সোহানের জীবনের পুরুষেরা – ১২ (Sohaner Jiboner Puruhera - 12)

This story is part of the সোহানের জীবনের পুরুষেরা series

    নানুর বাসায় সোহানের কিছুই ভাল লাগে নি। তিনদিনের ছুটি নিয়ে সে ঢাকায় এসেছিলো। জামিল আঙ্কেলের প্রেমে দিওয়ানা হয়েছিলো। জামিল আঙ্কেল তাকে আরো তিনচারজন পুরুষের কাছে সঁপে দিতে চাওয়ায় লোকটার প্রতি তার প্রেম উবে গিয়েছিলো। অভিমানি মন সোহানের। কখনোই সহজ হতে পারে নি সোহান নানাে বাসায়।

    বিকেলে মায়ের মামাত ভাইকে সাথে নিয়ে এক নারীকে দেখতে নিউমার্কেট গেল সোহান। একটা মেয়ে দেখলো। অসাধারন সুন্দরী সেই মেয়ে। মনে মনে সোহান শুধু বলেছিলো এই নারীর দুই পায়ের ফাঁকে যদি একটা লিঙ্গ থাকতো তবে এই নারীকে ছেড়ে কখনো সে থাকতে পারতো না।

    থাইল্যান্ডের লেডিবয়দের ভিডিও দেখেছে সে ব্লুফিল্মে। তখন ব্লু ফিল্ম দেখা এতো সহজ ছিলো না। পনোর টাকা টিকেট কেটে দেখতে হত। সোহান ভিডিওতে পুরুষের লিঙ্গ দেখতে যেতো। সুন্দর সুন্দর লিঙ্গ ভিডিওতে দেখে সে মনে রেখে দিতো। পুরুষের ধন না পেলে সেগুলোকে মনে করে খিচতো।

    ব্লুফিল্মের নারীর প্রতি তার কোন টান ছিলো না। পুরুষ এক্টরদের দেখতো সে। প্রত্যেকটা পুরুষ এক্টরের সোনার অবয়ব তার মুখস্ত ছিলো। একদিন লেডিবয়ের ভিডিও চালিয়েছিলো একটা ব্লু ফিল্ম আস্তানায়। সবাই সমস্বড়ে সেটা বন্ধের দাবী করেছিলো। সোহানের খুব ভালো লাগছিলো সেটা দেখতে। এমন কোন নারী পেলে তাকে ঘরের বৌ করে রেখে দিত সে কেবল তার ধন নিজের ম্যান পুষিতে নিতে। নিউমার্কেটে দেখা কনেকে তার তেমনি মনে হল।

    ঢাকার মেয়েরা অনেক আপডেটেড। মেয়েটা তাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনেক প্রশ্ন করল। বেতন কত পায় ভবিষ্যতে কি প্ল্যান সবকিছু জেনে নিচ্ছিলো। সোহানের মাথায় তখন ঘুরপাক খাচ্ছিলো জামিল আঙ্কেলের তাগড়া সোনার কথা। যেমন বডি তেমন তার চোদন। এখনো তার গাঢ়ে সেটার গরম ছাঁচ অনুভব করছে সোহান।

    কিন্তু লোকটা তাকে তার জুয়ার পার্টনারদের কাছে বিলিয়ে দিতে চেয়েছে। গ্রুপ চোদা খেতে সোহানের ইচ্ছে নেই বিষয়টা তেমন নয়। কিন্তু এভাবে কয়েকটা পুরুষের মনোরঞ্জন করে নিজেকে পুরুষ বেশ্যা বানানোর কোন ইচ্ছে সোহানের সেই। জামিল আঙ্কেল তাকে তেমনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা জুয়া খেলবেন আর সোহান তাদের মনোরঞ্জন করতে থাকবে-এটা সোহানের স্বভাব বিরুদ্ধ। তার শরীর যে ইউজ করবে তার সমস্ত মনোযোগ তার দিকে থাকবে। এর বাইরে সে অন্য কিছুতে রাজী নয়।

    যে মেয়েটাকে দেখেছে তার নাম ফারজানা। মেয়েটা আকারে ইঙ্গিতে তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে সে সোহানকে পছন্দ করেছে। মেয়ে হিসাবে ফারজানাকেও সোহানের খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু সোহান জানে কোন নারীর জঙডন্য তার জীবনে কিছু সংরক্ষিত নয়। হয়তো একদিন সামাজিক চাপে সে বিয়ে করবে। সন্তানও হবে। কিন্তু সে কখনো কোন মেয়ের কাছ থেকে তার দরকারী ভালোবাসা আদায় করে নিতে পারবে না। তার ভালবাসা সব সঞ্চিত পুরুষে দু পায়ের ফাঁকের লম্বা দন্ডে। তবু ফারজানার কথা বলার ভঙ্গিতে সে মুগ্ধ হয়েছে।

