প্রতিহিংসা – রাজেশ্বরী পর্ব ২

নয়নতারা কিছুক্ষণ চুপ করে হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে থাকলো। ভয় এবং মায়ায় তার হৃদপিণ্ড ধুক ধুক করে যাচ্ছে। তার সুন্দর বোনটাকে ভালো করে দেখতে লাগলো। খুব ভালোবাসত রাজেশ্বরীকে। কিন্তু ছেড়ে দিলে ও নয়নতারাকে বাঁচতে দেবে না। হিংসা এবং ষড়যন্ত্র এমনই জিনিস একবার মনে ঢুকলে সবাই কে ধ্বংস করে তারপর ছাড়ে। রাজেশ্বরীর সুন্দর মুখটা ভালো করে ধরে দেখতে থাকলো নয়নতারা।
__ কেন বোন? কেন আমার এত বড় সর্বনাশ করবার ইচ্ছে তোর মনে জাগলো? আমি তো তোকে কোনোদিনও পর ভাবিনি। সারাজীবন নিজের বোনের মত স্নেহ করে গেছি। মা বাবা তোকে কিছু বললে আমি রুখে দাড়িয়ে তোকে বুকে আগলে নিয়েছি। ভালোবাসার এই তুই দাম দিলি। যা তুই যেই নরকে আমাকে পাঠাতে চেয়েছিলি সেখানে তুই নিজে যাহ। চিৎকারের পর চিৎকার কর, কেউ তোকে বাঁচাতে যাবেনা। তোর মত ডাইনির এটাও উপযুক্ত শাস্তি।

থামলো নয়নতারা। কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর রাজেশ্বরীকে ধরে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিলো। মনে মনে ভাবতে লাগলো ইংরেজ সাহেব হয়তো তাকে দেখেনি। যে চিনত সেও আসবেনা। আর তার সাহস ও ক্ষমতা কিছুই নেই যে রাজেশ্বরীকে সাহেবের গুপ্ত কক্ষে দেখতে পাবে। ভাগ্য যদি সহায় হয় যদি সাহেবের পাঠানো লোকগুলো রাজেশ্বরীকে চিনতে না পারে তাহলে নয়নতারা এক্কেবারে রক্ষা পায়।

তার জীবন বেঁচে যায়। সে তার ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে সুখে থাকতে পারে। তার মা বাবার অভাব যেটুকু আছে সেটুকুও ঘুচে যাবে। অতশত চিন্তা আর না করে নয়নতারা ছুটে গিয়ে বোনের ঘর থেকে বোনের পরণের কিছু কাপড় জোগাড় করে নিয়ে এলো। তারপর ব্যস্ত হয়ে ঘর থেকে উঠোনে বেরিয়ে এলো। পূর্ণিমার চাঁদ আকাশে রুপোলি থালার মত জ্বলছে। চারিদিকে আবছা জোছনার রুপোলি আলোয় ভরে গেছে। নয়নতারা ছুটে উঠোনের লাগোয়া জঙ্গল থেকে মোটা অথচ খুব শুকিয়ে যাওয়া গাছের একটা লম্বা ডাল জোগাড় করে আনলো। হাতের কাপড় গুলো তার একপাশে বেঁধে দিলো।

শাড়ির কুচিতে বাঁধা দেশলাই বাক্স বের করে কাঠি ঠুকে তাতে আগুন জ্বাললো। অন্ধকারের মধ্যে লাল আগুনের শিখা দাউদাউ করে নয়নতারার হাতে জ্বলে উঠলো। সেটাকে উচু করে শূন্যে এপাশ ওপাশ জোরে জোরে দোলাতে লাগলো। অল্প সময়ের মধ্যে নিস্তব্ধ রাত যেন চারিপাশে হটাৎ সজাগ হয়ে উঠল। দূরের পথ থেকে কিছু মানুষের চাপা গলার ও পায়ের শব্দ শোনা গেলো। নয়নতারার নিজেকে নিরাপদ মনে হলনা।

