলো। এরাও কি নির্বিকার ভাবে খাবার নিয়ে বসে পড়ল পাশে। নিজের হাতে করে খাইয়ে দিচ্ছে ওকে। প্রতিবাদ নয়। প্রশ্ন নয়, খেয়ে ঘুমোতে হবে। কে যেন নির্দেশ দিয়ে রেখেছে।

“কি চাও বৎস্য? “

“আমাদের রাজ্য যেন চির অজেয় হয়, হে দেবী।“

“দেবী নই আমি ত সীমাহীন লোভসঞ্জাত এক সত্ত্বা মাত্র। লোভের জন্যে তুমি আমায় ডেকেছ। তুমি লোভ পাবে। কিন্তু তার জন্যে বলি চাই।“

“বলুন দেবী, কজন মানুষের রক্ত চাই ?”

“তোমার রাজ্যসীমার বাইরে থেকে একটি পরিবার সংগ্রহ কর। যন্ত্রণা। যন্ত্রণা দাও তাদের, দৈহিক নয় শুধু, সমস্ত প্রকার যন্ত্রণা। যত বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রণা দেবে, তত শক্তিশালী হবে লোভের জাদু। যাও।“

চোখ মেলল চন্দ্র। কেমন এক স্বপ্ন ছিল এটা ! রক্ত, মানুষ, লোভ ! একি, এত ধোঁয়া চারদিক। চোখ আবার বন্ধ করে মাথা ঝাড়ল ও। এবার চোখ খুলতে দেখল, সামনে বসে বিঘ্নক। কেমন অচেনা ভাবে চাইছে। অবশ্য দ্রুতই কেটে গেল সে ভাব। “সুপ্রভাত, প্রিয় !”

ভীত ভাবে চাইল চন্দ্র। কি করতে চায় এখন এ লোকটা ?

“প্রাতঃকালে হাঁটতে হয়। এসো, আমার সাথে একটু হাঁটবে।“

আদেশ অগ্রাহ্য করার কোনো ক্ষমতা চন্দ্রের নেই। চাদর ছেড়ে নীচে নামতেই খেয়াল হল, সম্পূর্ণ নগ্ন সে। পরবার জন্যে একটা লম্বা কিছু এগিয়ে দিল বিঘ্নক। জিনিষটা মেয়েদের পরিধেয়, বুঝল চন্দ্র। তবু পরে নিল সে। হাত ধরল বিঘ্নক। নিজের হাতটা ভারী নরম মনে হল আজ ওর। দুজনে বেরিয়ে এল একটা লম্বা গলি, তার আরো বাঁক ঘুরে। তাকে এমনি ছেড়ে দিলেও কোনোদিন একা বেরোতে পারবে না, বুঝল চন্দ্র।

এদিক ওদিক ঘুরে একটা বড় দালানে এল দুজন। তার পেছনে প্রকাণ্ড দিঘিকা। সেখানে মেয়েরা স্নান করছে। ওদের দুজনকে দেখেও কারো ভাবান্তর হল না। অবাক হল চন্দ্র। বুঝতে পারল বিঘ্নক। “এখানে আমি আর মেয়েরা ছাড়া কেউ আসে না। রাজার সামনে সেবিকাদের কিসের লজ্জা !”

“তাহলে আমি ?” ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল চন্দ্র।

“তুমি ?” জোরে হেসে ফেলল বিঘ্নক। “এদিকটায় এসো, এবার তাকিয়ে দেখো।“

এখানে পাশেই ঘাট। একটি মাঝবয়েসী শ্যামলা মহিলা, স্নান সেরে উঠে আসছে। নির্লোম বাহুমূল, যোনি। উদর অল্প কেমন স্ফীত, হতে পারে সন্তানসম্ভবা। খাড়া দুটি স্তনে বিশাল দুই বোঁটা। ওদের দেখে মাথা নীচু করে সম্মান জানাল, তারপর শরীর মুছতে লাগল। নিটোল গোল দুটি পাছায় মাংস যেন জ্যান্তভাবে খেলে বেড়াচ্ছে।

“নিতম্বিনী, এদিকে আয়।“

বিঘ্নকের ডাকে এগিয়ে এল নগ্ন মহিলাটি। “পেটের ওটা কার ?”

“নায়েবমশায়ের, জাঁহাপনা।“

“ঠিক আছে, যা।“

“হুজুরের সেবা লাগবে ?”

“বাঃ। পেটে বাচ্চা নিয়ে এসব একদম নয়। আর পুকুরে নামবি না।“

“যথা আজ্ঞা মালিক।“

নিতম্বিনী চলে যেতে জিজ্ঞেস করল বিঘ্নক, “কেমন লাগল ?”

কি বলবে চন্দ্র ? ওর মনের মধ্যে উথাল পাথাল করছে। এইরকম অসামান্য একটা মহিলা ! মানে রাজবাড়ীর মাঝবয়েসী ক্ষণাদাসীর চর্বিময় শরীর থেকেই কখনো চোখ ফেরাতে পারত না ও, আরে আজ… এমন এক নগ্ন মহিলাকে দেখেও… কিচ্ছু না ! কিচ্ছু হচ্ছে না শরীরে। দাঁড়াচ্ছে না লিঙ্গ ! মনের ভেতরেও কেমন দুভাগ হয়ে যাচ্ছে। একভাগ উত্তেজিত। একভাগ শান্ত।

“কি ? হচ্ছে না ?” কাপড়ের ওপর দিয়ে ওর লিঙ্গস্থানে হাত দিল বিঘ্নক। “কারণ তুমি এখন আমার।তোমার উত্তেজনা শুধু আমার।“

ঠোঁট নামিয়ে আনল বিঘ্নক । নিজের পাতলা ঠোঁটের ভেতর বিঘ্নকের জিভ টের পেতে পেতে একটাই কথা বাজছিল চন্দ্রের মনে।

লিঙ্গটা কেমন ছোট হয়ে গেছে !