    ফারজানার দেয়া একটা ল্যান্ডফোন নম্বরও সে নিয়েছে কথা বলার জন্য। রাতে মায়ের মামা যখন জানতে চাইলেন মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিনা তখন চরম দ্বিধা নিয়ে সে বলেছে মায়ের কাছে বলব বাসায় গিয়ে। নানা গজগজ করে বলেছেন-আমাদের কাছে বললে সমস্যা কি! এমন মেয়ে বেশীদিন ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। তুমি বাসায় গিয়েই সবার সাথে আলোচনা করে জানাবে আমাদের। দেরী করা যাবে না। সোহান জ্বি আচ্ছা বলে দায়সারা জবাব দিয়েছে।

    রাতে সোহানের ঘুম হয় নি নানার বাসায়। ব্যাগটা তখনো জামিল আঙ্কেলের হোটেল রুমে। সকালে চোখে জ্বালা নিয়ে ঘুম থেকে উঠে দ্রুত বেড়িয়ে পরেছে সে। হোটেলের লবিতে গিয়ে ম্যানেজারকে বলতেই তিনি তার ব্যাগ এনে দিয়েছেন সোহানের কাছে। সোজান ব্যাগ নিয়ে হোটেল ত্যাগ করতে দেরী করে নি।

    সোজা কমলাপুর এসে এসআলম কাউন্টার থেকে একটা টিকেট নিয়ে বাসে উঠে পরেছে। বাসে বসে তার বুকটা খা খা করেছে জামিল আঙ্কেলের জন্য। সে নিজেকে প্রবোধ দিয়েছে এই ভেবে যে এই তৃতীয় বিশ্বে সমকাম এখনো লেনদেনের প্রেম এখানে সত্যিকারের প্রেম খোঁজা অন্যায়।

    জামিল আঙ্কেলের সাথে সঙ্গমের সময় তার একবার বীর্যপাত হয়েছিলো। বাকি সময়টাতে তার ধন টনটন খারা থাকলেও বীর্যপাত হয় নি। একটা অতৃপ্তি আর অভিমান নিয়ে সে জামিল আঙ্কেলকে ছেড়ে দিয়েছে চিরদিনের জন্য। পরদিন রাতে সে বাসায় পৌঁছে ব্যাগ খুলে কিছু বিস্ময়কর জিনিস দেখতে পেলো৷ একটা বাটপ্লাগ আর কেওয়াই জেলির সাথে একটা চিঠি৷ সেইসাথে বেশ কিছু টাকা।

    জামিল আঙ্কেল চিঠিতে লিখেছেন-তুমি নেহাৎ ভালমানুষ। এমন ছেলে আজকালকার জমানায় হয় না। তুমি সমকামি পুরুষপ্রেমি। আমি পুরুষ। তবে পুরুষপ্রেমি নই। আমি এনজয় করি। আমার অর্থের অভাব নেই৷ সব কিছু অর্থ দিয়ে কিনতে কিনতে জীবনে ভালবাসা ভুলে গেছি। তোমার মত অনেককেই আমি আমার আড্ডায় এনেছি। তারা সবাই এক বাক্যে প্রস্তাবে রাজী হয়েছে। তুমি হও নি। এটা বিস্ময়কর। তুমি আমাকে অবাক করে দিয়েছো। তুমি আমাকে সুখও দিয়েছ। কিন্তু আমি বিনিময় ছাড়া পুরুষ সম্ভোগ করি না৷ কিছু গিফ্ট দিলাম সাথে কিছু টাকা। তোমার যদি মনে হয় টাকা নিলে তোমার অপমান হবে তবে টাকাগুলো তুমি যে কাউকে দিয়ে দিও৷ আমার দুয়ার তোমার জন্য সবসময় খোলা থাকবে। তবে শর্ত একটাই। তুমি আমাদের আড্ডায় প্রমোদবালা হবে। ক্ষতি কি সে সবে? তোমার যার দরকার তুমি তো পাবে। নিজেকে ঠকিও না। পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই সবই লেনা দেনা। তবে আমার যদি একটা মেয়ে থাকতো তবে আসি তোমাকে সত্যি জামাই বানিয়ে কাছে রাখতাম। ভাল থেকো। জামিল।