শিগগির মশাল মাটিতে ফেলে দৌড়ে কোনমতে উঠোন ছেড়ে ঝোঁপের একটা বড় গাছের আড়ালে আশ্রয় নিলো। শীতের দিনে শীত লাগলে যেভাবে মানুষ কাপতে থাকে ভয়ে সেভাবে কাপতে লাগলো। পায়ের শব্দগুলো কাছে আসতে বেশি সময় লাগলো না। কিছুক্ষণের মধ্যে উঠোনে কিছু মানুষের ছায়ামর্তি দেখতে পেলো নয়নতারা। চাঁদের  মিঠে আলোয় তাদের চেহারা দেখা না গেলেও সবাইকে স্পষ্ট দেখা গেলো। শন্ডা মারকা প্রায় দশ বারো জনের দল। সবার হাতে বল্লম, ছুরি ও নানান ধারালো অস্ত্রশস্ত্র।

তাদের একজন এসে তারাতারি মাটিতে জ্বলতে থাকা মশালখানি নিভিয়ে দিল। কুঠিরের ভেতরে দুজন প্রবেশ করলো। বাকিরা বাইরেটা ভালো করে পাহারা দিতে লাগলো। ঘরের মধ্যে যুবতীটি অঘোরে ঘুমিয়ে আছে। একজন সারা ঘরের এদিক ওদিক ভালো করে খুঁজে দেখে বুঝতে পারল ভেতরে আর কেউ নেই। বিছনায় ঘুমন্ত সুন্দরিটি কিছুই টের পেলো না। হাতের কাছে এমন সুন্দরীকে পেয়ে সেই লোকটা সারা গায়ে হাত বুলিয়ে রুপবতীকে একটু আদর করে নিলো। অপরজন মুচকি হাসলো। বাইরের কেউ কিছু জানতে পারলো না।

ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অপরুপা কন্যাটি নিজের বোনের পরিণতির কথা ভেবে নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে কেঁদে চললো। নয়নতারা অন্ধকারেও দেখতে পেলো অগচরে তাদের কুঠিরে ঢোকা দুই অনুপ্রবেশকারী তার একমাত্র বোনকে কাধে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসছে। নয়নতারার বুক প্রচণ্ড পাপের অনুশোচনায় ভেঙে গুঁড়িয়ে যেতে লাগলো। একি করলো সে? সেকি পারতোনা বিরম্বরের কাছে খবর পাঠাতে। কিন্তু এটুকু সময়ে কিভাবে সে খবরটা দিত? রাজেশ্বরীকে নিয়ে যাবার সময় যদি বাঁধা দিতে যায় ওই পকাণ্ড লোকগুলোর কাঁধে নয়নতারাকেও দেখা যাবে।

লোকগুলো দেরি করলো না। তবে যে পথে ঢুকেছিল তার উল্টো পথ ধরে নয়নতারার ঝোঁপের পাশ ঘেষে তারা চলে গেলো। নয়নতারা ভয়ে নিজের হাত দুটো দিয়ে মুখ ঢেকে মোটা গাছের আড়ালে সেটে দাড়িয়ে রইলো। যতক্ষন না কাধে ঝুলন্ত কোমল হাতদুটি এবং বাকি শয়তান গুলি পথের জোছনায় সম্পূর্ণ মিলিয়ে গেলো নয়নতারা নিঃশ্বাস পর্যন্ত ফেললো না। সবাই চলে গেলে অসহায় অবলা নারী মাটিতে বসে পরলো।

পাশ দিয়ে যাবার সময় ওদের একজনের মোটা স্বর কানে এসেছিল।
__ ছোটো মাগীর মাথায় ভীষন বুদ্ধি বলতে হবে। তা না হলে ওটাকেও তুলে নেব ভেবেছিলাম। ওটাকে পরে ধরতে হবে
কথাটা মনে আসতে নয়নতারা আতঙ্কে শিউরে উঠল। কে জানে যদি আবার এরা খোঁজ করতে আসে। তাই রাত শেষ হয়ে যতক্ষন না প্রতিবেশীরা সজাগ হলো ততক্ষন পর্যন্ত ঝোঁপের আড়ালে ঘাপটি মেরে বসে রইলো। পরে চারিদিকে লক্ষ্য করে চুপি চুপি ঝোপ থেকে বেরিয়ে দৌড়ে নিজের ঘরে ঢুকে গেলো। জল দিয়ে নিজের চোখমুখ ভালো করে ধুয়ে নিল। ধোয়া হয়ে গেলে আঁচল দিয়ে নিজের মুখ চোখ মুছে বুকে হাত দিয়ে চোখ বন্দ করে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিলো। বুকের ভেতরটা একটু শান্ত হয়ে এলে জোরে সুর ধরে কান্না শুরু করলো।

