হরিরামপুরে হাহাকার পর্ব ২

পর্ব ১

বাড়ি ফিরে সোজা নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে । বাইরে মা ডাকে ওকে নিজেকে সামলে সাড়া দেয় বলে আসছে। জলদি শাড়ি ছেড়ে শর্টস আর টি শার্ট গলিয়ে বাইরে আসে।মাথা টা গরম হয়ে যায় দেখে পরাগ বসে দাঁত বের করে হাসছে । মা বলে তুই ওর ফোন ধরছিস না তাই ছেলেটা নিজেই চলে এসেছে। কৃতি বিরক্তি চেপে রেখে মুখে হাসি ফোটায় বলে হাই। পরাগ বলে আরে বসো কৃতির মা বলে যা পরাগ কে নিয়ে তোর ঘরে আমি চা পাঠিয়ে দিচ্ছি।

পরাগ কে নিয়ে ঘরে যায় কৃতি। ঘরে ঢুকেই মুখ চোখ পাল্টে যায় পরাগের ওর গা ঘেঁষে আসে জড়িয়ে ধরে পিছন থেকে ঘাড়ে মুখ ঘষতে থাকে। কৃতি জোর করে ছাড়ায় নিজেকে। পরাগ রেগে যায়। বলে কি হয়েছে তোমার ? একটু আদর ও করতে দেবে না !! আর কদিন পরেই আমাদের বিয়ে হবে তখন তো সব কিছুই করবো তোমার সাথে বলে নোংরা হেসে এগিয়ে আসে , কৃতিকে বিছানায় বসিয়ে ওর নগ্ন থাই তে হাত বোলাতে থাকে ।

কৃতি জোর করে পরাগের হাত সরায় বলে আমি চাকরি পেয়েছি । সামনের মাসেই জয়নিং পরাগ রাগে লাল হয়ে যায় কেটে কেটে বলে শোনো তুমি কোথায় চাকরি করছো না আমার সাথে বিয়ে করে আমেরিকা যাচ্ছ বাস । বেশি কথা বললে ছিঁড়ে নেব এইদুটো বলে ওর বুক টাকে নির্মম ভাবে পিষে ধরে । চোখে জল চলে আসে কৃতির পরাগ ওর শর্টস এর উপর দিয়ে ওর দু পায়ের ফাঁকে খামচে ধরে দম বন্ধ হয়ে আসে কৃতির প্লিস ছেড়ে দাও পরাগ কে বলে কৃতি। পরাগ ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে ওকে ছাড়ে ওর দু পায়ের ফাঁকে আরো একবার হাত ঘষে হিস হিসিয়ে বলে এইটা কিন্তু আমারই আমিই নেবো এটাকের মনে থাকে যেন।

রাত্তিরে খাবার টেবিলে বাবা মার সামনে কৃতি নিজের চাকরি পাবার খবর টা দেয় । মা বাবা কারোর মুখেও খুব একটা খুশি দেখতে পাই না সে । অবাক হয় বলে তোমরা খুশি নও?! বাবা মাথা নামিয়ে খেতে থাকার কোনো উত্তর দেয় না । মা ওর পিঠে হাত রেখে বলে মা এইসব চাকরি তোর জন্য নয় কত বিপদ আপদ হতে পারে বল র তারপর কয়েকদিন এর মধ্যে তো তুই আমেরিকা চলে যাবি তখন তো র চাকরি করতে পারবি না ।

কৃতি স্তম্ভিত হয়ে যায় এ সব কি শুনছে সে এই কি তার চিরপরিচিত বাবা মা যারা ওর একটা সামান্য সাফল্যে খুশির বন্যায় ভাসত! ও বাবার দিকে ঘুরে বসে ধরা গলায় বলে বাবা প্লিজ এই চাকরি টা আমায় করতে দাও র পরাগ কে আমি বিয়ে করতে পারবো না প্লিজ বাবা। ওর বাবা খাবার টেবিল ছেড়ে উঠতে উঠতে বলেন পরাগের বাবা কে আমি কথা দিয়ে দিয়েছি তোমাকে ওকেই বিয়ে করতে হবে । আর যদি নিজের কথামতো চলতে চাও বেরিয়ে যেতে পারো বাড়ি থেকে দরজা খোলাই আছে।