    চিঠিটা পড়ে সোহানের অভিমান বেড়ে গেলো।

    পরদিন সোহান মাকে জানিয়েছিলো মেয়েকে দারুন পছন্দ হয়েছে তার। তবে এখুনি বিয়ে করার কোন প্ল্যান নেই। বাবা রেগে মেগে আগুন হয়েছেন। সোহান ঘরে থেকে বেড়িয়ে গেছে বাবার সাথে তর্ক এড়ানোর জন্য। ভীষন দ্বিচারী মনে হয়েছে সোহানের নিজেকে। ফারজানাকে ভালো লেগেছে৷ তার দেয়া ফোন নম্বরটাও সে যত্নে রেখে দিয়েছে। সারাদিন টই টই করেছে শহরে। ভুলে যেতে চেয়েছে জামিল আঙ্কেলকে।

    বিকেল হতেই সোহানের ভিতর অদ্ভুত একটা যৌনতা গ্রাস করেছে। তখন সে একটা আড্ডায় বেশ করে গাজা টানছিলো। বন্ধুদের সাথে সোহান কখনো নিজের সেক্সুয়ালিটি নিয়ে আলোচনা করেনি। বন্ধুরা জানে সোহান সেক্স নিয়ে তেমন আগ্রহী নয়। ফারজানার একটা ছবি তার কাছে আছে।

    বন্ধু বান্ধবদের ছবিটা দেখাতেই সবাই একবাক্যে বলেছে তুই রাজি না হলে আমাদের দে। ঝাক্কাস জিনিস মেয়েটা। হাতছাড়া করিস না সোহান। সোহান তার সব বন্ধুদের কাছে মেয়েদের বিষয়ে পীরের মত। হঠাৎ সোহানের মনে হল এদের কেউ কি তার প্রেমিক হতে পারে না! সোজানের ধন ঠাটিয়ে উঠলো আড্ডাতে। সবকটা যুবক ছেলে। কিন্তু কারো কাছে সোহান নিজেকে নিবেদন করতে পারছে না।

    আড্ডায় ফারজানাকে নিয়ে রসালো অনেক আলাপ হল। সোহান গাজার নেশায় সব যুবক বন্ধুদের মনোযোগ দিয়ে দেখলো৷ তার মনে হতে লাগল তাদের মধঢে যে কেউ সোহানের প্রেমিক হতে পারতো। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে সে কারো কাছে নিজেকে নিবেদন করতে পারে না। এটা সম্ভব নয়।

    আড্ডা ছেড়ে সে বাসায় আসার জন্য রওয়ানা দিলো। একটা জায়গায় এসে শেয়ারে রিক্সা নেয়ার সুযোগ আছে। দশ টাকার জায়গায় পাঁচটাকাতে আসা যায় বাসার কাছাকাছি। কখনো শেয়ারে সে উঠেনি। আজ কি এক অজানা কারণে সে একটা ইয়াং ছেলের সাথে শেয়ারে উঠে পরল রিক্সায়।

    ছেলেটার চেহারার দিকে তাকিয়ে রিক্সায় উঠেনি সোহান। কিন্তু সীটে বসার পর সে ছেলেটাকে খুটিয়ে দেখে নিলো। এই ছেলেটা তার শয্যাসঙ্গি হতে পারতো-এই ভাবনাটা সোহানকে প্রচন্ড উত্তেজিত করল। ইচ্ছে করেই সোহান ছেলেটার গা ঘেঁষে বসল। কথা জুড়ে দিলো। জানতে পারলো ছেলেটা একটা মেসে থাকে সোহানদের খুব কাছেই। সে পড়াশুনা করে। নাম রহমান। আসলে আব্দুর রহমান। ডিগ্রি পড়ে সিটি কলেজে।

    বাড়িতে ছেলেটার টানাটানির সংসার। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি ছেলেটা হকার্স মার্কেটে সেলস ম্যান হিসাবে কাজ করে। বাবা নেই। সোজান অবাক হল ছেলেটার বিস্তারিত শুনে। সোহান ভাই সোহান ভাই করছিলো ছেলেটা রিক্সায়। একটা মায়া জন্মালো এই দীন হীন ছেলেটার জন্য।

    মানুষ কত অসহায় জানতে পারলো সে ছেলেটার কথা শুনে। মেস ভাড়া বারোশ টাকা দেয় সে। খেতে মাসে এক হাজার টাকা খরচ হয়। নিজের পড়াশুনা যাতায়াত সবকিছু মিলে তার আরো এক হাজার টাকা লাগে। মাসে দোকানে বসলে সাড়ে তিন হাজার টাকা ইনকাম হয়। এছাড়া দুইটা টিউশনিও করে সে। বাড়িতে মাসে দেড় হাজার টাকা না পাঠালে না খেয়ে থাকে তার তিনটা ছোট ছোট ভাইবোন।