আশেপাশের লোকজন মহিলারা যারা যেখানে ছিল সকাল সকাল এমন মরা কান্না শুনে ভয় পেয়ে এদিক ওদিক থেকে ছুটে আসল। নয়নতারার কথা, যাবতীয় কাপর চুরি, নিভে যাওয়া মশালের পোড়া অংশের প্রমাণ দেখে সবাই বুঝতে পারল দিদি ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রাজেশ্বরী ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কোথায় গেছে, কার সঙ্গে গেছে এগুলোই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কল্পনা করতে থাকলো। দুপুরের মধ্যে সূবর্ণ তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে এলো। খবর কানে যেতে মনের মধ্যে ভয় বাসা বাঁধতে লাগলো।

রাজেশ্বরীকে নিয়ে নয়, ওর কথা এরা চিন্তাও করেনা। ভয় একটাই এমন একটা লজ্জাজনক ঘটনার পর কি রাজকুমার নয়নতারা কে বিয়ে করবে? কিন্তু প্রথম দেখায় নয়নতারার অনন্য রূপে মুগ্ধ হয়ে বিরম্বর তাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিল। এবং তার বিবেক মানত একজনের করা ভুলের শাস্তি অন্যজনকে দেওয়া অনুপযুক্ত, এমনকি গুরুতর অপরাধও। তাই তার মানসিকতা পরিবর্তন ঘটলো না। উল্টে নয়নতারার ভয় ভয় মন আর মনের কষ্ট বুঝতে পেরে কুঠিরের চারিপাশে নিজের সশস্ত্র বাহিনী পাহারায় বসালো।

দুদিনের মধ্যে বিয়ে হবে জানালো। এবং নয়নতারা ও তার বাবা মাকে রাজেশ্বরীকে খুঁজে বের করবার প্রতিশ্রুতি দিলো। কিন্তু ইংরেজ সাহেব উচ্চশিক্ষিত, কুটিল বুদ্ধি সম্পন্ন এবং নারীদেহের প্রতি উন্মাদ নেশাগ্রস্ত।  তার হাত থেকে যুবতী ছাড়িয়ে আনা আর বাঘের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া একই প্রকার। তাই শত চেষ্টা করলেও বিরম্বরের সৈনের দলেরা কিছুতে জানতে পারলনা এই রাজ্যের কোনো এক কোণে কোনো এক নীলকুঠিরে রুপালীকে পশুর মত কোনো ইংরেজ সাহেব দিনের পর দিন পাশবিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

যেখানে নদীটি বাক নিয়ে দূরে মিলিয়ে গেছে জঙ্গলের সেই শেষ প্রান্তে সাহবের গোপন আস্তানা। সাহেবের নির্দেশ ছাড়া কেউ এখানে আসতে পারে না আবার কেউ পালাতেও পারেনা। প্রাসাদের বিশ্বস্ত অনুচরেরা সাহেবের নির্দেশে নব যুবতীদের এখানে তুলে আনে। রাতের বেলা তাদের বিবস্ত্র করা হয়।  তাদের দেহের জৌলুস ভোগ করা হয়। তারা , নিজের সম্মান বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে, কিন্তু সাহেব এর হাত থেকে কিছুতেই তারা রেহাই পায়না। তার ক্ষিদে মিটলে তার অনুচরের দল হামলে পড়ে। নারীদের অসহায় আর্তনাদে জঙ্গল কেঁপে ওঠে। সেভাবেই হারিয়ে যায় জঙ্গলের ভেতরে। কেউ তাদের খোজ পায়না তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এই বিশাল অরণ্যে তারা বাতাসের মতো মিলিয়ে যায়।

সেদিন সেই ঝকঝকে পূর্ণিমার রাতে সাহেবের অনুচরেরা যখন রাজেশ্বরীকে তুলে এনে সাহবের পালঙ্কে শুইয়ে দিয়ে গেলো সুন্দরী তখন গভীর নিদ্রায়। বুক থেকে তার অন্তর্বাস সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত সে সম্পূন্ন আবরণহীন। শুধু কোমড়ের নীচ থেকে পা পর্যন্ত একটি স্বচ্ছ সাদা কাপড়ে ঢাকা। আলতা রাঙা পায়ের পাতা দুটো কাপড়ের বাইরে আংশিক বেরিয়ে আছে।