সারা রাত্তির ঘুমোতে পারে না কৃতি এপয়েন্টমেন্ট লেটার টা নিয়ে নাড়াচাড়া করে এতদিনের ইচ্ছে স্বপ্ন সব কি তা হলে শেষ?! লেটার এর উপর জয়নিং এর তারিখ টা দেখে আজ থেকে ঠিক দুদিন পর ।ও চোখের জল মুছে নিজেকে শক্ত করে ঠিক করে নেয় কর্তব্য। পরের দিন বেরিয়ে সব শপিং করে বাইরে থাকতে গেলে যা যা লাগতে পারে তারপর রাত্তিরে অপেক্ষা করতে থাকে হরিরামপুর দেখেছে দিঘা যাবার পথে পড়ে তাই নাইট বাস এর টিকিট ও কেটে নিয়েছে রাত 2 টো তে বাস ছাড়বে ও একটা নীল ব্রা প্যান্টির সেট পরে তার উপর একটা টাইট কালো জিন্স আর সাদা শার্ট পরে। তারপর বড় রুকসাক টা পিঠে চাপায়। বাবা মার উদ্দেশে চিঠিটা টেবিলের উপর চাপা দিয়ে রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সাবধানে গেট খুলে বেরিয়ে আসে বাড়ি থেকে রওনা দেয় অজানা পথের দিকে।

বাসে উঠে দেখে বাসে জানলার ধারগুলো সব ভর্তি শুধু শেষ সারি তে একটা জানলার ধার ফাঁকা আছে ও গিয়ে ওখানে বসে গেল বাস ছাড়তে এখনো একটু সময় আছে। কৃতির ফোনে একটা ফোন এলো দেখলো ওর বস সোম ফোন করছে । ওদিক থেকে আইপিএস সোম ব্যানার্জীর গলা গম গম করে উঠলো “অল ওকে কৃতি ?”

কৃতি বলে হা সার বাস এ উঠে পড়েছি কাল ভোরের দিকে রিচ করে যাবো হরিরামপুর। সোম বলে ভালো করে শোনো খুব খারাপ পরিস্থিতি ওখানে কিন্তু তোমার আসল পরিচয় যেন কিছুভাবেই প্রকাশ না পায় খুব সাবধান। কৃতি বলে হা সার নো প্রবলেম আমি কৃতি বাসু প্রথম আকাশ বলে একটা দৈনিক এর রিপোর্টার গ্রামের উন্নতি নিয়ে আর তার কিছু ঐতিহাসিক যোগাযোগ এর বেপারে স্টোরি করতে এসেছি বাস। সম তাও সাবধান করে দেখো তোমার কাছে কিন্তু কোনো ওয়েপন দিতে পারছি না কোনো সম্যসা হলেই আমায় ফোন করবে আর হা কাল সকালে তোমাকে ওখানের পিওন রিসিভ করবে নাম মোহন কোডওয়ার্ড হচ্ছে লাল কবুতর ।

কৃতি বলে ওকে সার। সোম কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে কৃতি আসা করি তুমি বুঝতে পারছো ওই ড্রাগ রেকেট যেটা চলছে হরীরামপুরে যারাই চালাক তারা কিন্তু খুব ই বিপদজনক আর লোকাল থানার পুলিশ ওদের সাথে মিলে আছে । যা করার খুব সাবধানে করো অল দি বেস্ট। থ্যাংক ইউ সার বলে ফোনে টা কেটে বাইরে তাকায় কৃতি বাস তখন ফুল স্পীড নিয়ে নিয়েছে জবে থেকে ও আইপিএস পাস করেছে তবে থেকেই ওর এই বি জয়েন করা স্বপ্ন। আর আগের বছরে একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা তো ওকে বাধ্য করেছে এই মিশন টা নিতে যায় হয়ে যাক এই মিশন টা সাকসেসফুল তাকে হতেই হবে নিজের জন্য তার জন্য যে মূল্যই চোকাতে হোক না কেন, চোয়াল টা শক্ত করে নেয় কৃতি।