    সোহানের সত্যি খুব খারাপ লাগলো ছেলেটার কথা শুনে। কথা শুনতে শুনতে সোজান রহমানের রানের উপর হাত রেখেছিলো নিজের অজান্তে। শুরুতে ছেলেটাকে শয্যাসঙ্গি বানানোর মনোবাসনা জাগলেও ছেলেটার বিস্তারিত জেনে সেসব মন থেকে উবে গেলো। রিক্সা থেকে নেমে রহমানকে রিক্সা ভাড়া দিতে দিলো না সোহান। বরং বলল-তুমি চাইলে তোমাকে আমি হেল্প করতে পারি।

    ছেলেটা খুব বিনয়ি। হাত পিছনে নিয়ে বলল – না না সোহান ভাইয়া। আপনাকে আমি চিনি। আপনি খুব ভালো মানুষ। আমার সাহায্য চাই না। করুনা নিয়ে আমি বাঁচতে চাইনা।

    সোহানের কি যেনো হল। রাত কম হয় নি। পাশাপাশি হাঁটছিলো সোহান রহমানের সাথে। হঠাৎ সোহান দাঁড়িয়ে গেলো রহমানের হাত ধরে।

    দাঁড়াও রহমান! যেনো ফিসফিস করে বলল সোহান রহমানকে। চারদিকে কাউকে দেখা যাচ্ছে না৷ সোহান রহমানের হাত ধরে সামনা সামনি করে দাঁড় করালো।

    রহমান ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলল – এনিথিং রং সোহান ভাইয়া!

    সোহান ফিসফিস করে বলল – তোমাকে কতটুকু বিশ্বাস করা যায় রহমান?

    রহমান তখনো কিছুই বুঝতে পারেনি। সোহানের দিকে চেয়ে থেকে সে বলল – কি বিষয়ে সোহান ভাইয়া! আপনি কি নিয়ে আমার উপর বিশ্বাস রাখতে চাইছেন।

    সোহান ফিসফিস করে বলল – জীবন নিয়ে রহমান। এমন কি হয় না আমি তোমাকে কিছু দেবো বিনিময়ে তুমি আমাকে কিছু দেবে? আর সেটা কেউ কখনো জানতে পারবে না?

    রহমান এবারে ভয় পেয়ে গেল। সে তোতলাতে তোতলাতে বলল – ভাইয়া আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আপনি খুলে বলেন। কি দিবো আমি আপনাকে? আমারতো কিছুই নাই৷ আপনি ভালো চাকরী করেন। আমি এখনো ছাত্র। জীবন নিয়ে আপনি কি চান আমার কাছে?

    সোহান বলল বিশ্বাস করতে চাই তোমাকে রহমান। তুমি দেবে আমাকে বিশ্বাসের মূল্য?

    রহমান চোখ বন্ধ করে বলল – সোহান ভাইয়া আমি যে দোকানে কাজ করি সেই দোকানের মালিক বলে আমি নাকি আল আমিন। আমার কাছে কোন কিছু আমানত রাখলে কখনো তার খেয়ানত হয় না। কিন্তু আমি তো বুঝতেছি না জীবন নিয়ে আমি আপনাকে কি দিবো?

    সোহান চারদিকটা দেখে নিয়ে বলল – আমি পুরুষ ভালবাসি রহমান। তুমি হবে আমার পুরুষ? বিনিময়ে আমি তোমাকে থাকার জায়গা দিবো খেতে দিবো। হবে।

    রহমান বেশীদিন হয় নি গ্রাম থেকে এসেছে। সে তখনো বুঝতে পারেনি সোহান কি চাইছে রহমানের কাছে। সে হা করে সোহানের দিকে তাকিয়ে আছে। সোহান তার হাত দুটো ছেড়ে দিলো। তারপর বলল – বুঝেছি তুমি এখনো খুব সহজ সরল। চলো আমার সাথে। আজ আমার সাথে রাতে থাকবে। আমি তোমাকে বুঝিয়ে দেবো আমি তোমার কাছে কি চাই। তুমি যদি পারো আমাকে দেবে। না দিতে পারলে যা চাইবো তার কথা জীবনেও কাউকে বলবা না, পারবে না?

    হাঁটতে হাঁটতে রহমান বলল – সোহান ভাই আমি আমানতের খেয়ানত করি না। কিন্তু আমিতো রাতে খাই নাই এখনো। মেসে আমার খাওয়া নষ্ট হবে।

    সোহান বলল খাবারের চিন্তা করতে হবে না তোমার। আমার সাথে খাবে। আমার সাথে ঘুমাবে। আমরা রাতভর আড্ডা মারবো।