সাহেবের গোপন কক্ষের বাতাসে মোমবাতির গন্ধ।তারই মধ্যে পালঙ্কের ওপর রাজেশ্বরীর দেহটা যেন আলোর সাগরে ভাসছে। ঘরের চারদিকে কালো মখমলের পর্দা, মেঝেতে ছড়ানো রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া। মাথার ওপর পিতলের ঝাড়বাতি, তার নিচে রাজেশ্বরীর নিথর শরীর—মৃত্যুর চেয়েও নিঃশব্দ। ঘুমের ঘোরে তার চোখের কোণে কাজল গলেছে একটু, কালো রেখা গাল বেয়ে নেমে এসেছে শিকারের রক্তের মতো। কপালে লাল তিলক যেন বিষাদে ম্লান।

তার গলা উঁচু হয়ে আছে বালিশে। পিতলের চন্দ্রহার ঘামে ভেজা ত্বকে আটকে আছে। কাঁধ দুটো চিকচিকে সাদা। ডান কাঁধের নিচে ছোট্ট কালো তিল। পিঠের দিকে নেমে গেছে মাটির মালার একটি দানা। বুকের উঠোন জুড়ে স্তনযুগল দুটি ধীরে ধীরে দুলছে। বাঁটের গোলাপি রঙ মোমের আলোয় ঝিলমিল করছে। পেটের নরম চামড়ায় জমেছে ক্ষীণ ঘাম, নাভির গোলাকার গর্তে আটকে আছে অন্ধকারের এক ফোঁটা।

কোমরের নিচে স্বচ্ছ কাপড়ের আঁচল পায়ের ফাঁকে গুটিয়ে গেছে, আলতা-মাখা পায়ের পাতা। ডান হাতের নখে মেহেদির রেশ, বাঁ হাতের কব্জিতে সোনালি পৈচে। পায়ের আঙুলে মাটির তৈরি আংটি। তাতে গেঁথে দেওয়া নীলকান্ত পাথর। পালঙ্কের পাশে ঝুলছে সাহেবের কালো চাবুক, দেওয়ালে টাঙানো রয়েছে বাঘ-শিকারের বন্দুক। জানালার ফাঁক দিয়ে পূর্ণিমার আলো এসে পড়েছে রাজেশ্বরীর নাভির ওপর—চাঁদ যেন নিজেই চুমু খাচ্ছে তার দেহের গহ্বরে।

সাহেব দাঁড়িয়ে আছে পালঙ্কের কিনারায়, ডান হাতে রুবি জড়ানো মদের পেয়ালা। পূর্ণিমার আলোয় তার দাড়ির নিচের মুখগহ্বর দেখা যাচ্ছে দাঁতের সারি। শরীরের গন্ধে মিশে আছে শিকারের রক্ত। সে রাজেশ্বরীর নগ্ন পায়ের পাতা থেকে মাথার লাল তিলক পর্যন্ত চুম্বনের স্পর্শহীন দৃষ্টিতে দেখতে লাগলো।

তার বাম হাতের আঙুলগুলো বুটনের বোতাম খুলছে ধীরে ধীরে। কালো সিল্কের শার্ট খুলে পড়তেই উন্মোচিত হলো বুকজুড়ে লাল ফোস্কার দাগ। নাভির নিচে কোমরে বাঁধা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়ার বেল্ট, তাতে গুঁজে রাখা পিতলের পিস্তল। প্যান্টের বোতাম খুলে পড়ার শব্দে ঘরের বাতাস ভারী হয়ে উঠল, জানালার পর্দা দুলে উঠল অদৃশ্য কোনো হাতের থাবায়।

মদের পেয়ালা ঠোঁটে ঠেকাল সাহেব। লাল ওয়াইনের ফোঁটা গড়িয়ে পড়ল মেঝের উপর। তার ডান হাতের মধ্যমায় মৃত মানুষের দাঁতে খোদাই করা শয়তানের মুখ বসানো এক আংটি। আংটির খাঁজে আটকে থাকা রক্তকণা এখনো শুকোয়নি। সাহেবের চোখ দুটো চিকচিক করছে  নিঃশ্বাসে ভেসে আসছে মাংস পচার গন্ধ।

ঘুমের মধ্যে রাজেশ্বরীর ভ্রূকুটি কুঁচকে গেল। সাহেবের বাম হাতের আঙুল নড়ছে তার নাভির গোলাকার গর্তে। নখের ময়লা জমে যাওয়া আঁচড় দিচ্ছে ত্বকে। সাহেবের গলাতেও কর্কশ হাসি। জানালার ফাঁক দিয়ে উড়ে আসা পেঁচা ডাকল—”উলুক!” রাজেশ্বরীর চোখের পাতা কাঁপছে, ঘামে ভেজা বুকে জমেছে পূর্ণিমার ঠাণ্ডা আলো।

এ যাবতকাল বহু কুমারীর সর্বনাশ করেছে সাহেব, কিন্তু রাজেশ্বরীকে দেখা মাত্র তার ভিতরে অদ্ভুত আলোড়ন সৃষ্টি হচ্ছে। রাজেশ্বরীকে সে সহজে রেহাই দেবে না। এই যৌবনের দেহে, যার প্রতিটি লতা-পাতায় যৌবনের উন্মাদনা, সেখানে যত জ্বালা ধরানো যায়, ততই আনন্দ। যত কষ্ট দেওয়া যায়, ততই সে সুখের উপলব্ধি।

ঘুমের মধ্যেও সুন্দরীর বাঁধা হাত দুটো কখনো ঝনঝন করে দুলে ওঠে, তারপর আবার থেমে যায়।    নিঃশ্বাসের বুকের কমল স্তনযুগল দুটোর ওঠানামা, প্রশস্ত মেদহীন উদরের কোমল ভাঁজগুলো, নাভীর গভীরতা ও মসৃণতা দেখে সাহেব নিজেকে পারলো না। রাজেশ্বরির পায়ের সামনে বিভীষিকার মত একরাশ নগ্নতা নিয়ে এগিয়ে এলো। তার দীর্ঘ সাদা পুরুষাঙ্গটি উত্তেজনায় দন্ডায়মান। সামনের লাল ডগাটি লোভে চামড়ার ভেতর থেকে বিকশিত হয়ে আছে। রুপসীর তখনো ঘুমের মধ্যে। সে তখনও অজ্ঞাত তার জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক রাত আজ নেমে এসেছে। তাকে দেখে সাহেবের চোখ ঝলসে যেতে লাগলো। মদের গ্লাসে প্রতিটা চুমুক তার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে লাগলো।
রাত বাড়তে বাড়তে একটা সময় রাজেশ্বরীর ঘুম ক্রমশ পাতলা হয়ে এলো। সাহেব বুঝতে পেরে মদের গ্লাসটি বিছানার পাশে রেখে ধীরে ধীরে রাজেশ্বরীর পায়ের তালুতে আঙুল বোলাতে শুরু করলো।

রাজেশ্বরীর ঘুমের ঘোর তখনো ভাঙেনি। তার নিষ্পাপ মুখে শান্তির ছায়া, যেন সে স্বপ্নের কোনো সুন্দর জগতে বিচরণ করছে। কিন্তু সাহেবের চোখে সে শান্তি নয়, এক অস্থির আগুন জ্বলছে। তার হাতে মদের গ্লাস কাঁপছে, আর প্রতিটি চুমুকে তার ভেতরের পশু জেগে উঠছে। রাজেশ্বরীর নরম শরীরের প্রতিটি ভাঁজ, তার ত্বকের মসৃণতা, আর সেই অবশ দেহের অসহায়তা তাকে আরো উন্মাদ করে তুলছে। সে ধীরে ধীরে আরও এগিয়ে গেল। তার ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ ঘরের নিস্তব্ধতাকে ভেঙে দিচ্ছে।

সাহেবের হাত তার কোমল উরুর উপর দিয়ে বুলতে শুরু করলো। তার আঙুলগুলো ক্ষুধার্ত সাপের মতো এঁকেবেঁকে চলছে। প্রতিটি স্পর্শে সে রাজেশ্বরীর যৌবনকে গ্রাস করতে চায়।মদের নেশায় তার মনের শেষ সংযমটুকু ভেঙে পড়ল। সে আর অপেক্ষা করতে পারলো না। রাজেশ্বরীর দেহের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে তার মুখে একটা বিকৃত হাসি ফুটে উঠলো। ঘুমের মধ্যে রাজেশ্বরীর কপালে একটা ভাঁজ পড়লো, যেন তার অবচেতন মন চিৎকার করে বলছে, “জেগে উঠো!”

প্রথম চোখ খুলতেই রাজেশ্বরীর দৃষ্টি ঝলমলে প্রদীপের আলো ধাঁধিয়ে গেল। ধীরে ধীরে আলোটা সয়ে এলে, বিস্ময়ে তার প্রশস্ত কপালের ভ্রু জোড়া কুচকে গেল। শুয়ে শুয়েই সে চারপাশটা ভালো করে দেখার চেষ্টা করলো। কিছুই বুঝতে পারল না—ঘরের সবকিছু এত পাল্টে গেল কীভাবে? সবকিছু এত অচেনা কেন? কোথায় তার ঘরের খরের ছাউনী? কোথায় সেই ছোট্ট ঘরটির আবছা আলো? এ কোথায় এলো সে?

পাশের ঘরে থাকা দিদি নয়নতারাকে ডাকতে যাবে, তখনই খেয়াল হলো বুক থেকে পেট পর্যন্ত তার শরীরে কোনো আবরণ নেই। চমকে সোজা হয়ে উঠতে গিয়েই হৃদয় কেঁপে গেলো। প্রচণ্ড ভয়ে চিৎকার করে উঠলেও মুখ দিয়ে গোঁ গোঁ শব্দ ছাড়া কিছুই বের হলনা।  শুয়ে শুয়ে সামনের দিকে চোখ যেতেই রাজেশ্বরীর সারা দেহে শীতল আতঙ্ক বয়ে গেলো। সাদা চামড়ার প্রকাণ্ড দেহের এক বিশাল আকৃতির দানব তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে—মুখে কুটিল হাসির রেখা আর চোখ দুটো লোভে গাঢ় রক্তলাল হয়ে উঠেছে। রাজেশ্বরীর চোখ বিস্ফারিত হয়ে উঠল। ভয়ে আতঙ্কে সারা বিছানময় তোলপাড় করে উঠলো। শিকলের ঝনঝন শব্দ সারা ঘরময় আরও তীব্র হয়ে উঠল। সারা শরীরে তীব্র কম্পন দেখা গেলো।

সেই কম্পনে শরিরের প্রতেকটা ভাঁজ সাহেবের চোখে স্পষ্ট। রাজেশ্বরীকে একটু আগে যেমন দেখতে লাগছিল এখন তার থেকেও হাজার গুণ বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছে। রূপবতীর মুখ, হাত, পা, প্রতিটা অঙ্গে অঙ্গে অসহায়তা ফুটে উঠছে। সাহেব এরই তো অপেক্ষা করছিল এতক্ষন। এইটাই তো চাই। নারীদের এই করুন অসহায়তাই জগতে সবচেয়ে লোভনীয়! সাহেব আর সহ্য করতে পারলনা সে। সাবধানী ভঙ্গিতে ধীরে ধীরে শুয়ে থাকা সুন্দরীর পায়ে হাত রাখলো। প্রথম স্পর্শেই রাজেশ্বরী ভয়ে দোল খেয়ে উঠলো। তার বাধা মুখের গোঁ গোঁ শব্দটি আরও পরিষ্কার হয়ে উঠলো।

রাজেশ্বরী ভাবতে লাগলো, এ সম্ভব না! এত তার কাকার সেই ছোটো কুঠির নয়, সেখানে সে তো তার দিদির সঙ্গে রাতের খাবার খাচ্ছিল। তার দিদির অসহায়তার করুন পরিণতির কথা ভেবে তার খুব হাসি পাচ্ছিল। ….নাহ, তাহলে কি নয়নতারাই…. না না না আমি নয়নতারা কে ছাড়বো না..
মনে মনে বলতে লাগলো

সাহেব রুপসীর চোখে চোখ রেখে মৃদু হাসলো। চোখে চোখ পরতেই সুন্দরী আরও শিউরে উঠলো। রাজেশ্বরী কি করবে বুঝে পেলো না। বাধা হাত পা কাপিয়ে কেবল প্রতিরোধ করবার চেষ্টা করলো। পলক ফেলতে না ফেলতে সাহেব তার পা দুটোকে বিছানায় চেপে ধরলো। সুন্দরী সে স্পর্শে লাফিয়ে উঠলো খানেক। এই প্রথম কারো ছোঁয়া তার যৌবনে নেমে এসেছে। সেই ছোঁয়ায় যেন বন্য পশুর মত হিংস্রতা।